১০০ কবিরা গুনাহ সম্পর্কে বিস্তারিত

মূল: ড. সালেহ বিন আব্দুল্লাহ সাইয়্যাহ।
অনুবাদে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইড্ন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

এতে আছে:

◍ ক. কবিরা গুনাহের পরিচয়
◍ খ. কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদা
◍ গ. কুফরি পর্যায়ের কবিরা গুনাহ সমূহ
◍ ঘ. সব চেয়ে বড় গুনাহ
◍ ঙ. সাতটি ধ্বংসাত্মক গুনাহ
◍ চ. যে সমস্ত পাপরাশী জান্নাতের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে
◍ ছ. এ ছাড়া অন্যান্য পাপরাশী

❑ কবিরা গুনাহ (বড় পাপ) কী?

الكبائر هي كل ذنب أطلق عليه في الكتاب أو السنة أو الإجماع أنه: كبيرة ، أو عظيم ، أو أخبر فيه بشدة العقاب ، أو علق عليه الحد ، أو لعن فاعله ، أو حرم من الجنة

“কবিরা গুনাহ হল সেই সব পাপ, যেগুলোকে কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমায় (সর্বসম্মতভাবে) বড় বা মহাপাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে অথবা যে পাপের ব্যাপারে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে অথবা যে অপরাধের ব্যাপারে ফৌজদারি দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে অথবা যে পাপ করলে পাপীকে অভিসম্পাত করা হয়েছে অথবা জান্নাত থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।”

❑ কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদা:

◆ ১. মহান আল্লাহ বলেন,

إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُم مُّدْخَلًا كَرِيمًا

“যে সব বিষয়ে সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার তবে আমি তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করার।” [সূরা নিসা: ৩১]

তিনি আরও বলেন,

الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ

“যারা বড় বড় গুনাহ ও অশ্লীল কার্যাবলী থেকে বেঁচে থাকে ছোটখাটো অপরাধ করলেও নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার ক্ষমা সুদূর বিস্তৃত।” [সূরা নাজম: ৩২]

◆ ২. রসুলুল্লাহ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفِّرَاتٌ مَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتَنَبَ الْكَبَائِرَ

“কবিরা গুনাহ (বড় পাপ) থেকে বিরত থাকলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা, এক রমজান থেকে আরেক রমজানের মধ্যে সংঘটিত সমস্ত পাপ রাশী মোচন হয়ে যায়।” [মুসলিম]

◈ কুফরি পর্যায়ের বড় পাপ সমূহ ◈ সবচেয়ে বড় পাপ ◈ ধ্বংসাত্মক পাপ সমূহ

❂ ১. আল্লাহর সাথে শিরক (অংশী স্থাপন) করা:

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

أَلا أُنَبِّئُكُمْ بأَكْبَرِ الكَبائِرِ قُلْنا: بَلَى يا رَسولَ اللَّهِ، قالَ: الإشْراكُ باللَّهِ

“সব চেয়ে বড় পাপ কোনটি তা কি তোমাদেরকে জানাবো না? তা হল, আল্লাহর সাথে শিরক (অংশী স্থাপন) করা।” [বুখারি- মুসলিম]

❂ ২. নামাজ পরিত্যাগ করা:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ليسَ بينَ الكفرِ والإيمانِ إلَّا تركُ الصَّلاة
“মুসলিম এবং কাফের-মুশরিকের মাঝে নামাজ পরিত্যাগ ব্যতিরেকে অন্য কোন পার্থক্য নেই।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৩-৫. মানুষ হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া:

রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম বলেন, সব চেয়ে বড় পাপ কোন টি তা কি তোমাদেরকে বলব না? তা হল:
الإشْرَاكُ باللَّهِ، وعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ، وقَتْلُ النَّفْسِ، وشَهَادَةُ الزُّورِ
“আল্লাহর সাথে শিরক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, মানুষ হত্যা করা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৬. পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করা:

রসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) বলেন,
إنَّ مِن أكبَرِ الكَبائِرِ أنْ يَلعَنَ الرجُلُ والِدَيه قالوا يا رسولَ اللهِ وكيفَ يَلعَنُ الرجُلُ أبَوَيه ؟ قال: يَسُبُّ الرجُلُ الرجُلَ فيَسُبُّ أباه ويَسُبُّ الرجُلُ أُمَّه فيَسُبُّ أُمَّه
“অন্যতম বড় পাপ হল, পিতা মাতাকে অভিসম্পাত করা। জিজ্ঞেস করা হল, মানুষ আবার কিভাবে পিতা মাতাকে অভিসম্পাত করে? তিনি বললেন, “একজন মানুষ যখন অন্যের পিতা মাতাকে গালি দেয় তখন সেও প্রতিউত্তরে তার পিতা-মাতাকে গালি দেয়।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৭-১১. সাতটি ধ্বংসাত্মক অপরাধ:

রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

اجْتَنِبُوا السَّبْعَ المُوبِقَاتِ قالوا: يا رَسُولَ اللَّهِ، وَما هُنَّ؟ قالَ: الشِّرْكُ باللَّهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بالحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ اليَتِيمِ، وَالتَّوَلِّي يَومَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ المُحْصَنَاتِ المُؤْمِنَاتِ الغَافِلَاتِ

“তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক অপরাধ থেকে দূরে থাক। (১) আল্লাহর সাথে শিরক, (২) জাদু-টোনা, (৩) মানুষ হত্যা যা আল্লাহ নিষেধ করেছে ইসলামের হক ছাড়া (অর্থাৎ ইসলামি আইনগত হত্যার বিধান ভিন্ন) (৪) সুদ খাওয়া (৫) এতিমের সম্পদ ভক্ষণ (৬) যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়ন এবং (৭) সতী-সাধ্বী মুমিন নারীর প্রতি (জিনার) অপবাদ।” [বুখারি ও মুসলিম]

❑ যে সব গুনাহ জান্নাতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে:

❂ ১২. ঈমান না আনা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلا مُؤْمِنٌ
“ইমানদার ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [বুখারি ও মুসলিম]

তিনি আরও বলেছেন,
لا تَدْخُلُوا نَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا
“তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না।” [সহিহ মুসলিম, হা/৫৪]

❂ ১৩. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ
“যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [সহিহ মুসলিম, হা/৪৬]

❂ ১৪. অহংকার করা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ
“যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [মুসলিম, হা/৯১]

❂ ১৫. চোগলখোরি ও পরনিন্দা করা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ
“চুগলখোর বা পর নিন্দা কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [সহিহ মুসলিম, হা/১০৫]
تَجِدُ مِنْ شَرِّ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عِنْدَ اللَّهِ ذَا الْوَجْهَيْنِ الَّذِي يَأْتِي هَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ وَهَؤُلَاءِ بِوَجْهٍ
“কিয়ামতের দিন সবচেয়ে খারাপ লোকদের দলভুক্ত হিসেবে ঐ ব্যক্তিকে পাবে যে, যে ছিল দু মুখো- যে এক জনের কাছে এক চেহারা এবং আরেক জনের কাছে আরেক চেহারা নিয়ে হাজির হত।” [সহিহ মুসলিম, হা/২৫২৬]

❂ ১৬. আত্মহত্যা করা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

مَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ ، فَهْوَ فِى نَارِ جَهَنَّمَ ، يَتَرَدَّى فِيهِ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا ، وَمَنْ تَحَسَّى سَمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ ، فَسَمُّهُ فِى يَدِهِ ، يَتَحَسَّاهُ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا ، وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ ، فَحَدِيدَتُهُ فِى يَدِهِ ، يَجَأُ بِهَا فِى بَطْنِهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا

“যে ব্যক্তি পাহাড়ের ওপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে এবং সেখানে সর্বদা উপর থেকে নিচে নিক্ষিপ্ত হতেই থাকবে অনন্তকাল। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামের আগুনে বিষ হাতে নিয়ে সদা-সর্বদা তা ঢকঢক করে পান করতেই থাকবে ধরে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে সে জাহান্নামের আগুনে ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে নিজের পেট ওফাড়-ওফাড় করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে।” [সহিহ বুখারি, হা/৫৪৪২ ও সহিহ মুসলিম, হা/১০৯]

❂ ১৭. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা:

রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ
“আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [সহিহ মুসলিম, হা/২৫৫৬]

❂ ১৮. হারাম খাওয়া:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ لَحْمٌ نَبَتَ مِنْ سُحْتٍ

“হারাম অর্থের মাধ্যমে (যে শরীরে) মাংস বৃদ্ধি পেয়েছে তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (অর্থাৎ যে ব্যক্তি হারাম অর্থ ও অবৈধ উপার্জন দ্বারা দেহ গঠন করেছে জাহান্নামের আগুনই তার প্রাপ্য।)” [আহমদ, ইবনে হিব্বান। তাখরীজ। সহিহ-মিশকাতুল মাসাবিহ, আলবানি, হা/২৭০৩]

❂ ১৯-২৩. উপকার করে খোটা দানকারী, মাদকাসক্ত (নেশাগ্রস্থ), জাদুর বৈধতায় বিশ্বাসকারী, গণক ও তকদির (ভাগ্যের লিখন) অস্বীকারকারী:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ خَمْسٌ ، مُدْمِنُ خَمْرٍ ، وَلا مُؤْمِنٌ بِسِحْرٍ ، وَلا قَاطِعُ رَحِمٍ ، وَلا مَنَّانٌ ، وَلا كَاهِنٌ
“পাঁচ শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না: মাদকাসক্ত, জাদুর বৈধতায় বিশ্বাসী, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, উপকার করে খোটা দানকারী এবং গণক।” [মুসনাদে আহমদ, হাসান-আলবানি]

অন্য বর্ণনায় আছে,
لا يدخل الجنة : المنان ولا مدمن خمر ولا مؤمن بسحر و لا مكذب بقدر ولا كاهن
“তকদির (ভাগ্যের লিখন) অস্বীকারকারী।” [মুসনাদে আহমদ]

❂ ২৪. ঋণ পরিশোধ না করা:

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট কোন ঋণগ্রস্ত মৃতের লাশ (জানাজার জন্য) নিয়ে আসা হলে জিজ্ঞেস করতেন, “সে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করেছে কি না?”
যদি বলা হত করেছে, তবে জানাজা পড়তেন। অন্যথায় (সাহাবিদেরকে) বলতেন,
صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ
“তোমরা তোমাদের সাথীর জানাজা পড়ে নাও।” (কিন্তু তিনি নিজে তাতে অংশ গ্রহণ করতেন না)। [সহিহ মুসলিম, হা/১৬১৯]

অন্য হাদিসে রয়েছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
يُغْفَرُ لِلشَّهِيدِ كُلُّ ذَنْبٍ إِلَّا الدَّيْنَ
“শহিদের ঋণ ছাড়া সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” [সহিহ মুসলিম, হা/১৮৮৬]

❂ ২৫-২৬. পুরুষ বেশধারী নারী ও দাইয়ুস (অসতী স্ত্রীর স্বামী):

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ثَلاثٌ لا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ : الْعَاقُّ لِوَالِدَيْهِ ، وَالدَّيُّوثُ ، وَرَجُلَةُ النِّسَاءِ
“তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তারা হল, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, দাইয়ুস (অসতী স্ত্রীর স্বামী)এবং পুরুষ বেশধারী নারী।” [সহিহুল জামে-আলবানি, হা/৩৬৩]

◆ দাইয়ুস কাকে বলে?

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
الدَّيُّوثُ الَّذِي يُقِرُّ فِي أَهْلِهِ الْخَبَثَ
“ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয়, যে তার পরিবারের কুকর্ম (জিনা-ব্যভিচার, অশ্লীলতা)কে স্বীকৃতি দেয়।” [মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ]

❂ ২৭-২৯. বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক, অহংকারী দরিদ্র:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

ثَلاثَةٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ : شَيْخٌ زَانٍ ، وَمَلِكٌ كَذَّابٌ ، وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ

“আল্লাহ কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে পীড়া দায়ক শাস্তি। তারা হল, বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক এবং অহংকারী দরিদ্র। [মুসলিম, হা/১০৭]

❂ ৩০. কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক এবং যে ব্যক্তি মানুষের কাছে এমন বিষয় নিয়ে গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার নিকট নেই:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ الْجَوَّاظُ ، وَلَا الْجَعْظَرِيُّ
“কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [আবু দাউদ, হা/৪৮০১, সহিহ- আলবানি]

❂ ৩১. মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী অমুসলিমকে হত্যা করা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ ، وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا
“যে ব্যক্তি কোন মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী কোন অমুসলিমকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।” [সহিহ বুখারি হা/৩১৬৬]

❂ ৩২. বিশ্বাসঘাতক শাসক:

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْتَرْعِيهِ اللَّهُ رَعِيَّةً ، يَمُوتُ يَوْمَ يَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لِرَعِيَّتِهِ إِلا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ
“যাকে আল্লাহ তায়ালা জনসাধারণের শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, কিন্তু সে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বিশ্বাসঘাতক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।” [সহিহ মুসলিম, হা/১৪২]

❂ ৩৩-৩৪. মানুষকে প্রহার করা ও মহিলাদের পর্দাহীনতা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ، لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا ، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا
“দু শ্রেণির মানুষ জাহান্নামে যাবে যাদের আমি এখনো দেখি নি। (অর্থাৎ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে তাদের আত্মপ্রকাশ হয় নি)
ক. এমন কিছু লোক যাদের হাতে থাকবে গরুর লেজের মত লাঠি। এরা তা দিয়ে জনগণকে প্রহার করবে।

খ. এবং ঐ সকল উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী যারা (নিজেদের চলাফেরা ও বেশ-ভূষায়) মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং নিজেরাও অন্য মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথায় উটের মত উঁচু এবং একপাশে ঝুঁকে থাকা চূড়ার মতো কেশ রাশি শোভা পাবে। এসমস্ত নারী জান্নাতে তো যাবেই না বরং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এত এত দূর থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।” [সহিহ মুসলিম, হা/২১২৮]

❑ অন্যান্য ধ্বংসাত্মক কবিরা গুনাহ:

❂ ৩৫. পেশাব থেকে পবিত্র না থাকা:

مَرَّ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ علَى قَبْرَيْنِ فَقالَ: إنَّهُما لَيُعَذَّبَانِ وما يُعَذَّبَانِ مِن كَبِيرٍ ثُمَّ قالَ: بَلَى أمَّا أحَدُهُما فَكانَ يَسْعَى بالنَّمِيمَةِ، وأَمَّا أحَدُهُما فَكانَ لا يَسْتَتِرُ مِن بَوْلِهِ.
“রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা দুটি কবরের নিকট দিয়ে অতিক্রম কালে বললেন, এ দুই করব বাসীর শাস্তি হচ্ছে। কিন্তু বড় ধরণের কোন পাপের কারণে এই শাস্তি হচ্ছে না। অতঃপর বললেন, হ্যাঁ এদের একজন পেশাব থেকে বাঁচত না আর অন্যজন লোকসমাজে চুগলখোরি করে বেড়াত।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৩৬. মিথ্যা কসম খাওয়া:

الكَبائِرُ: الإشْراكُ باللَّهِ، واليَمِينُ الغَمُوسُ
“কবিরা গুনাহ হলো, আল্লাহর সাথে শিরক (অংশী স্থাপন) করা ও মিথ্যা কসম খাওয়া।” [বুখারি]

❂ ৩৭. মিথ্যা কথা বলা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
آيَةُ المُنافِقِ ثَلاثٌ: إذا حَدَّثَ كَذَبَ
“মুনাফিকের আলামত তিনটি। কথা বললে মিথ্যা বলে।”

অন্য হাদিসে এসেছে, জাহান্নামে যাবে পাঁচ শ্রেণির লোক, (তার মধ্যে একজন হল) মিথ্যাবাদী। [সহিহ মুসলিম]

❂ ৩৮. জিনা-ব্যভিচার করা:

মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
“তোমরা জেনার ধারে কাছেও যেও না। কারণ, এ এক অশ্লীল কর্ম যার পরিণাম খুব মন্দ।” [ইসরা: ৩২]

❂ ৩৯. সমকামিতা:

মহান আল্লাহ লুত (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্প্রদায়ের বিকৃত রুচি সম্পন্ন লোকদের লক্ষ্য করে বলেন,
أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ الْعَالَمِينَ
“তোমরা (সমকামিতার মত এ ধরনের) নির্লজ্জ কর্মে লিপ্ত হচ্ছে?! ইতোপূর্বে সমগ্র বিশ্বে তোমাদের মত এ কাজ আর কেউ করেনি।” [আরাফ: ৮০]

❂ ৪০. সুদ খাওয়া:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ رَسولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وسلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقالَ: هُمْ سَوَاءٌ
নবি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুদ গ্রহীতা, দাতা, লেখক এবং সাক্ষীকে অভিশাপ করে বলেন, এরা সবাই সমান (গুনাহগার)।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৪১. জাকাত আদায় না করা:

রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ما من رجلٍ لا يؤدي زكاةَ مالِه إلا جُعل يومَ القيامةِ صفائحُ من نارٍ يُكوى بها جبينُه وجبهتُه وظهرُه في يومٍ كان مقدارُه خمسين ألفَ سنةً
“কোন ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত আদায় না করলে আল্লাহ উক্ত সম্পদকে আগুণের তক্তা বানিয়ে তার কপাল ও পৃষ্ঠদেশে ছেক দিবেন। আর এই শাস্তি প্রদান করা হবে এমন এক দিন যা (দুনিয়ার) পঞ্চাশ হাজার দিনের সমান লম্বা।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৪২. মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনাকারী:

আল্লাহর নবি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن تَحَلَّمَ بحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أنْ يَعْقِدَ بيْنَ شَعِيرَتَيْنِ، ولَنْ يَفْعَلَ
“যে ব্যক্তি বাস্তবে দেখেনি এরূপ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে তাকে দু টি চুলে গিরা বাধতে বলা হবে কিন্তু তা সে পারবে না।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৪৩. নিজেদের কথা অন্য কাউকে শোনাতে আগ্রহী নয় এরূপ লোকদের কথোপকথন যে ব্যক্তি গোপনে কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা করে:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من استمع إلى حديثِ قومٍ وهم له كارِهونَ صُبَّ في أذنهِ الآنُكُ يومَ القيامةِ
“যে ব্যক্তি এমন লোকদের কথা কান লাগিয়ে শুনে যারা নিজেদের কথা তাকে শোনাতে চায় না অথবা তারা এর থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে- কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সে ব্যক্তির কানে সীসা ঢেলে দিবেন।” [মুসলিম]

❂ ৪৪. ছবি প্রস্ততকারক:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إنَّ أشدَّ النَّاسِ عذابًا عندَ اللَّهِ المصَوِّرونَ
“ছবি প্রস্তুতকারীদেরকে কেয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি প্রদান করা হবে।” [মুসলিম]

❂ ৪৫-৪৬. যে হিলা এবং যার জন্যে হিলা করা হয়:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللهُ الْمُحِلَّ والْمُحَلَّلَ لَهُ
“যে হিলা করে এবং যার জন্য করা হয় আল্লাহ তায়ালা উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন।” [আবু দাউদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ-সহিহ]

হিলা অর্থ: তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে হালাল করার উদ্দেশ্যে চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।

❂ ৪৭. পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করা:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُضَيِّعَ مَنْ يَقُوتُ
“মানুষ পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করে।” [আহমদ ৬৪৫৯, ৬৭৮০, আবু দাউদ ১৬৯২]

এ শব্দে হাদিসটি দুর্বল। তবে এর বিকল্প সহিহ হাদিস রয়েছে। যেমন: সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
كَفَى بِالمَرْءِ إثْمَاً أنْ يحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ
“মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যার খাদ্যের মালিক, তার খাদ্য সে আটকে রাখে।” [মুসলিম, হা/২৩৫৯]

❂ ৪৮. ঘুষ লেনদেন:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي
“ঘুষ প্রদানকারী এবং ঘুষ গ্রহণকারী উভয়ের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।” [আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ-সহিহ]

❂ ৪৯-৫০. বংশ মর্যাদায় আঘাত করা এবং মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
اثنتانِ في الناسِ هما بهم كفرٌ : الطعنُ في الأنسابِ ، و النِّياحةُ على الميِّتِ
“মানুষের মাঝে দু টি কাজ কুফরি: বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা এবং মৃতের জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৫১. মুসলিম জামাত থেকে বের হয়ে যাওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

من فارق الجماعةَ قَيْدَ شِبرٍ فقد خلع رِبقةَ الإسلامِ من عُنُقِهِ وَمَنْ دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَهُوَ مِنْ جُثَى جَهَنَّمَ وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ
“যে ব্যক্তি মুসলিম জামাত থেকে এক বিঘত পরিমাণ বের হয়ে গেল সে ইসলামের রশি তার গলা থেকে খুলে ফেলে দিল এবং যে ব্যক্তি জাহেলিয়াত (তথা বিজাতীয় মতবাদ)-এর প্রতি আহবান জানাল সে নামাজ-রোজা করলেও জাহান্নামের ইন্ধন হবে।” [আহমদ, ইবনে খুযায়মা, তিরমিযি]

❂ ৫২. জুয়া ও মদ:

মহান আল্লাহ বলেন,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا
“তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাস করে। বলুন, এ দুটি বড় পাপের কাজ।” [বাকারা: ২১৯]

❂ ৫৩. কোনও মুসলিমকে গালি দেওয়া অথবা তার সাথে লড়াই বা মারামারিতে লিপ্ত হওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ، وقِتَالُهُ كُفْرٌ
“মুসলিমকে গালাগালি করা ফাসেকি এবং তার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া কুফরি কাজ।” [বুখারি]

❂ ৫৪. রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من كذب عليَّ مُتعمِّدًا ، فلْيتبوَّأْ مقعدَه من النَّارِ
“যে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার নামে মিথ্যা কথা বর্ণনা করল সে জাহান্নামে তার আবাসস্থল নির্ধারণ করে নিলো।” [বুখারি]

❂ ৫৫. চুরি করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ البَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ
“চোরের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। একটা ডিম চুরির অপরাধে যার হাত কাটা হয়।” [মুসলিম]

❂ ৫৬. খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপণ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য বস্তু বানানো:

রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعن من اتَّخَذ شيئًا فيه الرُّوحُ غَرَضًا
“যে ব্যক্তি কোন প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানাল তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।” [মুসলিম]

❂ ৫৭. কোন অপরাধীকে আশ্রয় দানকারী:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ولعنَ اللَّهُ مَن آوى مُحدِثًا
“যে ব্যক্তি কোন অপরাধী বা দুষ্কৃতিকারীকে আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]
المحدث هو فاعل الجريمة
‘মুহদিস’ অর্থ: অপরাধ কারী।

❂ ৫৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعنَ اللَّهُ مَن ذبحَ لغيرِ اللَّهِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]

❂ ৫৯-৬০. নিজের পিতা ব্যতিরেকে অন্যকে পিতা বলে দাবী করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ ادَّعَى إلى غَيْرِ أَبيهِ ، أوْ تَوَلَّى غيرَ مَوَالِيهِ ؛ فَعليهِ لَعْنَةُ اللهِ والملائكةِ والناسِ أجمعينَ
“যে ব্যক্তি অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে অথবা তার মনিবকে ছেড়ে দিয়ে অন্য মনিবের নিকট পালিয়ে যায় তার উপর আল্লাহ, ফিরিশতাগণ এবং সকল মানুষের অভিশাপ।” [সহিহ বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৬১. চেহারায় দাগ লাগানো (বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করা):

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَيْهِ حِمَارٌ وَقَدْ وُسِمَ فِي وَجْهِهِ قَالَ: «لَعَنَ اللَّهُ الَّذِي وَسَمَهُ»
“একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে দিয়ে একটি গাধা অতিক্রম করছিল। তিনি দেখলেন, তার মুখমণ্ডলে দাগ দেওয়া রয়েছে। তখন তিনি বললেন, “সে ব্যক্তির ওপর আল্লাহর লানত (অভিসম্পাত) যে তার মুখমণ্ডলে দাগ দিয়েছে।” [মুসলিম]

❂ ৬২. জমিনের সীমানা পরিবর্তন করা:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعنَ اللَّهُ من غيَّرَ مَنارَ الأرضِ
“যে ব্যক্তি জমিনের সীমানা পরিবর্তন করবে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]

এখানে সীমানা পরিবর্তন অর্থ হচ্ছে, জমির আইল চেপে সীমানা নষ্ট করা। বা কারো জমি আত্মসাৎ করে নিজের জমির অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া। এদের শাস্তি সম্পর্কে রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি কারো অর্ধ হাত জমি জবরদখল করবে, কিয়ামত দিবসে তার গলায় সাত তবক জমিন ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।” [বুখারি]

❂ ৬৩. গিবত তথা অসাক্ষাতে কারো দোষ চর্চা করা:

মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا
“পরস্পরের দোষ চর্চা করা তোমাদের জন্য উচিত নয়। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভায়ের মাংস খেতে পছন্দ করে?” [সূরা হুজুরাত: ১২]

❂ ৬৪. মদ প্রস্তুত ও প্রচারে অংশগ্রহণ করা:

আনাস বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لعن اللهُ الخمرَ وشاربَها وساقِيَها وبائعَها ومبتاعَها وعاصرَها ومعتَصِرَها وحاملَها والمحمولةَ إليه
“মদ প্রসঙ্গে আল্লাহর রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করেছেন, যে নিজে (ফল-ফলাদি থেকে মদ তৈরির উদ্দেশ্যে) রস নিংড়ায় অথবা অন্যের নিকট নিংড়িয়ে নেয়, মদ্যপায়ী, মদ বহনকারী, যার কাছে বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়, পরিবেশনকারী, বিক্রেতা, বিক্রয় মূল্য ভক্ষণকারী, ক্রেতা এবং যার জন্যে ক্রয় করা হয়।” [তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ]

❂ ৬৫. শরীরে ট্যাটু (উল্কি) অংকন করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعن الله الواشمات والمستوشمات .. المغيرات خلق الله تعالى
“আল্লাহ লানত (অভিসম্পাত) করেছেন যে সব নারী (অথবা পুরুষ) শরীরে ট্যাটু (উল্কি) অংকন করে এবং যার করে দেওয়া হয় তাদের উভয়কে। এরা আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তনকারী।” [বুখারি]

❂ ৬৬ ও ৬৭. লোহা বা লোহা জাতীয় কোন যন্ত্র পুড়িয়ে দাঁত চিকন করা ও সৌন্দর্য বর্দ্ধনের উদ্দেশ্যে মুখমণ্ডলের চুল তুলে ফেলা বা ভ্রু চিকন করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعن الله النامِصاتِ ، و الْمُتَنَمِّصاتِ ، والْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ ، الْمُغَيِّراتِ خلْقَ اللهِ
“আল্লাহ তাআলা লানত (অভিসম্পাত) করেছেন ঐ সকল নারীকে যারা (সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্দেশ্যে) মুখমণ্ডলের চুল তুলে ফেলে (অথবা ভ্রু চিকন কর) এবং দাঁত চিকন করে; যারা এভাবে আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে দেয়।” [বুখারি]

উল্লেখ্য যে, কোনও নারীর মুখে যদি মোচ-দাড়ি গজায় বা ঠোঁটের তলদেশে পশম গজায় তাহলে তা তুলে ফেলা দোষণীয় নয়। কারণ এগুলো তার জন্য কষ্টদায়ক।-অনুবাদক।

❂ ৬৮. মাথায় কৃত্রিম চুল সংযোগ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ ، وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ
“যে নারী মাথায় কৃত্রিম চুল সংযোগ করে দেয় আর যে করে নেয় এবং যে মহিলা (অথবা পুরুষ) শরীরে ট্যাটু বা উল্কি অংক করে দেয় এবং করে নেয় (বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে চামড়ার উপর খোদায় করত: সৌন্দর্য বর্ধক বিভিন্ন চি‎হ্ন অংকন করে) তাদের সকলের উপর আল্লাহর অভিশাপ।” [বুখারি]

❂ ৬৯. মহিলা বেশ ধারণ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعَن رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم المُتشبِّهينَ من الرِّجالِ بالنِّساءِ والمُتشبِّهاتِ من النِّساء بالرِّجالِ
“মহিলা বেশ ধারী পুরুষ এবং পুরুষ বেশ ধারিণী মহিলাকে আল্লাহর রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত (অভিসম্পাত) করেছেন।” [বুখারি]

❂ ৭০. কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ اليَهُودَ والنَّصَارَى، اتَّخَذُوا قُبُورَ أنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
“ইহুদী ও খৃষ্টানদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। এরা এদের নবিদের কবরগুলোকে সেজদার স্থান তথা উপাসনালয় হিসাবে গ্রহণ করেছে। [বুখারি]

❂ ৭১. পথিককে পানি না দেওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ثلاثةٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ عزَّ وجلَّ يومَ القيامةِ، ولا ينظرُ إليهِم، ولا يزَكِّيهم، ولَهُم عذابٌ أليمٌ: رجلٌ على فَضلِ ماءٍ بالفلاةِ يمنعُهُ ابنَ السَّبيلِ
“কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন শ্রেণির লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে পীড়া দায়ক শাস্তি। এদের মধ্যে একজন হল, জন মানবহীন প্রান্তরে যার কাছে অতিরিক্ত পানি রয়েছে তথাপি (পিপাসার্ত) মুসাফির বা পথচারীকে তা দিল না।” [মুসলিম]

❂ ৭২ ও ৭৩. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা এবং টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ثَلاثَةٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ ولا يَنْظُرُ إليهِم ولا يُزَكِّيهِمْ ولَهُمْ عَذابٌ ألِيمٌ المَنَّانُ الذي لا يُعْطِي شيئًا إلَّا مَنَّهُ، والْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بالحَلِفِ الفاجِرِ، والْمُسْبِلُ إزارَهُ
“কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির লোকের দিকে আল্লাহ তাআলা তাকাবেন না, তাদেরকে (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। যে ব্যক্তি কারো উপকার করে পরে সুযোগ বুঝে খোঁটা দেয়, মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য-সামগ্রী বিক্রয় করে এবং টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে লুঙ্গি (বা পোশাক) পরিধান করে।” [মুসলিম]

❂ ৭৪. মুসলিম শাসকের সাথে কৃত বয়াত (আনুগত্যের শপথ) ভঙ্গ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ثَلاثٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَومَ القِيامَةِ، ولا يَنْظُرُ إليهِم، ولا يُزَكِّيهِمْ ولَهُمْ عَذابٌ ألِيمٌ: ورَجُلٌ بايَعَ إمامًا لا يُبايِعُهُ إلَّا لِدُنْيا فإنْ أعْطاهُ مِنْها وفَى، وإنْ لَمْ يُعْطِهِمِنْها لَمْ يَفِ
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন শ্রেণির মানুষের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে পীড়া দায়ক শাস্তি। তাদের মধ্যে একজন হল, যে ব্যক্তি ইমাম (তথা মুসলিম রাষ্ট্র প্রধান)-এর নিকট বায়াত (তথা আনুগত্যের শপথ) নিলো কেবল পার্থিব স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে। স্বার্থ সিদ্ধি হলে শপথ বাস্তবায়ন করল আর তা না হলে তা ভঙ্গ করল।” [মুসলিম]

❂ ৭৫. রমজান মাসের রোজা ছেড়ে দেওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا مِنْ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ رُخْصَةٍ وَلاَ مَرَضٍ لَمْ يَقْضِ عَنْهُ صَوْمُ الدَّهْرِ كُلِّهِ وَإِنْ صَامَهُ
“যে ব্যক্তি রোখসত (শরিয়ত অনুমোদিত কারণ) বা রোগ ব্যতিরেকে রমজানের রোজা ভঙ্গ করবে সারা জীবন সিয়াম পালন করলেও তার কাজা আদায় হবে না।” [আহমদ, তিরমিযি, আবু দাউদ]
(উক্ত হাদিসটিকে মুহাদ্দিসগণ জইফ বলেছেন। [দ্রষ্টব্য: যইফুত তিরমিযি, হা/৭২৩]-অনুবাদক)

❂ ৭৬. ডাকাতি করা:

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن حَملَ علَينا السِّلاحَ فلَيسَ منَّا
“যে আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উঠলো সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৭৭. ইসলামের কোন রোকন পরিত্যাগ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
– بُنِيَ الإسلامُ على خمسٍ شَهادةِ أن لا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وأنَّ محمَّدًا رسولُ اللَّهِ وإقامِ الصَّلاةِ وإيتاءِ الزَّكاةِ وصَومِ رمضانَ وحجِّ البيتِ لمنِ استطاعَ إليهِ سبيلًا
“ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত: এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনও উপাস্য নেই, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, জাকাত প্রদান করা, রমজান মাসে রোজা পালন করা এবং আল্লাহর ঘরের হজ সম্পাদন করা।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৭৮. গনিমত তথা যুদ্ধলদ্ধ সম্পদ বণ্টনের পূর্বে আত্মসাৎ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, নবি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক গনিমত (যুদ্ধলদ্ধ সম্পদ) আত্মসাৎকারী মুসলিম যোদ্ধা সম্পর্কে বলেন,
إنِّي رَأَيْتُهُ في النَّارِ في بُرْدَةٍ غَلَّها، أوْ عَباءَةٍ
“আমি তাকে একটি চাদর বা আলখাল্লা আত্মসাতের কারণে জাহান্নামের আগুনে প্রজ্বলিত হতে দেখেছি।” [বুখারি ও মুসলিম]

আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قَامَ فِينَا رَسولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وسلَّمَ ذَاتَ يَومٍ، فَذَكَرَ الغُلُولَ، فَعَظَّمَهُ وَعَظَّمَ أَمْرَهُ

“রসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা কালে গনিমতের সম্পদ আত্মসাতের প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন এবং এর ভয়াবহতা ও করুণ পরিণতির কথা খুব কঠিন ভাষায় উপস্থাপন করেন।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৭৯. স্ত্রীর পায়ুপথে যৌন ক্রিয়া করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ملعونٌ من أتى امرأتَهُ في دبرِها
“যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর পায়ুপথে যৌন ক্রিয়া সম্পাদন করে সে অভিশপ্ত।” [আহমদ, সহিহ আবু দাউদ, হা/২১৬২-হাসান]

❂ ৮০. অত্যাচার-নির্যাতন করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
اتَّقُوا الظُّلمَ ؛ فإنَّ الظُّلمَ ظُلُماتٌ يومَ القيامةِ
“তোমরা জুলুম-নির্যাতন করার ব্যাপারে সতর্ক হও। কারণ জুলুম-নির্যাতন পরকালে অন্ধকার (হিসেবে উপস্থিত হবে)।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৮১. অস্ত্রের মাধ্যমে ইঙ্গিত করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن أشارَ إلى أخِيهِ بحَدِيدَةٍ، فإنَّ المَلائِكَةَ تَلْعَنُهُ، حتَّى يَدَعَهُ
“যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের দিকে অস্ত্র দ্বারা ইঙ্গিত করল বা তাকে অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখাল সে অস্ত্র ফেলে দেওয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তার উপর অভিশাপ দিতে থাকে।” [মুসলিম]

❂ ৮২. পবিত্র মক্কা ও মদিনায় হারামের সীমানার মধ্যে ইসলাম দ্রোহিতা মূলক কাজ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَبْغَضُ النَّاسِ إِلَى اللهِ ثَلاَثَةٌ مُلْحِدٌ فِي الْحَرَمِ
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি ক্রোধের পাত্র তিন শ্রেণির মানুষ: যে ব্যক্তি হারামের মধ্যে ইসলাম দ্রোহিতা মূলক কাজ করে।” [বুখারি]

❂ ৮৩. প্রতারণা বা ঠগ বাজি করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا
“যে ব্যক্তি প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” [মুসলিম]

❂ ৮৪. রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن يُسَمِّعْ يُسَمِّعِ اللَّهُ به، ومَن يُرائِي يُرائِي اللَّهُ بهِ
“যে ব্যক্তি মানুষকে শোনানোর উদ্দেশ্যে সৎকর্ম করবে (কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার গোপন উদ্দেশ্যের কথা) মানুষকে শুনিয়ে দিবেন এবং যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে সৎকর্ম করবে মহান আল্লাহ (কেয়ামতের দিন মানুষের সামনে) গোপন উদ্দেশ্য ফাঁস করে দিবেন।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৮৫. গণকের কাছে যাওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن أَتَى عَرَّافًا فسأله عن شيءٍ فصَدَّقَهُ بما قال لم تُقْبَلْ له صلاةٌ أَرْبَعِينَ يومًا
“যে ব্যক্তি ব্যক্তি গণকের নিকট গিয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল হবে না।” [মুসলিম]

❂ ৮৬. স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি পাত্র ব্যবহার:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
‏ الَّذِي يَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ
“যে ব্যক্তি রৌপ্যের তৈরি পাত্রে পান করবে তার পেটে জাহান্নামের আগুন গড়গড় করে ফুটবে।” [বুখারি ও মুসলিম]

সহিহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে:
إنَّ الَّذِي يَأكُلُ أَوْ يَشْرَبُ في آنِيَةِ الفِضَّةِ وَالذَّهَبِ
“যে ব্যক্তি স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে পানাহার করে।”

❂ ৮৭. পুরুষের রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পরিধান করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا تشْرَبُوا في آنيةِ الذهبِ والفضةِ ، ولا تأكلُوا في صحافِها ، ولا تلبَسوا الحريرَ ولا الديباجَ ، فإِنَّه لهم في الدنيا ، وهو لكم في الآخرةِ
“স্বর্ণ, রৌপ্য, রেশম, (সিল্ক) বা রেশম মিশ্রিত পোশাক দুনিয়ায় ওদের জন্য (অর্থাৎ কাফেরদের জন্য) আর পরকালে তোমাদের জন্য।”

অন্য হাদিসে রয়েছে,
إنَّما هذِه لِبَاسُ مَن لا خَلَاقَ له
“রেশমি পোশাক সেই পরিধান করবে পরকালে যার প্রতিদান নেই।” [বুখারি]

❂ ৮৮. সাহাবিদের গালমন্দ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لا تَسُبُّوا أصْحابِي
“তোমরা আমার সাহাবিদের গালমন্দ কর না।” [সহিহ মুসলিম]

তিনি আরও বলেন,
لا يُحِبُّ الأنصارَ إلا مؤمنٌ ، ولا يُبْغِضُهم إلا منافقٌ ، ومَن أَحَبَّهم أَحَبَّهُ اللهُ ، ومَن أَبْغَضَهم أَبْغَضَه اللهُ
“আনসারি সাহাবিদেরকে ভালবাসে কেবল মুমিন। আর গালি দেয় মুনাফিক বা কপট লোক। যে তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ তাকে ভালবাসে। আর যে তাদের ঘৃণা করে আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৮৯. নামাজরত অবস্থায় মুসল্লির সামনে দিয়ে গমন করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لو يعلَمُ المارُّ بين يديِ المُصلِّي ماذا عليه، لكان أنْ يقِفَ أربعين خيرًا له مِن أنْ يمُرَّ بين يديه،
قال: أبو النَّضرِ: لا أدري، أقال أربعين يومًا، أو شهرًا، أو سنةً
“নামাজ অবস্থায় মুসল্লির সামনে দিয়ে গমন করলে কী পরিমাণ গুনাহ হবে তা কেউ জানলে মুসল্লির সামনে দিয়ে না গিয়ে চল্লিশ (৪০ দিন, ৪০ মাস কিংবা ৪০ বছর) দাঁড়িয়ে থাকাও তার জন্য কল্যাণকর হত।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৯০. মনিবের নিকট থেকে কৃতদাসের পলায়ন:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَيُّما عَبْدٍ أَبَقَ مِن مَوَالِيهِ فقَدْ كَفَرَ حتَّى يَرْجِعَ إِلَيْهِمْ
“যে দাস তার মনিবের নিকট থেকে পলায়ন করে সে কুফরি করবে যতক্ষণ না সে ফিরে আসে।” [মুসলিম]

❂ ৯১. ভ্রান্ত ও জাহেলি মতাদর্শ, রীতি-নীতি বা বিদআতের প্রতি আহবান করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَبْغَضُ النَّاسِ إلى اللَّهِ ثَلاثَةٌ: ومُبْتَغٍ في الإسْلامِ سُنَّةَ الجاهِلِيَّةِ
“আল্লাহর নিকট তিন শ্রেণির লোক ঘৃণার পাত্র: তন্মধ্যে একজন হল, যে ব্যক্তি ইসলামে জাহেলি রীতি-নীতির অনুসন্ধান করে।” [বুখারি]

তিনি আরও বলেন,
مَن دعا إلى ضلالةٍ كان عليه مِن الإثمِ مِثْلُ آثامِ مَن تبِعهُ لا ينقُصُ ذلك مِن آثامِهم شيئًا
“যে ব্যক্তি মানুষকে ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান জানাবে সে ঐ মতাদর্শের অনুসারীদের সমপরিমাণ পাপের অধিকারী হবে। তা হতে বিন্দুমাত্র কম করা হবে না।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৯২. স্বামী-স্ত্রীর মিলনের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إنَّ مِن أَشَرِّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَومَ القِيَامَةِ، الرَّجُلَ يُفْضِي إلى امْرَأَتِهِ، وَتُفْضِي إِلَيْهِ، ثُمَّ يَنْشُرُ سِرَّهَا

“কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক ঐ ব্যক্তি বিবেচিত হবে, যে একান্ত নিভৃতে তার স্ত্রী সাথে মিলিত হয় এবং তার স্ত্রীও তার সাথে মিলিত হয় এরপর তার গোপনীয়তা প্রকাশ করে দেয়।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৯৩-৯৪. পবিত্র মদিনায় কোন অপকর্ম বা দুষ্কৃতি করা অথবা কোন দুষ্কৃতিকারীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
الْمَدِينَةُ حَرَمٌ، فمَن أَحْدَثَ فِيهَا حَدَثًا، أَوْ آوَى مُحْدِثًا، فَعليه لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لا يُقْبَلُ منه يَومَ القِيَامَةِ عَدْلٌ، وَلَا صَرْفٌ
“মদিনা হল, হারাম (তথা পবিত্র বা নিষিদ্ধ) নগরী। যে ব্যক্তি এতে কোন দুষ্কৃতি করে বা কোন দুষ্কৃতিকারীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহ, ফেরেশতামণ্ডলী এবং সমগ্র মানবজাতির পক্ষ থেকে অভিশাপ। কিয়ামতের দিন তার কোন ফরজ বা নফল ইবাদত কবুল করা হবে না।” [সহিহ বুখারি]

❂ ৯৫. কোন মুসলিম কোন অমুসলিমকে নিরাপত্তা দিলে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
وَذِمَّةُ المُسْلِمِينَ وَاحِدَةٌ، يَسْعَى بهَا أَدْنَاهُمْ، فمَن أَخْفَرَ مُسْلِمًا، فَعليه لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لا يُقْبَلُ منه يَومَ القِيَامَةِ عَدْلٌ، وَلَا صَرْفٌ
“মুসলিমদের আশ্রয়ের প্রতিশ্রুতি অভিন্ন প্রতিশ্রুতি বলে বিবেচিত হবে-যা বাস্তবায়নে সর্বনিম্ন ব্যক্তিও চেষ্টা করবে। সুতরাং কেউ কোন মুসলিমের সাথে এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করলে (অর্থাৎ কোনও মুসলিম যদি কোনও অমুসলিমকে নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া আর তা যদি অন্য কোনও মুসলিম ভঙ্গ করে তাহলে) তার প্রতি আল্লাহ, ফেরেশতা মণ্ডলী এবং সমগ্র মানবজাতির পক্ষ থেকে অভিসম্পাত। কিয়ামতের দিন তার ফরজ ও নফল কোন ইবাদতই কবুল করা হবে না।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৯৬. আল্লাহর ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أنَّ رَجُلًا قالَ: واللَّهِ لا يَغْفِرُ اللَّهُ لِفُلانٍ، وإنَّ اللَّهَ تَعالَى قالَ: مَن ذا الذي يَتَأَلَّى عَلَيَّ أنْ لا أغْفِرَ لِفُلانٍ، فإنِّي قدْ غَفَرْتُ لِفُلانٍ، وأَحْبَطْتُ عَمَلَكَ، أوْ كما قالَ
“জনৈক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করল, যে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেনা। তার এ মন্তব্য শুনে আল্লাহ তাআলা বললেন, “এমন কে আছে যে অনাধিকারভাবে আল্লাহর উপর বাড়িয়ে কথা বলে যে, তিনি উমুককে ক্ষমা করবেন না। আমি ঐ লোক কে ক্ষমা করে দিলাম আর তোমার সমস্ত আমল বাতিল করে দিলাম।” [সহিহ মুসলিম]

❂ ৯৭. জুমার নামাজ পরিত্যাগ করা:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَيَنْتَهينَّ أقْوامٌ عن ودْعِهِمُ الجُمُعاتِ، أوْ لَيَخْتِمَنَّ اللَّهُ علَى قُلُوبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكونُنَّ مِنَ الغافِلِينَ
“কতিপয় লোক জুমার নামাজ পরিত্যাগ করা হতে বিরত না থাকলে আল্লাহ তাদের অন্তঃকরণে মোহর মেরে দিবেন। ফলে তারা উদাসীন লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।” (ফলে আর কোন ভাল কথাই তাদের অন্তরে প্রবেশ করবে না।) [সহিহ মুসলিম]

❂ ৯৮. যে নারীর প্রতি তার স্বামী অসন্তুষ্ট:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إلى فِرَاشِهِ فأبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلَائِكَةُ حتَّى تُصْبِحَ
“কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে শয্যায় আহবান করলে স্ত্রী যদি তাতে অসম্মতি জানায় এবং তাতে স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রিযাপন করে তবে সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ ঐ স্ত্রীর উপর অভিশাপ জানাতে থাকে।” [বুখারি ও মুসলিম]

❂ ৯৯-১০০. স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর অবদান অস্বীকার করা এবং বেশি বেশি অভিশাপ দেওয়া:

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদের লক্ষ্য করে বলেছেন,
يا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ؛ فَإِنِّي أُرِيتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ. فَقُلْنَ: وَبِمَ يا رَسُولَ اللَّهِ قال: تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ، وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ
“হে নারী সম্প্রদায়, তোমরা দান-সদকা করো। কারণ, জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমাদের সংখ্যাই বেশি দেখেছি। মহিলারা জিজ্ঞেস করলেন, তা কি কারণে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, কারণ, তোমারা বেশি বেশি অভিশাপ দাও এবং স্বামীর অবদান অস্বীকার করে থাক।” [বুখারি]
—–সমাপ্ত—–