একথায় কোন সন্দেহ নেই যে, বর্তমানে আমাদের সমাজে চলছে জমজমাট ধর্ম ব্যবসা। ধর্মকে পুজি করে চলছে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল, অন্যায় ভাবে মানুষের অর্থ লোপাট এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি। কিন্তু একদল ধর্মের জ্ঞান হীন, পরজীবী ও চরম ইসলাম বিদ্বেষী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে ‘ধর্ম ব্যবসা’কে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত না করে অদ্ভুতভাবে প্রকৃত ইসলাম প্রচারক এবং ধর্ম ব্যবসায়ীদের মাঝে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। তাই ধর্ম ব্যবসার সঠিক পরিচয় এবং আমাদের সমাজে ধর্মব্যবসার বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করা হলো। আল্লাহ তৌফিক দান করুন। আমীন।
🔶 ধর্ম ব্যবসা কাকে বলে?
ধর্ম নয় অথচ ধর্মের নাম দিয়ে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে অর্থ উপার্জন ও স্বার্থ সিদ্ধি করাকেই ‘ধর্ম ব্যবসা’ বলা হয়। ধর্ম ব্যবসায়িরা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অজ্ঞতা ও আবেগকে কাজে লাগিয়ে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয় ও স্বার্থ হাসিল করে। এরা টাকা-পয়সা, পদ মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা লাভের বিনিময়ে হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল, ন্যায়কে অন্যায় আর অন্যায়কে ন্যায় বলে চালিয়ে দেয়। কখনো সত্যকে গোপন বা বিকৃত করে। এভাবে তারা ধর্মের ছদ্দাবরণে ধর্মীয় লেবাসে তাদের ধর্ম ব্যবসা চালিয়ে যায়।
এমন ধর্ম ব্যবসা সবচেয়ে বেশি ছিলো ইহুদি-খৃষ্টান ধর্ম জাযকদের মধ্যে। তারা অর্থের বিনিময়ে আল্লাহর কিতাব তওরাতকে বিকৃত করতো এবং তার অপব্যাখ্যা করে টুপাইস কমিয়ে নিতো। মহান আল্লাহ ইহুদি-খৃষ্টান ধর্ম জাযকদের এই অপকর্মের মুখোশ উম্মোচন করেছেন কুরআনের বিভিন্ন স্থানে। নিম্নে কয়েকটি উদাহরণ পেশ করা হল:
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذْ أَخَذَ اللَّـهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ فَنَبَذُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًاۖفَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ
“আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাব (ইহুদি-খৃষ্টান) দের কাছ থেকে অঙ্গিকার গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের পেছনে ফেলে রাখল আর তার কেনা-বেচা করল সামান্য মূল্যের বিনিময়ে। সুতরাং কত নিকৃষ্ট তাদের এ ব্যবসা।” [সূরা আলে ইমরান: ১৮৭]
তিনি আরও বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۙ أُولَٰئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
“নিশ্চয় যারা সেসব বিষয় গোপন করে, যা আল্লাহ কিতাবে নাজিল করেছেন এবং সেজন্য অল্প মূল্য গ্রহণ করে তারা আগুন ছাড়া নিজের পেটে আর কিছুই ঢুকায় না। আর আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাদের সাথে না কথা বলবেন, না তাদেরকে পবিত্র করবেন। বস্তুতঃ তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।” [বাকারা: ১৭৪]
তিনি আরও বলেন,
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنْ عِندِ اللَّهِ لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا يَكْسِبُونَ
”অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।” [সূরা বাকারা: ৭৯]
দুর্ভাগ্য বশত: মুসলিমদের মাঝেও বড় বড় দাড়ি, পাগড়ি, টুপি, জুব্বা-আলখেল্লা ও ভালমানুষীর আড়ালেও চলে এমন মারাত্মক ধর্ম ব্যবসা ও ধোকাবাজি। আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমিন।
🔶 আমাদের সমাজে ধর্ম ব্যবসা ও ধর্ম নিয়ে ধোঁকাবাজির কতিপয় উদাহরণ:
▪️রাজনৈতিক ধর্ম ব্যবসা:
– এক শ্রেণীর মানুষ নির্বাচনের আগে মাথায় পট্টি বাধে, হাতে তাসবিহ নিয়ে জায়নামাজে বসে বা দু হাত তুলে মুনাজাতের ভঙ্গিতে পাক্কা মুসল্লি সেজে দেয়ালে দেয়ালে ছবি পোস্টারিং করে, টুপি-পাঞ্জাবী পরে ধার্মিক সাজে, ভোটের আগে মসজিদ-মাহফিলে টাকা-পয়সা দান করে দীনের একনিষ্ঠ খাদেমের রূপ ধারণ করে কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরেই তাদের মুখোশ খুলে যায়। এই মুখশধারী কপট লোকগুলোই একটু সুযোগ পেলেই দীন ইসলাম ও দীনদার মানুষদেরকে নানাভাবে অপমানিত ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এবং ইসলামি আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এরাই হল, রাজনৈতিক ধর্ম ব্যবসায়ী ও ধোঁকাবাজ।
– আরেক শ্রেণির মানুষ কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” ব্যবহার করে কিন্তু ক্ষমতায় এসে ‘বিসমিল্লাহ’র সম্মান রক্ষা করে না, ইসলামি আইন বাস্তবয়ন করে না বরং তা কেবল জনগণকে ধোঁকা দিয়ে ভোট হাসিলের উদ্দেশ্যে কাজে লাগায়। এরাও ধর্ম ব্যবসায়ী ও প্রতারক। কারণ এরা তাদের নিজস্ব স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে-যেভাবে একসময় পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করতো নিজেদের গদি ধরে রাখার স্বার্থে।
তথাকথিত চেতনা ব্যবসাও অনুরূপ একটি বিষয়। চেতনার মুখোশ পরেই এই স্বার্থান্বেষীরা রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি, অর্থ উপার্জন ও ক্ষমতার মসনদটা ধরে রাখে।
▪️ইসলাম নিয়ে ধর্ম ব্যবসার কতিপয় উদাহরণ:
ক. আমাদের সমাজে তথাকথিত মাজার ও খানকাগুলো মূলত অজ্ঞ লোকদের নিকট থেকে সুকৌশলে অর্থ উপার্জনের একেকটি ফাঁদ ও ধর্ম ব্যবসার কেন্দ্র। প্রতিটি পীরের খানকাই কমবেশি এই অপকর্মে জড়িত।
