প্রশ্ন: কোন নারী কি তার নিজের ছোট ভাই/বোন বা সৎ ভাই/বোনকে দুধ পান করাতে পারবে?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে একজন বোন তার আপন ছোট ভাই বা সৎ ভাইকে অথবা আপন ছোট বোন বা সৎ বোনকে দু বছর বয়সের মধ্যে দুধ পান করাতে পারে। দু বছরের পরে ইসলামে তা অনুমোদিত নয়। ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি দু বছরের মধ্যে সর্ব নিম্ন পাঁচ বার দুধ পান করায় তাহলে উক্ত দুধ পান কারী ভাই বা বোনের সন্তানগণ দুধ দান কারীনী বোনের সন্তানদের জন্য মাহরাম বলে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ তাদের মধ্যে চিরস্থায়ীভাবে বিয়ে বন্ধন হারাম বলে গণ্য হবে। কেননা তারা খালাতো/ফুফাতো ভাই-বোন হলেও দুধ পান জনিত কারণে তারা এখন একে অপরের জন্য আপন ভাই-বোনের মত মাহরাম হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে, তোমাদের দুধ বোনগণকে।” [সূরা নিসা: ২৩]। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنَ النَّسَبِ
“রক্ত সম্পর্কীয় কারণে যা হারাম সাব্যস্ত হয় দুগ্ধপান জনি কারণে তা হারাম সাব্যস্ত হয়।” [সহিহ বুখারি, ৩/১৭০, হাদিস নং ২৬৪৫]
উল্লেখ্য যে, সম্মানিত ফকিহগণ উল্লেখ করেছেন যে, রাযআত বা দুগ্ধ পান এর কারণে বিবাহ হারাম হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কতিপয় শর্ত রয়েছে। সেগুলো হল:
● ক. দু বছর বয়সের মধ্যে শিশুর দুধ পান করা।
● খ. কমপক্ষে পাঁচ বার তৃপ্তি সহকারে দুধ পান করা।
(এক বার দুধপান বলতে একটি সম্পূর্ণ সেশন বোঝায়, যেখানে শিশু স্তন ধরে দুধ পান করে এবং নিজ ইচ্ছায় ছেড়ে দেয়। যদি শিশু শ্বাস নেওয়া, বিশ্রাম বা অন্য কোনো কারণে সাময়িকভাবে থামে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আবার পান শুরু করে, তবে তা একটি দুধপান হিসেবে গণ্য হবে)
● গ. পাঁচ বার দুধ পান করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া।
● ঘ. দুধ শিশুর পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছা।
● ঙ. এবং এ বিষয়ে কমপক্ষে একজন বিশ্বস্ত মহিলা সাক্ষ্য প্রদান করা।
প্রশ্ন: কোনও নারীর জন্য কি তার ভাইকে দুধ পান করানো জায়েজ?
উত্তর:
يجوز للمرأة أن ترضع أخاها الصغير إذا احتاج إلى ذلك، ويكون ابنا لها من الرضاعة إذا أرضعته خمس رضعات أو أكثر حال كونه في الحولين. وبالله التوفيق، وصلى الله على نبينا محمد وآله وصحبه وسلم.
“একজন নারীর জন্য তার ছোট ভাইকে দুধ পান করানো জায়েজ যদি তার এর প্রয়োজন হয়। যদি নারীটি তার ভাইকে দুই বছরের মধ্যে পাঁচবার বা তার বেশি দুধ পান করান তবে সে দুধ পানের মাধ্যমে সে তার সন্তান (বিধানগতভাবে নিজের ঔরসজাত সন্তান তুল্য) বলে গণ্য হবে। আল্লাহ তাওফিক দাতা। আল্লাহ আমাদের নবি মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার, সাহাবিদের ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।”
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি:
চেয়ারম্যান: আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বাজ রাহ.
ডেপুটি চেয়ারম্যান: আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ আলু শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ)।
সদস্য: সালিহ আল ফাওজান (হাফিযাহুল্লাহ)।
[ফতোয়া নং ১৯৩২৯ থেকে]।
অনুবাদ: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ অ্যাসোসিয়েশন, সৌদি আরব।