স্ত্রীর নামে প্লট ক্রয়

প্রশ্ন: ভবিষ্যতে বাড়ি করার জন্য – কোন স্বামী যদি তার নিজের স্ত্রী এর নামে প্লট ক্রয় করে – এটি কি করতে পারবে? কারণ স্ত্রী চায় তার নামে প্লট ক্রয় করা হউক। যদিও স্বামীর মা-বাবা চায় তার নিজের ছেলের নামে হউক। তবে তারা জোর করে নি যে তার ছেলের নামে করতেই হবে, প্রস্তাব করেছে। এক্ষেত্রে কী করণীয়?

উত্তর:

স্বামীর জন্য আবশ্যক হল, স্ত্রীর মোহর পরিশোধ করা এবং উত্তম রূপে তার ভরণ-পোষণ, চিকিৎসা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। স্ত্রীকে এর অতিরিক্ত সম্পদ দেয়া তার জন্য আবশ্যক নয়।

ইসলামী সমাজ ও পরিবার বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, স্ত্রীর নামে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ-সম্পদ দেয়া হলে তা তাকে ঔদ্ধত্য ও অহংকারী করে তুলতে পারে যা পরবর্তীতে পারিবারিক অশান্তির কারণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি তারা সমাজের বাস্তব অবস্থা ও অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছেন। কেননা সমাজে এ সংক্রান্ত ঘটনার অভাব নাই। আল্লাহুল মুস্তাআন।

এ ক্ষেত্রে তারা কুরআনের এই আয়াতটি তুলে ধরেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ الَّتِي جَعَلَ اللَّـهُ لَكُمْ قِيَامًا وَارْزُقُوهُمْ فِيهَا وَاكْسُوهُمْ وَقُولُوا لَهُمْ قَوْلًا مَّعْرُوفًا

“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদেরকে ভালো কথা বলো।”

(সূরা নিসা: ৪ নং আয়াত)

অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: এখানে السُّفَهَاءَ (অর্বাচীন বা নির্বোধ) দ্বারা উদ্দেশ্য হল: শিশু এবং মহিলাগণ।

এ মত ব্যক্ত করেছেন, প্রখ্যাত সাহাবী ইবনে আব্বাস রা., প্রখ্যাত তাবেঈ সাঈদ বিন জুবাইর, হাসান, সুদ্দী, যাহ্হাক, মুজাহিদ, আল হাকাম, কাতাদা, আবু মালিক প্রমুখ জগদ্বিখ্যাত মুফাসসিরগণ।

(দেখুন: তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা নিসা ৪ নং আয়াতের তাফসীর)

মোটকথা, একজন বুদ্ধিমান সচেতন স্বামীর করণীয় হল, অর্থ-সম্পদ তার নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রেখে তা উত্তম পন্থায় তার স্ত্রী-পরিবারের প্রয়োজনে খরচ করা। স্ত্রী বা সন্তানদের নামে বিশাল প্রোপার্টি লিখে দেয়া উচিৎ নয়। কেননা, পরিণতিতে এটি তার জীবনের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬▬●●●▬▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার সৌদি আরব