হরকত (যবর, যের, পেশ ইত্যাদি) ছাড়া আরবি পড়া এবং আরবি হরকতের আবিষ্কারক

প্রশ্ন: হরকত (যবর, যের, পেশ ইত্যাদি) ছাড়া কিভাবে আরবি পড়া যায়? আরবি হরকতের আবিষ্কারক কে?
উত্তর:
হরকত তথা যের, যবর, পেশ, তাশদীদ, জযম ইত্যাদি চিহ্ন ব্যতিরেকে শুদ্ধ ভাবে আরবি পড়ার জন্য আরবি ভাষায় দক্ষতা এবং আরবি ব্যাকরণ জানা অপরিহার্য। মূলত: শিক্ষিত আরবি ভাষাভাষীদের আরবি পড়ার জন্য এ সকল চিহ্নের তেমন প্রয়োজন পড়ে না (তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদেরও প্রয়োজন হয়) তবে বিশেষ করে আজমি বা অনারবদের বিশুদ্ধ আরবি পড়ার স্বার্থেই এ সব চিহ্ন প্রবর্তন করা হয়।
◍ যের, যবর, পেশ ও নুকতার আবিষ্কারক কে?
ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ লিখেছেন:
আমরা কুরআন পড়ি। কুরআনের প্রতিটি হরফের উপরই রয়েছে হরকত (যের, যবর, পেশ ও নুকতা)। কুরআন যখন নাজিল হয়েছে তখন কোন হরফের উপরই এই হরকত ছিল না। এমনকি হযরত উসমান (রা.) যে মুসহাফ (কুরআন সংকলন করেছিলেন) তৈরি করেছেন তাতেও হরফসমূহে নুকতা ও হরকত ছিল না। পরবর্তীতে কে এই মহৎ কাজটি করেছেন-এ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতভেদ আছে।
তবে বর্তমান সময়ের বিখ্যাত আলেম, আল্লামা তকী উসমানী (দা.) ‘উলূমুল কুরআন’-এ উল্লেখ করেছেন যে, কুরআনের হরকত কে দিয়েছেন সে সম্পর্কিত সকল বর্ণনা সামনে রাখলে প্রতীয়মান হয় যে, হরকত সর্বপ্রথম হযরত আবুল আসওয়াদ দুয়ালী রহ. আবিষ্কার করেন। কিন্তু হরকতের রূপ এখন যেমন দেখা যায় তেমন ছিল না। তখন ছিল ফোঁটার মতো। যবরের জন্য উপরে এক ফোঁটা দেওয়া হত, যেরের জন্য নিচে এক ফোঁটা আর পেশের জন্য সামনে এক ফোঁটা দেওয়া হত। তানভীনের জন্য দুই ফোঁটা ব্যবহৃত হত। এরপর খলীল বিন আহমদ (রহঃ.) হামযাহ ও তাশদীদের বর্তমান রূপটি আবিষ্কার করেন।
এরপর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ইয়াহইয়া বিন ইয়ামার (রহ.) ও নাসর বিন আসেম (রহ.)- এর মাধ্যমে কুরআনে কারীমে হরফসমূহে নুকতা লাগানোর ব্যবস্থা করেন। এই সময়ই মূলত নুকতা ও হরকতের পার্থক্যের উদ্দেশ্যে হরকতের বর্তমান রূপটি অবলম্বন করা হয়। [সূত্র: আলবুরহান ১/২৫০; উলূমুল কুরআন পৃ. ১৯৫]
[উৎস: ourislam24]
-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল-