ইসলামে পানাহারের সময় সালাম দেয়া বা সালামের উত্তর দেয়া কি নিষেধ?

প্রশ্ন: ইসলামে পানাহারের সময় সালাম দেয়া বা সালামের উত্তর দেয়া কি নিষেধ?
——————
উত্তর:
ইসলামে পানাহারের সময় সালাম আদান-প্রদানের ব্যাপারে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং হাদিসে সালাম দেয়ার ব্যাপারে যত বক্তব্য এসেছে সেগুলো খাদ্য গ্রহণের সময়কেও শামিল করে।
পানাহারের সময় সালাম দেয়া বা উত্তর দেয়া যাবে না মর্মে আমাদের সমাজে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে এবং কোন কোন ফিকহের কিতাবে লেখাও হয়েছে তার কোন দলিল বা ভিত্তি নাই। আর দলিল বিহীন ভাবে কোন কিছুকে হারাম বা মাকরুহ বলার সুযোগ নেই।

তাছাড়া একাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য গ্রহণের সময় দুনিয়াবি কথা বলেছেন। সুতরাং পানাহার রত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া বা এই অবস্থায় সালামের উত্তর প্রদান বৈধ হওয়র বিষয়টি আরও অধিকতর যুক্তিযোগ্য।

সৌদি আরবের সাবেক গ্রান্ড মুফতি এবং বিশিষ্ট ফকিহ আল্লামা শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায রহ. কে প্রশ্ন করা হয়, কেউ যদি এমন লোকদের পাশ দিয়ে গমন করে যারা খাদ্য গ্রহণ করছে তাদেরকে কি সালাম দিবে কারণ আমরা শুনেছি, এটা জায়েজ নাই?

তিনি উত্তরে বলেন,
نعم يسلم عليهم، والذي قال: لا يسلم غلط، يسلم عليهم، إذا جاء لقوم وهم يأكلون أو يقرءون أو يتحدثون يسلم عليهم، يقول: السلام عليكم، أو السلام عليكم ورحمة الله، أو ورحمة الله وبركاته، ولا يكره ذلك بل يشرع، وهم يردون عليه
“হ্যাঁ, তাদেরকে সালাম দিবে। যে বলেছে সালাম দিবেন না সে ভুল বলেছে। যখন কেউ এমন লোকদের নিকট আগমন করবে যারা খাওয়া-দাওয়া, পড়াশোনা
ও কথাবার্তায় লিপ্ত আছে তখন তাদেরকে সালাম দেবে। বলবে, আসালামু আলাইকুম অথবা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ অথবা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু।
এটা মাকরুহ নয় বরং শরিয়ত সম্মত। আর যাদেরকে সালাম দেওয়া হবে তারাও উত্তর দিবে।
তবে মুখের মধ্যে খাবারের লোকমা থাকলে তৎক্ষণাৎ উত্তর দেওয়া আবশ্যক নয়। বরং তা গিলে খাওয়ার পর উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে।
ইমাম নববী বলেন,
إذا كان يأكلُ واللقمة في فمه، فإن سلَّم عليه في هذه الأحوال لم يستحقّ جواباً
“খাদ্য গ্রহণের সময় মুখে লোকমা থাকা অবস্থায় সালাম দিলে জবাব দেয়ার হক রাখে না।” (কিতাবুল আযকার)। ইমাম শাওকানি এ কথাকে সমর্থন করেছেন।
তবে মুখের খাদ্যদ্রব্য গিলার পর সালামের জবাব দিতে হবে। মুখে লোকমা না থাকলে সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব।
আল্লাহু আলাম
————-
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।