অসুস্থতা এবং প্রচণ্ড শারীরিক ক্লান্তির কারণে ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে ইশার সালাত পড়া না হলে তা কি পরের দিন কাজা করা যাবে

প্রশ্ন: অসুস্থতা এবং প্রচণ্ড শারীরিক ক্লান্তির কারণে ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে ইশার সালাত পড়া না হলে তা কি পরের দিন কি কাজা করা যাবে?

উত্তর: লা-বা’স ত্বাহুর ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দান করুন। আমিন।

এ ক্ষেত্রে করণীয় হল, যখনই ঘুম থেকে জাগ্রত হবেন তখনই কাল বিলম্ব না করে পাক-পবিত্র হয়ে যথারীতি ছুটে যাওয়া সালাত কাজা করে নিবেন। এটাই তার জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। অর্থাৎ অনিচ্ছাবশত: ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে সালাত ছুটে যাওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলা গুনাহ লিখবেন না। এটা দয়াময় আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ।

◆ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا

“যে ব্যক্তি সালাত আদায় করতে ভুলে যায়, বা সালাত আদায় না করেই ঘুমিয়ে পড়ে তার কাফফারা হল, যখনই স্মরণ হবে তখনই তা আদায় করে নেওয়া” [সহীহ মুসলিম]

◆ অন্য হাদিসে আনাস রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

مَنْ نَسِىَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ

“যে ব্যক্তি কোন নামাজ পড়তে ভুলে যায়, সে যেন তা স্মরণ হওয়া মাত্র পড়ে নেয়। এ ছাড়া তার জন্য আর অন্য কোন কাফফারা নেই।” [বুখারী ৫৯৭, মুসলিম ১৫৯৮]

◆ হাদিসে আরও এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন রা. সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোন এক সফরে ছিলেন। সে সময় লোকেরা ফজরের সালাতের ওয়াক্তে ঘুমিয়ে ছিল। অতঃপর সূর্যের তাপে তাদের ঘুম ভাঙ্গে। তারা কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর সূর্য উপরে উঠে গেলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিলে মুয়াজ্জিন আযান দেন। অতঃপর তিনি প্রথমে ফজরের পূর্বের দুই রাকআত সুন্নত আদায় করেন এবং একামত দেওয়ার পর ফজরের ফরজ সালাত আদায় করলেন।”
[বুখারী, অধ্যায়: মানাকিব, অনুচ্ছেদ: ইসলামের নবুওয়তের নিদর্শনা বলী, হা/ ৩৫৭১), মুসলিম, অধ্যায়: মসজিদ সমূহ, অনুচ্ছেদ: ছুটে যাওয়া সালাত কাজা করা…]

অত:এব আপনি যদি ফজরের সময় জাগ্রত হন, তাহলে ফজরের সালাতের পূর্বে ইশার সালাত আদায় করে তারপর ফজর সালাত আদায় করবেন। ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও বিলম্ব করা যাবে না। আপনি যদি অলসতা বা অবহেলা বশত: সে সময় না পড়ে তা দিনের বেলায় পড়েন তাহলে ইচ্ছাকৃত বিলম্বের কারণে আপনাকে গুনাহগার হতে হবে।

➤ অবশ্য যদি সূর্য উঠার এতটুকু পূর্বে জাগ্রত হোন যে, সে সময় কেবল ফজর সালাত আদায় করা সম্ভব হবে তাহলে, সে ক্ষেত্রে আগে ফজর সালাত আদায় করবেন। কারণ ওয়াক্তের সালাত ওয়াক্তে পড়াটাই জরুরি। তারপর ছুটে যাওয়া ইশার সালাত কাজা করবেন- যদিও তখন সূর্য উদিত হওয়া শুরু করে। কারণ অধিক বিশুদ্ধ মতে, সূর্য উদিত হওয়ার সময় সাধারণ নফল সালাত পড়া নিষিদ্ধ; কাজা বা বিশেষ কারণ বশত: সালাত নয়। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন। الله أعلم

▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।

Share: