প্রশ্ন: নারীদের ইসলাম প্রচার এবং হিজরতের ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী?
উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য সাধ্যানুযায়ী দাওয়াতি কাজ করা তথা ইসলাম প্রচারে অবদান রাখা ফরজ। তবে সকলেই
অবশ্যই ইসলামি শরিয়তেরর গণ্ডীর মধ্যে থেকে তা করবে। ইসলামি শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে দাওয়াতি কাজ করা বৈধ নয়।
যাহোক, আধুনিক যুগে পর্দা রক্ষা করে এবং শরিয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে নারীদেরও ইসলাম প্রচারে অংশ গ্রহণের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে আল হামদুলিল্লাহ।
নিম্নে মহিলাদের দাওয়াতি কার্যক্রম করার দশটি পদ্ধতি ও আইডিয়া পেশ করা হল:
১. নিজ স্বামী/ সন্তান-সন্ততিকে ইসলামের সঠিক আদর্শ শিক্ষা দেয়া। সন্তানদেরকে ইসলামের আলোকে গড়ে তোলার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাওয়াতি কাজ আর নেই। একজন নারী তার সন্তানের প্রথম শিক্ষক এবং মায়ের কোল সন্তানের প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
সুতরাং প্রতিটি মা যদি তার সন্তানকে ইসলামের আলোকে গড়ে তোলেন তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে এই শিক্ষা তার জীবনে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে ইনশাআল্লাহ।
২. নিজ আবাস গৃহে পার্শ্ববর্তী মহিলাদেরকে ইসলাম শিখানোর ব্যবস্থা করা। যেমন: সাপ্তাহিক বা মাসিক দরসের ব্যবস্থা। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়িতে আগন্তুক মহিলাদের জন্য পূর্ণ পর্দার বন্দোবস্ত করা জরুরি।
৩. স্বামী বা মাহরাম সহকারে দূরে কোথাও দাওয়াতি কাজের জন্য গমন করা। কিন্তু স্বামী বা মাহরাম ছাড়া দূর দূরান্তে দাওয়াতি কাজ করতে যাওয়া বৈধ নয়; অন্য মহিলাদের সাথে হলেও। যেমনটি বর্তমানে অনেক স্থানে দেখা যায়।
৪. মহিলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত হলে ছাত্রীদের মাঝে দাওয়াতি কার্যক্রম করা।
৫. ঘরে বসে ইসলাম বিষয়ে লেখা ও তা বই/লিফলেট আকারে প্রকাশ করা এবং বিভিন্ন ম্যাগাজিন বা পত্রিকায় ছাপানোর জন্য পাঠানো।
৬. ঘরে বসে ওয়েবসাইট/ব্লগ পরিচালনা করা ও তাতে ইসলাম বিষয়ে লেখালেখি করা।
৭. ফেসবুক, টুইটার সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দেয়া।
৮. নিজে বই-পুস্তক লেখার যোগ্যতা না রাখলে অর্থ দিয়ে কোন ভালো মানের আলেমের লেখা বই ছাপিয়ে সেগুলো বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা।
৯. মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, ছাত্রী হোস্টেল, হসপিটাল বা নিজস্ব কর্মস্থলে ছাত্রী/মহিলা সহকর্মীদের মাঝে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
১০. মোবাইল, মেমরি কার্ড বা ফ্লাশের মাধ্যমে সহীহ আকিদা নির্ভর আলিমদের বিভিন্ন লেকচার অন্যদের সাথে শেয়ার করা অথবা ভালো মানের বক্তৃতাগুলো ইউটিউবে আপলোড করে সেগুলো ছড়িয়ে দেয়া। তবে সর্বাবস্থায় মনে রাখতে হবে যে, দাওয়াতি কাজে এত বেশি মগ্ন থাকা উচিৎ নয় যে, স্বামী-সন্তানদের উপর অপরিহার্য হক আদায়ে গাফলতি সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও দাওয়াতি কার্যক্রম করার বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি রয়েছে ইচ্ছে করলে সেগুলো পরিস্থিতি ও সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে ব্যবহার করা যায়।
আল্লাহ সকলকে তাওফিক দান করুন।
হিজরতের পারিভাষিক অর্থ হল, যে দেশ বা এলাকায় ইসলাম পালন করা সম্ভব হয় না সে স্থান পরিত্যাগ করে এমন দেশ বা এলাকায় গমন করা যেখানে ইসলাম পালন করা সম্ভব হয়। এই হিজরত কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তাই প্রয়োজনে হিজরত করতে হবে। এটি নারী-পুরুষ সকলের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ আলাম।
❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖❖
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।