স্বামীর পরিবারের কোন কোন পুরুষ নারীর জন্য মাহরাম

জেনে নিন, স্বামীর পরিবারের কোন কোন পুরুষ আপনার জন্য মাহরাম এবং কোন কোন পুরুষ মাহরাম নয়। স্বামীর চাচা কি স্ত্রীর জন্য মাহরাম? বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন​ এবং বিশিষ্ট ফকিহ আল্লামা আব্দুল আজিজ বিন বায রহ. কে প্রশ্ন করা হয়- স্বামীর চাচা কি স্ত্রীর জন্য মাহরাম? স্বামীর উপস্থিতিতে কি তার সাথে হাত মেলাতে অনুমতি আছে? তিনি ​উত্তরে বলেন,
عم الزوج ليس محرمًا للزوجة ولا أخوه، وإنما المحرم أبوه وجده وابنه، أما عمه وأخوه فليسا محرمين للزوجة
“স্বামীর চাচা স্ত্রীর জন্য মাহরাম নন এবং তার ভাই (দেবর ভাসু্রও) নন। মাহরাম হলেন, কেবল স্বামীর পিতা (শ্বশুর), দাদা-নানা (দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর) এবং তার পুত্র। কিন্তু তার চাচা (চাচা শ্বশুর) এবং ভাই (দেবর-ভাসুর) স্ত্রীর জন্য মাহরাম নন।’ [binbaz] ​অর্থাৎ স্ত্রীর জন্য স্বামীর পিতা, দাদা-নানা, পুত্র, পুত্রের পুত্র এবং কন্যার পুত্র-এরা সকলেই মাহরাম। কিন্তু স্বামীর চাচা বা ভাই মাহরামের অন্তর্ভুক্ত নন। অনুরূপভাবে স্বামীর মামা, খালু এবং ফুফাও মাহরাম নয়।
🔸সম্মানিত শায়খ অন্যত্র বলেন,
الخال والعم ليسا محرمين، بل ليس لها أن تكشف لعم الزوج، ولا لخال الزوج، ولا لأخي الزوج، وهو أقرب أيضًا، وإنما قوله : وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ[النور:31] هذا يعم الآباء والأجداد، ولا يدخل فيه الأعمام ولا الأخوال،
” (স্বামীর) চাচা এবং মামা মাহরাম নন। বরং স্ত্রীর জন্য স্বামীর চাচার সামনে, স্বামীর মামার সামনে, এমনকি স্বামীর ভাইয়ের সামনেও পর্দা করা আবশ্যক। (স্বামীর ভাই তো আরও নিকটাত্মীয়, তবুও সে মাহরাম নয়।) আর আল্লাহ তা’আলার বাণী:
وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ
“এবং তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তাদের স্বামী অথবা তাদের পিতা ও পিত্রব্যদের ব্যতীত।” [সূরা নূর: ৩১] এটি পিতা এবং দাদা-নানাদের অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু চাচা এবং মামাদের এর অন্তর্ভুক্ত করে না।” [Binbaz]
▪️উল্লেখ্য যে, মাহরাম বলতে বুঝায়, ইসলামে যে ব্যক্তির সাথে স্থায়ীভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ। মাহরাম পুরুষদের সামনে পর্দা নেই। তবে তাদের সামনেও বেপরোয়া চলাফেরা করবে না বরং শালীনতা বজায় রেখে পোশাক পরবে এবং আদব ও সম্মান রক্ষা করে তাদের সাথে কথাবার্তা বলবে এবং চলাফেরা করবে। আর নন মহারামদের সামনে পর্দা রক্ষা করা আবশ্যক। তাদের সাথে নির্জন ঘরে অবস্থান করা, একাকী সফরে যাওয়া, তাদের শরীর স্পর্শ করা, মুসাফাহা করা বা হাত মেলানো, তাদের সাথে হাসি-মজাক করা, বেপর্দা চলাফেরা করা ইত্যাদি হারাম। তবে শরয়ী পর্দা সহকারে সামনে যাওয়া যাবে এবং প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা যাবে। আল্লাহু আলাম। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার। সৌদি আরব।
Share: