মাহরাম ছাড়া নারীর সফর করা হারাম হওয়া ও মাহরামের শর্তাবলি

ইনশাআল্লাহ্‌, আমার মা উমরা আদায় করার জন্য যেতে চান। তাঁর স্বামী ও ভায়েরা তাঁর সাথে যেতে পারছেন না। তাঁর চাচাতো ভাই; যিনি একদিকে তাঁর দেবর, অন্যদিকে ভগ্নীপতি; সস্ত্রীক হজ্জে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায়, আমার মায়ের জন্য তাদের দুজনের সাথে উমরা করতে যাওয়া জায়েয হবে কি?

আলহামদুলিল্লাহ।

ইসলাম নারীকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সফরে নারীর সাথে মাহরাম থাকা ওয়াজিব করে দিয়েছে; যাতে করে মাহরাম পুরুষ নারীকে দুশ্চরিত্র ও হীন-উদ্দেশ্য চরিতার্থকারী লোকদের থেকে নিরাপদ রাখতে পারে এবং সফরে নারীর দুর্বলতায় তাকে সহযোগিতা করতে পারে। যেহেতু সফর হচ্ছে- এক টুকরো কষ্ট। তাই মাহরাম ছাড়া কোন নারীর সফর করা জায়েয নয়। দলিল হচ্ছে ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “অবশ্যই অবশ্যই কোন নারী মাহরাম ছাড়া সফর করবে না। তখন এক লোক দাঁড়িয়ে বলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আমি তো অমুক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছি। আমার স্ত্রী হজ্জ করার জন্য বেরিয়েছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি গিয়ে তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ কর।”[সহিহ বুখারী (ফাতহুল বারী ৩০০৬)]

মাহরাম সাথে থাকা ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণ এভাবে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই লোককে জিহাদ বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ সে লোক কোন এক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছিল এবং তার স্ত্রীর সফরটা ছিল হজ্জের মত নেককাজ ও সওয়াবের কাজের সফর; কোন বিনোদন ভ্রমণ বা সন্দেহপূর্ণ ভ্রমণ নয়। তা সত্ত্বেও তিনি তাকে তার স্ত্রীর সাথে হজ্জ করতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাহরামের ক্ষেত্রে আলেমগণ পাঁচটি শর্ত উল্লেখ করে থাকেন, সেগুলো হচ্ছে- পুরুষ হওয়া, মুসলিম হওয়া, বালেগ হওয়া, আকলবান হওয়া এবং এ নারীর জন্য পুরুষ লোকটি চিরস্থায়ীভাবে হারাম হওয়া; যেমন- পিতা, ভাই, চাচা, মামা, শ্বশুর, মায়ের স্বামী, দুধ-ভাই প্রমুখ (অস্থায়ীভাবে হারাম এমন পুরুষ নয়, যেমন- ভগ্নীপতি, ফুফা, খালু প্রমুখ)।

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলব: আপনার মায়ের জন্যে তাঁর দেবর, কিংবা চাচাতো ভাই কিংবা মামাতো ভাই মাহরাম নয় বিধায় তাদের সাথে সফর করা জায়েয হবে না।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জ।।
Share: