সরকারী খাস জমিতে অনুমতি ছাড়া মসজিদ নির্মাণ এবং তাতে সালাত আদায়ের বিধান

প্রশ্ন: ১) আমরা গ্রামবাসীরা সবাই মিলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ক্রমে এবং তার পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা নিয়ে সরকারী পতিত জায়গায় একটা পাঞ্জেগানা মসজিদ নির্মাণ করেছি। এখন প্রশ্ন হল, এই স্থানে নামাজ আদায় করা কি বৈধ হবে?
উল্লেখ্য যে, ভবিষ্যতে এই স্থানে জামে মসজিদ (জুমা মসজিদ) নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।
২) খাস/অন্যের জমিতে নির্মিত মসজিদ কি ভাঙ্গা যায়?

উত্তর:
জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে খাস বা সরকারী পতিত জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হলে তাতে সালাত আদায়ে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে মালিকের অনুমতি কিংবা সরকারের মালিকানাধীন খাস জমিতে প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া মসজিদ নির্মাণ করা বৈধ নয়।

এমন স্থানে মসজিদ নির্মাণ করা হলে জমির মালিক চাইলে তার জমিতে তার অনুমতি বা সম্মতি ব্যতিরেকে নির্মিত মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার অধিকার রাখে।
মিসর ফতোয়া বোর্ড এর ওয়েব সাইটে বলা হয়েছে,
لو اعتدى شخص على أرض واتخذها مسجدًا ثم استحقت هذه الأرض للغير؛ نقضت المسجدية، وأضاف فقهاء المذهب الحنفي أيضًا: أن الصلاة مكروهة في الأرض المغصوبة، وكذلك في المسجد المقام على أرض مغصوبة. “البحر الرائق” لابن نجيم الحنفي جزء 5 صفحة 203 في باب الوقف، و”حاشية رد المحتار على شرح الدر المختار” جزء 1 صفحة 395 في كتاب الصلاة.
“যদি কোন ব্যক্তি জোরপূর্বক কোন জায়গা দখল করে তাতে মসজিদ নির্মাণ করে আর জমিটি মূলত: অন্যের অধিকারভুক্ত হয় তাহলে মসজিদের মর্যাদা রহিত হয়ে যাবে। হানাফি ফকিহগণ এও বলেছেন যে, দখলকৃত জমিতে সালাত আদায় করা মাকরূহ (অ পছন্দনীয়)। অনুরূপভাবে জবরদখল কৃত স্থানে নির্মিত মসজিদেও। [আল বাহরুর রায়েক-ইবনে নুজাইম আল হানাফি ৫/২০৩, অনুচ্ছেদ: ওয়াকফ এবং হাশিয়াতু রাদ্দিল মুহতার আলা শারহি দুররির মুখতার ১/৩৯৫। অধ্যায়: সালাত।]

– অন্যের মালিকানাধীন জমিতে মালিকের অনুমতি ছাড়া নির্মিত মসজিদে সালাত শুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ কিন্তু গুনাহ সহকারে। আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন রহঃ বলেন,
والقول في المسألة أنها تصح في المكان ‏المغصوب مع الإثم، لأنهم يقولون: إن الصلاة لم ينه عنها في المكان المغصوب، بل نهي عن ‏الغصب، والغصب أمر خارج‎ … وهذا هو القول الصحيح
“এ মাসআলায় সঠিক কথা হল যে, জবর দখলকৃত স্থানে সালাত আদায় সহিহ হবে কিন্তু গুনাহ সহকারে। কারণ ফিকাহ বিদগণ বলেন, অন্যের জমি জবরদখল করতে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু সেখানে সালাত আদায়ে নিষেধ করা হয় নি। আর জবরদখল করার বিষয়টি সালাতের বাইরের বিষয়। এটাই সঠিক কথা।” (শারহুল মুমতি)
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬◈◍◈▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।