ঝিনুকের তৈরি মালা ব্যবহার করা বা ঝিনুকের তৈরি শোভাবর্ধক বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম দিয়ে ঘর সাজানো

প্রশ্নঃ ঝিনুকের তৈরি মালা ব্যবহার করা বা ঝিনুকের তৈরি শোভাবর্ধক বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম দিয়ে ঘর সাজানো কি জায়েজ?

উত্তর:
সাগরে জোয়ারের সময় শামুক-ঝিনুকগুলো সমুদ্রের উপকূলে ভেসে আসে। ভোরে এগুলো সংগ্রহ করা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে কাঁটা শামুক, কড়ই, কালো প্রবাল, করতাল, আংটি শঙ্খ, ছাদক শঙ্খ, জিঙ্গর শামুক, ক্যাঙ্গারু, রাজমুকুট, বিচ্ছু, বাঘমাড়ি, মালপুরি, নীল শামুক ও লাল শামুক। সারা বছরই এগুলো দিয়ে নানা ধরণের উপকারী ও দৃষ্টিনন্দন জিনিস তৈরি করেন করেন শিল্পীরা।

এগুলো সব মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পক্ষ থেকে দান। সুতরাং আমরা এগুলোকে নারীদের অলঙ্কার, বাড়ির ব্যবহার্য সামগ্রী বা ঘরের শোভা বর্ধনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারি। ইসলামের দৃষ্টিতে ‌দৃষ্টিতে এতে কোনো আপত্তি নেই ইনশাআল্লাহ। তাহলে বলেন,
أَنَّ ٱللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي ٱلۡأَرۡضِ
“ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে আল্লাহ্‌ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন।”
-Surah Al-Hajj, Ayah 65

সুতরাং সাগরবক্ষ থেকে সংগৃহীত আল্লাহর দেয়া এসকল নেয়ামত দ্বারা প্রস্তুতকৃত মালা, দুল, চুড়ি, ব্রেসলেট, ক্লিপ, ল্যাম্পশেড, ঝাড়বাতি ইত্যাদি তৈরি,‌ ক্রয়, বিক্রয়, ঘরে সংরক্ষণ ও ব্যবহারে কোন আপত্তি নাই।
অনুরূপভাবে এসব দ্বারা তৈরিকৃত দৃষ্টিনন্দন ওয়ালমেট বা ওয়াল হ্যাংগিং দ্বারা ঘর সাজাতেও কোন অসুবিধা নেই। তবে শর্ত হলো, তা যেন মানুষ, পশুপাখি, জীবজন্তু বা কোন বিচরণশীল প্রাণীর ছবি, প্রতিকৃতি, অমুসলিমদের ধর্মীয় প্রতীক, অশ্লীলতার ইঙ্গিতবাহী কোন ডিজাইন ইত্যাদি না হয়।
ইসলামে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ, পশু, পাখি ইত্যাদি বিচরণশীল প্রাণীর ছবি অংকন করা, প্রতিকৃতি নির্মাণ করা ও‌ ঘরে‌ সংরক্ষণ করা নিষেধ। এগুলো ঘরে থাকলে তাতে রহমত ও বরকতের ফেরেস্তারা প্রবেশ করে না। সবচেয়ে বড় কথা হল, হাদিসে এ কারণে আখিরাতে কঠিনতর শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে।
আল্লাহ ক্ষমা করুন। আমীন।
আল্লাহু‌ আলাম।
—————-
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।