সালাতে পায়ের সাথে পা ও কাঁধের সাথে কাঁধ লাগানোর বিধান কী? এবং তা না করলে কি সালাতের কোনও ক্ষতি হবে?

প্রশ্ন: জামাতে সালাত আদায়ের সময় পরস্পরে পায়ের সাথে পা এবং কাঁধের সাথে কাঁধ লাগিয়ে দাঁড়ানোর বিধান কি? কাতারের মাঝে ফাঁকা রাখলে কি গুনাহ হবে? আমি কাতারের মাঝে ফাঁক রাখতে চাই না বরং পায়ের সাথে পা ও কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে চাই কিন্তু পাশে থাকা মুসল্লি ফাঁকা হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় ফাঁকা রাখলে কি গুনাহ বা নামাজের কোনও ক্ষতি হবে?
উত্তর:
পায়ের সাথে পা লাগানোর বিষয়টি একটি দ্বিমত পূর্ণ মাসআলা। তবে একাধিক হাদিস এবং সাহাবিদের আমল দ্বারা এটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হওয়ার বিষয়টি অধিক অগ্রাধিকার যোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদিস, সাহাবিদের আমল, আলেমদের অভিমত এবং সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ পেশ করা হল:

✪ ১. আনাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي وَكَانَ أَحَدُنَا يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ

“তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করো। কেননা, আমি তোমাদিগকে আমার পিঠের পিছন থেকে দেখতে পাই।” আনাস রা. বলেন, (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে) আমাদের একজন তাঁর কাঁধ ও পা তাঁর পাশের ব্যক্তির কাঁধ ও পায়ের গোড়ালি (গোছ) এর সাথে লাগিয়ে রাখতো।” [সহিহ বুখারি, অধ্যায়: ৪৭: আজান, পরিচ্ছেদ: ৪৬৮. কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মেলানো।]

ইমাম বুখারি উক্ত অনুচ্ছেদের পরে উল্লেখ করেছেন,
وَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ بَشِيرٍ رَأَيْتُ الرَّجُلَ مِنَّا يُلْزِقُ كَعْبَهُ بِكَعْبِ صَاحِبِهِ
“আর নুমান ইবনে বশীর রা. বলেন, আমাদের লোকজনকে তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির পায়ের গিঁঠের সাথে পায়ের গিঁঠ লাগিয়ে রাখতে দেখেছি।” ইমাম বুখারি কর্তৃক উক্ত নুমান বিন সাবিত রা. এর উক্ত কথাটি মূলত: আবু দাউদে বর্ণিত একটি পূর্ণ হাদিসের অংশ। পূর্ণ হাদিসটি হল:

✪ ২. নুমান ইবনে বশীর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى النَّاسِ بِوَجْهِهِ فَقَالَ أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ ‏”‏ ‏.‏ ثَلاَثًا ‏”‏ وَاللَّهِ لَتُقِيمُنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ ‏ قَالَ فَرَأَيْتُ الرَّجُلَ يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَرُكْبَتَهُ بِرُكْبَةِ صَاحِبِهِ وَكَعْبَهُ بِكَعْبِهِ
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমবেত ব্যক্তিদের নিকট উপস্থিত হয়ে তিনবার বলেন, “তোমরা তোমাদের কাতার সোজা কর। আল্লাহর শপথ! তোমরা কাতার সোজা করে দণ্ডায়মান হবে, অন্যথায় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করবেন।”
বর্ণনাকারী (নোমান রা.) বলেন, “অতঃপর আমি মুসল্লিদেরকে পরস্পর কাঁধে কাঁধ, পায়ের গিঁঠের সাথে গিঁঠ লাগিয়ে দাঁড়াতে দেখেছি।” [সুনান আবু দাউদ, অধ্যায়: ২/ সালাত, পরিচ্ছেদ: ১০০. কাতার সোজা করা।]

হাদিসে বর্ণিত الكَعْبُ শব্দের অর্থ: العظْمُ الناتِىءُ عند ملتقى الساق والقدم، وفي كل قدم كعبان عن يَمْنَتِها وعن يَسْرتِها “নলা এবং পায়ের পাতার সংযোগস্থলে অবস্থিত উঁচু হাড্ডি। প্রত্যেক পায়ের পাতায় ডানে ও বামে দুটি করে উঁচু হাড্ডি আছে। সেগুলোকেই كَعْبُ বলা হয়। এটাই হল, পায়ের গোছ, গ্রন্থি বা গিঁঠ।

আর يُلْزِقُ শব্দটি এসেছে لزق শব্দমূল থেকে। যার আভিধানিক অর্থ: لَزِقَ الشيءُ بالشيء: اتصل به لا يكون بينهما فجوة “একটা জিনিসের সাথে অন্য একটা জিনিস এমনভাবে যুক্ত থাকা যে, তাদের মাঝে কোনও ফাঁক থাকে না।” [অনলাইন ভিত্তিক আরবি অভিধান almaany]

উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে প্রমাণিত হল যে, সাহাবিগণ সালাতে একে অপরের কাঁধ এবং পায়ের গোছ (গোড়ালির উপরিস্থ পায়ের গিঁঠ) এর সাথে লাগিয়ে এমনভাবে দণ্ডায়মান হতেন যে, তার মধ্যে কোনও ফাঁক থাকতো না।