এই ধর্ম ব্যবসায়ীরা নানা ছলে-বলে, কলা-কৌশলে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ লোকদের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত বিশাল অংকের অর্থ-কড়ি কামিয়ে নিচ্ছে। অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে কবর বা মাজারে টাকা-পয়সা, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি কোনও কিছু মানত করা, মৃত ওলি-আওলিয়াদের উদ্দেশ্যে দান করা বা পশু জবেহ করা সম্পূর্ণ হারাম।
খ. মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্য চল্লিশা পালন, শবিনা খতম এবং মিলাদ ও দুআ করে পয়সা উপার্জন করা ধর্ম ব্যবসার শামিল। কারণ মৃত বরণের ৪০তম দিনে চল্লিশার নামে ধুমধাম করে ভোজসভার আয়োজন করা, মিলাদ ও সম্মিলিত দুআ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হারাম ও বিদআতি কাজ। ইসলামে এসবের কোনও অনুমতি নাই।
গ. মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনের নিকট নামাজের কাফফারা হিসেবে টাকা-পয়সা ও ধান-চাল আদায় করাও একটি ধর্ম ব্যবসা। কারণ ইসলামের মৃত ব্যক্তির নামাজের কাফফারা বলে কিছু নেই।
ঘ. বিভিন্ন উপলক্ষে তথাকথিত মানুষের বাড়িতে বাড়িতে মিলাদ করে অর্থ উপার্জন করা ধর্ম ব্যবসা ও হারাম ধান্ধাবাজির অন্তর্ভূক্ত। কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে মিলাদ করা বিদআত যা ইসলাম সমর্থন করে না।
ঙ. মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার ফান্ড আত্মসাৎ করা হল, এক নিকৃষ্ট ধর্ম ব্যবসার নাম। এই চোর প্রতারক গোষ্ঠী ধর্মীয় কাজের নামে মানুষের দান-সদকা আত্মসাত করে।
চ. যে সব বক্তারা জনপ্রিয়তা অর্জন বা ওয়াজের মার্কেট ধরার স্বার্থে সত্যের সাথে মিথ্যার ও হকের সাথে বাতিলের সংমিশ্রণ ঘটায়, সত্য গোপন করে এবং ‘যেখানে যেমন সেখানে তেমন’ নীতি ধারণ করে ওয়াজ করে তারাও ধর্ম ব্যবসায়ী ও প্রতারক।
ওয়াজের নামে উদ্ভট স্বপ্ন ও কিচ্ছা-কাহিনী, বানোয়াট ফজিলতের ফুলঝুরি ও জাল-জয়ীফ হাদিস বর্ণনা, কলা-কৌশলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে উস্কানি মূলক বক্তব্য, নির্দিষ্ট কোনো দল, মত বা তরিকার দিকে আহ্বানও জঘন্য ধর্ম ব্যবসা এবং ধর্মীয় অপরাধ।
এসব বন্ধ করার জন্য যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।
কিন্তু কুরআন ও সহিহ হাদিসের অকুণ্ঠ প্রচারক ও দুনিয়া বিমুখ নির্মোহী আলেমদের ‘ধর্মব্যবসায়ী’ ‘মৌলবাদী’ বা ‘বিশৃংখলা সৃষ্টি কারী’ আখ্যা দেওয়া চরম ইসলাম বিদ্বেষ ও বেয়াদবি ছাড়া কিছু নয়। মধু এবং বিষকে একাকার করে ফেলার চেয়ে বড় অবিচার, বিদ্বেষ ও নির্বুদ্ধিতা আর কিছু হতে পারে না।
যারা এভাবে সত্যিকারের আলেমদেরকে অপমানিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে সমাজ থেকে সঠিক ইসলাম প্রচারের পথ রুদ্ধ করতে চায় তাওহিদি মুসলিম জনতা তাদেরকে অবশ্যই রুখে দেবে ইনশাআল্লাহ।
🔶 চুক্তি ভিত্তিক ওয়াজ করা, নির্দিষ্ট বেতনে ইমামতি করা, কুরআন শিক্ষা দেওয়া, মাদরাসায় শিক্ষকতা করা, স্কুলের ধর্ম বিষয়ে শিক্ষকতা করা ইত্যাদি কি ধর্ম ব্যবসা?
