কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে তার ইদ্দত পালনের মেয়াদ ও বিধিবিধান

প্রশ্ন: পঞ্চাশোর্ধ বা মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে এমন মহিলার স্বামী মারা গেলে তার ও কি ইদ্দত পালন করতে হবে ? ইদ্দত পালনের বিধি-নিষেধগুলো জানতে চাই।

উত্তর:
কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে তার জন্য ইদ্দত পালন করা আবশ্যক। চাই উক্ত মহিলা যুবতী হোক বা বৃদ্ধা হোক এতে কোন পাথর্ক্য নেই।

এর মেয়াদ হল:
25aa চার মাস দশ দিন যদি সে গর্ভবতী না হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرً
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে,তখন স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা।“ [সূরা বাকারা: [২৩৪]

25aa আর গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ
“গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। ” [সূরা তালাক: ৪]

ইদ্দত পালনের সময় করণীয়:
1f539🔹 ১. ইদ্দত পালনকারী মহিলার জন্য করণীয় হল, সে সকল প্রকার সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা থেকে দূরে থাকবে।
1f539🔹 ২. আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। তবে তৈল, সাবান, রোগ-ব্যাধীর জন্য ঔষধ ইত্যাদি ব্যবহারে অসুবিধা নাই যদিও তাতে সুগন্ধি থাকে। কারণ এগুলো মূলত: সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। অনুরূপভাবে চুল আঁচড়াতেও কোন অসুবিধা নাই।
1f539🔹 ৩. সৌন্দর্য বর্ধক পোশাক পরবে না। বরং স্বামী মারা যাওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে যে পোশাক পরিধান করত তাই পরিধান করবে। তবে শুধু সাদা বা শুধু কালো পোষাক পরিধান করতে হবে এমন ধারণা ঠিক নয়।
1f539🔹 ৪. সুরমা, কাজল ইত্যাদি ব্যবহার করবে না।
1f539🔹 ৫. মেহেদী, খেযাব বা আলাদা রং ব্যবহার করবে না।
1f539🔹 ৬. কোন ধরণের অলংকার যেমন, দুল, চুরি, নাকফুল, আংটি, নুপুর ইত্যাদি ব্যবহার করবে না।
1f539🔹 ৭. শোক পালনের দিন শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়িতে থাকবে। এমনকি সে সময় যদি সে তার পিতার বাড়িতেও থাকে তবে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলে নিজ বাড়িতে ফিরে আসবে। তবে একান্ত প্রয়োজন যেমন, বিপদের আশংকা, বাড়ি পরিবর্তন, চিকিৎসা বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ইত্যাদি জরুরি কাজে বাড়ির বাইরে যেতে পারবে।

মোটকথা, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী এমন সব আচরণ করবে না বা এমন সৌন্দর্য অলম্বন করবে না যা তাকে বিয়ের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে। এটা এ কারণে যে, এর মাধ্যমে স্বামীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়, স্বামীর পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয় এবং তাদের বেদনা বিধুর অনুভূতির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ হয়। সর্বপরি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশের আনুগত্য করা হয়।
●●●●●●●●●●●
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, KSA
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার।।

Share: