ঢোল, তবলা ও নানা রকম বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জিকির করা শরিয়ত সম্মত কি

প্রশ্ন: অনেক জায়গায় দেখি, ঢোল, তবলা ও নানা রকম বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জিকির করা হয়। এটা শরিয়ত সম্মত কি না?

উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে বাদ্যযন্ত্র ও মিউজিক এর ব্যবহার সম্পূর্ণ হারাম এবং নিষিদ্ধ।
আর এই হারাম জিনিসকে যখন মহান আল্লাহর ইবাদত ও পূণ্য অর্জনের মাধ্যম বানানো হবে তখন তার ভয়াবহতা হবে আরও প্রকট। কেননা তা আল্লাহর জিকিরের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতকে খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করার শামিল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্ক করে দিয়েছেন যে, কিয়ামতের পূর্বে এমন একটি সময় আসবে যখন মানুষ গান-বাজনাকে হালাল মনে করবে। তিনি বলেন,
لَيَكُوْنَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّوْنَ الْحِرَ وَالْحَرِيْرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ
“আমার উম্মতের মধ্য থেকে এমন কিছু লোক আসবে যারা জিনা-ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।” (বুখারী হা/৫৫৯০-আবু মালেক আল আশআরী রা. হতে বর্ণিত )।

সুতরাং বর্তমানে যারা বাউল, জারি, সারি, মুর্শিদি, কাওয়ালি, পালাগান ইত্যাদি গানে ঢোল, তবলা, একতারা, দোতারা, গিটার, বাঁশি হারমোনিয়াম সহ নানা অত্যাধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে তথাকথিত আধ্যাত্মিক গান গায় বা বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে জিকির, মিলাদুন্ননি, ওরস মাহফিল ইত্যাদি উদযাপন করাকে পুণ্যের কাজ বা ইবাদত মনে করে করে তাদের উপর উক্ত হাদিসের প্রয়োগ পরিপূর্ণভাবে প্রযোজ্য হয়। কেননা এরা তথাকথিত সাধন, ভজন, আধ্যাত্মিকতা, পীরের সন্তুষ্টি, গুরুর সান্নিধ্য, ফানাফিল্লাহ, ইশকে ইলাহিতে আত্ম বিলীন ইত্যাদির নামে এ সব বাদ্যযন্ত্রকে শুধু হালাল করে নি বরং এগুলোকে
তাদের কল্পিত পুণ্যলাভের মাধ্যমে পরিণত করেছে। الله المستعان

যাহোক, পরিশেষ আল্লাহ তাআলার নিকট দুআ করি, তিনি যেন এসব প্রবৃত্তি পূজারী অজ্ঞদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দেন এবং তওবা করে শয়তানের পথ থেকে ফিরে আসার তওফিক দান করেন। আমীন।

————————–
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।