না, এগুলো ধর্ম ব্যবসা নয়। বরং তা জায়েজ।
এসব বিষয়ের জন্য পারিশ্রমিক বা অর্থ দাবী করা বৈধ কি না সে বিষয়ে এ মূলনীতিটি জানা দরকার:
ক. আপনি যদি কাউকে এ সব কাজের জন্য নিয়োগ দেন বা দায়িত্ব দেন তাহলে তার জন্য এ সব কাজের পারিশ্রমিক দাবী করা বৈধ (অবশ্য তারা অন্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত করবে)। কারণ এর পেছনে তাদের মেধা, সময় ও শ্রম ব্যয় হয়। সে আপনার এখানে আসতে বাধ্য ছিল না। কিন্তু আপনি তাকে এনেছেন।
যেমন: সরকার, কোনও প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা কোনও ব্যক্তি যদি কাউকে বেতন ভিত্তিক মসজিদের ইমামতি, কুরআনের শিক্ষকতা, দাওয়াতি কাজ ইত্যাদি উদ্দেশ্যে নিয়োগ দান করে তাহলে তাহলে বেতন দেওয়া ও নেওয়া উভয়টি জায়েজ।
খ. আর কেউ যদি স্বেচ্ছায় এসে ওয়াজ করে বা মানুষকে ইসলামের দিকে ডাকে তারপর বলে, আপনাদেরকে ওয়াজ-নসিহত শুনালাম এখন এর বিনিময়ে আমাকে টাকা দিন। তাহলে তা হারাম হবে। কারণ এখানে কেউ তাকে নিয়োগ দেয় নি। বরং আল্লাহ তাকে তার বিনিময় দান করবেন।
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
{ وَمَآ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ }
‘আর আমি (নূহ আলাইহিস সালাম) তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো প্রতিদান চাই না; আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রবের কাছেই আছে।” [Surah Ash-Shu`arâ’: 109]
সুতরাং নিজের ইচ্ছায় দাওয়াতি কাজ হিসেবে ওয়াজ করা বা বক্তৃতা দেওয়া আর অন্য কোন পক্ষ থেকে ওয়াজ বা বক্তৃতা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা বা দায়িত্ব দেওয়া- এ দুটি বিষয়ে পার্থক্য আছে।
প্রথম ক্ষেত্রে বক্তৃতা দেওয়া বা ওয়াজ-নসিহত করার ক্ষেত্রে সে সম্পূর্ণ স্বাধীন। এটা তার ইচ্ছাধীন বিষয়।
সুতরাং সে এ কাজের জন্য কারও কাছে পারিশ্রমিক বা বিনিময় দাবী করতে পারবে না। কিন্তু ২য় ক্ষেত্রে সে চুক্তিবদ্ধ হিসেবে আপনার এখানে আসতে ও বক্তৃতা দিতে বাধ্য। অত:এব এ ক্ষেত্রে তার পারিশ্রমিক দাবী করাও বৈধ। (তবে সীমাতিরিক্ত অবশ্যই পরিত্যাজ্য)
আরেকটি কথা হল, কোন বক্তা যদি অতিরিক্ত টাকা দাবী করেও তাহলে তাকে পরিত্যাগ করার সুযোগ আছে। এমন বক্তাকে দাওয়াত দেওয়া আবশ্যক নয়। কিন্তু যদি তার সাথে আর্থিক চুক্তি করা হয় তাহলে চুক্তি পূরণ করা আবশ্যক। চুক্তি করার পর আবার ‘বেশি টাকা নেয়’ বলে তার বদনাম করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আসলে ওয়াজ কমিটি অর্থ বেশি দিয়ে হলেও নামকরা ও সুরেলা বক্তা আনে অনেক সময় তাদের নিজেদের স্বার্থে। কেননা সাধারণত: নামকরা ও সুকণ্ঠের অধিকারী বক্তা আনা হলে মাহফিলে প্রচুর লোক সমাগম হয়। আর তারা এটাকে তারা নানা ধান্ধাবাজির কাজে লাগায়। এই সুবাদে বড় অংকের অর্থ কালেকশন করে বা জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ কিছু প্রচার-প্রসার করার সুযোগ নেয়।
সুতরাং যেসব ওয়াজ কমিটি মাহফিল জমিয়ে নিজেদের পার্থিব স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারকারী বা শিরক-বিদাত, জাল-জয়িফ হাদিস, উদ্ভট গল্প ও কিচ্ছা-কাহিনী প্রচারকারী বক্তাদেরকে
বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে তারাই মূলত ধর্মব্যবসায়ী।
পরিশেষে দুআ করি, মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে ইসলাম প্রচার-প্রসার করার পাশাপাশি ইসলামের নামে ধর্ম ব্যবসায়ীদেরকে চিহ্নিত করার তওফিক দান করুন এবং সত্যিকার আলেমদেরকে সব ধরনের শয়তানি ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল