প্রশ্ন: জাহান্নামে নারীর সংখ্যা বেশি। নারীদের এমন কি আমল করা উচিৎ যাতে তারা সহজে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে?
▬▬▬🌐💠🌐▬▬▬
উত্তর:
ইবনু আব্বাস রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
أُرِيتُ النَّارَ فَإِذَا أَكْثَرُ أَهْلِهَا النِّسَاءُ يَكْفُرْنَ قِيلَ أَيَكْفُرْنَ بِاللَّهِ قَالَ يَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ وَيَكْفُرْنَ الْإِحْسَانَ لَوْ أَحْسَنْتَ إِلَى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ
“আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়েছে ; আর সেখানে অধিকাংশ অধিবাসিরাই নারী। আর এটা এই কারনে যে তারা অস্বীকারকারিনী। বলা হল, তারা কি আল্লাহকে অস্বীকার করে? রাসূল সা বললেন, তারা তাদের স্বামীদের অকৃতজ্ঞ হয়/ স্বামীদের অবদান, ইহসান অস্বীকার করে। তাদের অবস্থাটা এমন যে, তুমি সারা জীবন তাদের প্রতি ইহসান করে যাচ্ছো আর তোমার কোন একটি ত্রুটির কারণে তোমাকে বলবেঃ তোমার মাঝে আমি কখনোই ভালো কিছু পাইনি।” বুখারি-১০৫২।
✪ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের জান্নাত লাভের সোজা পথ বাতলে দিতে গিয়ে সেখানেও বলেছেন,
إذا صلت المرأة خمسها وصامت شهرها وحفظت فرجها وأطاعت زوجها قيل لها ادخلي الجنة من أي أبواب الجنة شئت. ورواه ابن حبان في صحيحه عن أبي هريرة رضي الله عنه، والحديث صححه الألباني في الجامع الصغير.
– “যখন কোন একজন নারী পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করবে
– রামাদ্বানের সিয়াম পালন করবে
– নিজের সতীত্বের হিফাজত করবে
– এবং তার স্বামীর আনুগত্য করবে, তাকে বলা হবে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে চাও তুমি প্রবেশ কর।”(ইবনু মজাহ, ইমাম আল-বানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন)
✪ শুধু তাই নয় রাসূল (সা) নারীদের সতর্ক করেছেন এইভাবে,
معاذ -رضي الله تعالى عنه- أن النبي -صلى الله عليه وسلم- قال عن
لا تؤذي امرأة زوجها في الدنيا إلا قالت زوجته من الحور العين: لا تؤذيه -قاتلك الله-، فإنما هو عندك دخيل يوشك أن يفارقك إلينا – أخرجه الترمذي و صححه الألباني –
অর্থাৎ,মুয়ায ইবনু জাবাল রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা)বলেছেন, কোন নারী তার স্বামীকে যখনই এই দুনিয়ায় কষ্ট দেয় তখন জান্নাতের আনত নয়না হুরদের মধ্য থেকে তার স্ত্রী বলেঃ তাকে কষ্ট দিওনা! আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন! সে তো তোমার কাছে শুধুই আগন্তুক, অচিরেই সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের মাঝে চলে আসবে। ( তিরমিজি, নাসিরুদ্দীন আলাবানী হাদিসটি সহিহ বলেছেন)
জান্নাতে প্রবেশ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য যত ধরণে আমল রয়েছে সেগুলো বেশি করে করতে হবে। নিম্নে এমন কিছু আমল তুলে ধরা হল:
যেমন,
-পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়।
-ফরজ এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নফল সালাত আদায়, যেমন তাহাজ্জুদ, সালাতুল ইশরাক সালাতুয যোহা (চাশত), তাহিয়াতুল ওযু ইত্যাদি।
– রমজান মাসের ফরয রোযা রোজা।
– নফল রোজা। যেমন: প্রতি সোম ও বৃহষ্পতিবার, প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ (আইয়ামে বীয) বা মাসের যে কোনো সময় তিনটি রোযা, আরাফা, আশুরা ইত্যাদি।
-যাকাত ফরজ হলে যাকাত দেওয়ার পাশাপাশি নফল দান-সদকা।
-হজ ফরজ হলে হজ্ব আদায়
-অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়া করা এবং কুরআনের তরজমা ও তাফসীর পড়া।
-তওবা ইস্তেগফা ও দুআ, যিকির আযাকার পাঠ করা।
-সব ধরণের পাপাচার থেকে বেঁচে থাকা। বিশেষ করে গীবত, চোগলখোরি, পরনিন্দা মানুষকে গালাগালি, অভিশাপ দেয়া ইত্যাদি।
– শেরকী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা। বিশেষ করে তাবিজ-তুমার রিং, বালা, জিন ও গণকের আশ্রয় নেওয়া ইত্যাদি।
-স্বামীর আনুগত্য এবং তার কৃতজ্ঞতা আদায়।
-স্বামীর অনুপস্থিতে নিজের লজ্জা স্থান হেফাজত করা।
– আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা।
– গরিব-অসহায় মানুষকে খাদ্য দান করা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, এগুলো পুরুষ-মহিলা সবার জন্য প্রযোজ্য।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন।
▬▬▬🌐💠🌐▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব