প্রশ্ন: নিম্নোক্ত হাদিসটির ব্যাখ্যা জানতে চাই:
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে একটি কবুতরের পিছু ধাওয়া করতে দেখে বললেন, “এক শয়তান আরেক শয়তানের পিছে লেগেছে।” (আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ প্রমুখ)
উত্তর:
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে একটি কবুতরের পেছনে ছুটতে দেখে বললেন,
شَيْطَانٌ يَتْبَعُ شَيْطَانَةً
“এক শয়তান আরেক শয়তানের পিছে লেগেছে।” [আবুদাঊদ, অনুচ্ছেদ: কবুতর নিয়ে খেলা করা সম্পর্কে হা/৪৯৪০; ইবনে মাজাহ হা/৩৭৬৪; মিশকাত হা/৪৫০৬, সনদ সহিহ।]
ব্যাখ্যা:
◈ এ হাদিসের ব্যাখ্যায় আবু দাউদের ব্যাখ্যাগ্রন্থ আউনুল মাবুদ এর গ্রন্থকার আল্লামা শামসুল হক আজিমাবাদি (জন্ম: ১২৭৩, মৃত্যু: ১৩২৯ হিজরি) বলেন,
إنما سماه شيطاناً لمباعدته عن الحق، واشتغاله بما لا يعنيه، وسماها شيطانة لأنها أورثته الغفلة عن ذكر الله
“তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষটিকে শয়তান বলেছেন, হক (সত্য) থেকে দূরে অবস্থান এবং নিষ্প্রয়োজনীয় বিষয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আর কবুতরটিকে শয়তান বলেছেন সে আল্লাহর জিকিরের ব্যাপারে লোকটির মধ্যে গাফলতি (অবহেলা) সৃষ্টি করার কারণে।”
◈ আল্লামা মুহাম্মদ রবি বিন হাদি আল মাদখালী বলেন,
الاشتغال بالحمام وتتبع الصيد يلهي الإنسان ، يفوت عليه الطاعات والعبادات والصلوات من هنا قال النبي عليه الصلاة والسلام شيطان يتبع شيطانه
“কবুতর নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকা এবং শিকারের পেছনে ছোটা মানুষকে মজিয়ে রাখে। এতে আল্লাহর আনুগত্য, ইবাদত-বন্দেগি ও সালাত ছুটে যায়। এখান থেকেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,এক শয়তান আরেক শয়তানের পিছে লেগেছে।”
কবুতর পালনের বিধান:
নওবী বলেন,
اتخاذ الحمام للفرخ والبيض، أو الأنس، أو حمل الكتب، جائز بلا كراهة، وأما اللعب بها للتطير، فالصحيح أنه مكروه، فإن انضم إليه قمار ونحوه، ردت الشهادة، كذا في المرقاة. اهـ.
“বাচ্চা ও ডিমের জন্য বা মনের প্রশান্তির জন্য বা চিঠি-লেনদেনের জন্য কবুতর পোষা জায়েজ; মাকরূহ বা অ পছন্দনীয় নয়। তবে কবুতর উড়িয়ে খেলাধুলা করার জন্য তা পোষা মাকরূহ বা অ পছন্দনীয়। এর সাথে যদি জুয়া বা এ জাতীয় কিছু যুক্ত হয় তাহলে তার সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যাত হবে। এমনটি আছে মিরকাত গ্রন্থে।”
আল্লাহু আলাম
—————
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।