যার নাম টান সমিতি: ইসলামি বিধান

প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় কিছু মহিলা প্রতি সপ্তাহে একটি খেলা খেলে। খেলাটি হল, ধরুন দশ জন মহিলা ১০০ টাকা করে জমা দিবে। তাহলে সপ্তাহে জমা হবে, ১০০০ টাকা। এই টাকাটা প্রতি সপ্তাহে লটারির মাধ্যমে একজন মহিলা পাবে। অর্থাৎ যার নাম উঠবে সে পাবে। এভাবে প্রতি সপ্তাহে একজন করে মহিলা কমবে। এই লটারির দায়িত্বটা একজনের কাছে থাকবে। সে প্রত্যেকের নাম আলাদা আলাদা কাগজে মুড়িয়ে লটারি করবে। যে এ দায়িত্ব পালন করবে তাকে কিছু (৩০/৪০) টাকা দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হল, এই খেলাটি কি জায়েজ আছে? হাদিসে তো লটারি নিষেধ আছে। এটা কি সে পর্যায়ে যাবে?
উত্তর: এতে কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ। এটা নিষিদ্ধ লটারির অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ এখানে তারা প্রত্যেকেই সমান টাকা জমা দিবে এবং প্রত্যেকেই তার জমা কৃত পূর্ণ টাকা ফেরত পাবে। কেউ কম-বেশি পাবে না বা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু সপ্তাহান্তে জমা কৃত টাকা গুলো একসাথে নেওয়ার ক্ষেত্রে কে আগে নিবে-এটা নির্ধারণের জন্য লটারি করা হয়। এটা দোষের কিছু নয়। এই ধরণের সমিতি অনেক জায়গায় ‘টান সমিতি’ নামে পরিচিত।
মূলত: ইসলামে ওই লটারি হারাম যেটা জুয়া। যেখানে অংশ গ্রহণকারীরা সবাই টাকা জমা দিবে কিন্তু কয়েকজন ব্যক্তি লাভবান হবে আর বাকিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে যে ব্যক্তি লটারি ও টাকা ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়টি পরিচালনা করে তাকে যে টাকাটা দেওয়া হয় তাতে কোনও আপত্তি নেই। এটা তার পারিশ্রমিক।

■ সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি আল্লামা আব্দুল্লাহ বিন বায রাহ. কে প্রশ্ন করা হয়:
প্রশ্ন: আমরা দশ জনের একদল মানুষ প্রতি মাসে পঁচিশ দিনার প্রদানের মাধ্যমে একটি সমবায় সমিতিতে অংশগ্রহণ করি। এ পরিমাণ দিনার প্রতিমাসে সবাই জমা দিবে কিন্তু পালা অনুযায়ী একজন করে (জমা কৃত সম্পূর্ণ দিনার) গ্রহণ করবে। এভাবে (পালাক্রমে) প্রতি মাসে সবাই তা গ্রহণ করে। এর হুকুম কী? এটা কি জায়েজ? আল্লাহ আপনাকে প্রতিদান দান করুন। আমিন।
উত্তর:
الجواب: ما فيه بأس، إذا تعاونوا لا بأس بهذا المبلغ أو بأكثر أو بأقل، إذا تعاونوا عن سماح نفوسهم فلا بأس بهذا. نعم، هذا من باب التعاون على الخير. نعم.
“এতে দোষের কিছু নেই। তারা সবাই পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এ কাজ করলে কোনও দোষ নেই। চাই (তাদের অর্থের পরিমাণ) কম হোক বা বেশি হোক। তারা যদি উদার মনে এভাবে পারস্পারিক সহযোগিতা করে তাতে কোনও সমস্যা নেই। হ্যাঁ, এটি কল্যাণকর কাজে পারস্পারিক সহযোগিতার অন্তর্ভুক্ত। জি।

➧ সতর্কতা: এ জাতীয় সমিতির অন্যতম একটা সমস্যা হল, সদস্যদের মধ্যে যে ইতোমধ্যে টাকা পেয়ে গেছে সে অন্যান্য মাসে টাকা জমা না দিয়ে আত্মগোপন করতে পারে অথবা টাকা জমার ক্ষেত্রে গড়িমসি করতে পারে। তাই এতে পরিচিত ও বিশ্বস্ত ছাড়া অন্য কাউকে যুক্ত করা উচিত নয়। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।