✪ ৩. আনাস বিন মালিক রা. উক্ত আমলটির ব্যাপারে মানুষের অনীহার বিষয়টি এভাবে বলেছেন,
“فلقد رأيت أحدنا يلصق منكبه بمنكب صاحبه، وقدمه بقدمه، فلو ذهبت تفعل هذا اليوم؛ لنفر أحدكم كأنه بغل شموس- مصنف ابن أبي شيبة (1/ 351) بإسنادٍ صحيح
“আমি দেখেছি, আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তার পাশের ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা লাগিয়ে রাখতো। কিন্তু আজ যদি এমনটি করতে যাও তাহলে দেখবে যে, সে পলায়নপর বন্য খচ্চরের মত পালাচ্ছে!! [মুসান্নাফ ইবনে শায়বা ১/৩৫১, সনদ সহিহ]

এটাই দু:খ জনক বাস্তবতা। বর্তমানেও আমাদের সমাজে অধিকাংশ মসজিদে যদি কোনও মুসল্লি সুন্নত পালনার্থে পাশের মুসল্লির পায়ের সাথে পা বা কাঁধের সাথে কাঁধ মিলাতে যায় তাহলে তারা দূরে তো সরবেই বরং সালাত শেষে তাকে বেয়াদব, অশিক্ষিত, অভদ্র ইত্যাদি বলে গালমন্দ করবে এবং মারাত্মক ক্ষিপ্ত হবে। এটা পরীক্ষিত বাস্তবতা। মনে হবে, এটা হয়ত কোনও বিদআত এবং মারাত্মক অন্যায় কাজ! (আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন)।

✪ ৪. জাবির ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বাড়ি বের হয়ে এসে বললেন,
أَلاَ تَصُفُّونَ كَمَا تَصُفُّ الْمَلاَئِكَةُ عِنْدَ رَبِّهَا ‏”‏ ‏.‏ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ تَصُفُّ الْمَلاَئِكَةُ عِنْدَ رَبِّهَا قَالَ ‏”‏ يُتِمُّونَ الصُّفُوفَ الأُوَلَ وَيَتَرَاصُّونَ فِي الصَّفِّ
“তোমরা কি কাতার বদ্ধ হবে না যেভাবে ফেরেশতাগণ তাঁদের রবের সামনে কাতার বদ্ধ হয় তাঁরা বললেন, ফেরেশতাগণ তাদের রবের সামনে কীভাবে কাতার বদ্ধ হন?
তিনি বললেন, তারা প্রথম কাতার পূর্ণ করে। তারপর কাতারে পরস্পর মিশে দাঁড়ান।”
[সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৪/ কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: ২৭. সালাতে নড়াচড়া করা, সালামের সময় হাতের ইশারা করা ও হাত উঠান নিষেধ এবং সামনের কাতার পূর্ণ করা ও পরস্পর হয়ে এবং একত্রিত হয়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ।]

আরবি অভিধানের আলোকে يَتَرَاصُّونَ শব্দটি الرص শব্দমূল থেকে উৎসারিত হয়েছে। এর অর্থ:
الرص: يُقال: رصّ البناء يرصّه رصًّا إذا ألصقت بعضه ببعض
“ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যেভাবে একটা ইটের সাথে আরেকটা ইট সংযুক্ত থাকে।” অর্থাৎ মুসল্লিগণ প্রত্যেকেই একে অপরের পায়ের সাথে পা ও কাঁধের সাথে কাঁধ যুক্ত করে সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবে।
ورَصَصْتُ الشيء أَرُصّهُ رَصّاً أَي أَلْصَقْتُ بعضَه ببعض، ومنه: بُنْيان مَرْصوصٌ

✪ ৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন,
«أقيمُوا الصُّفُوفَ، وَحَاذُوا بَيْنَ المَنَاكِبِ، وَسُدُّوا الخَلَلَ، ولا تَذَرُوا فُرُجَاتٍ للشَّيْطَانِ، وَمَنْ وَصَلَ صَفًّا وَصَلَهُ اللهُ، وَمَنْ قَطَعَ صَفًّا قَطَعَهُ اللهُ»

“কাতার সোজা করো, কাঁধের সাথে কাঁধ বরাবর করো, ফাঁক বন্ধ করো, শয়তানের জন্য কোন ফাঁক রাখবে না। যে ব্যক্তি কাতারের সংযোগ স্থাপন করে আল্লাহও তার সাথে সংযোগ স্থাপন করেন, আর যে কাতার ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সাথে সংযোগ ছিন্ন করেন।” [আবু দাউদ, অধ্যায়: সালাত, অনুচ্ছেদ: ৯৫। এই হাদিসটি ইমাম ইবনে খুযায়মা ও ইমাম হাকিম সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। [ইবনে হাজার আসকালানি, ফাতহুল বারী; ২/২১১]

এ সব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি দু জনের পায়ের মধ্যখানে কোন ফাঁকা না রাখার ব্যাপারেও নির্দেশ দিয়েছেন। আর সে জন্যেই সাহাবিগণ একে অপরের পায়ের সাথে পা এবং কাঁধের সাথে কাঁধ লাগিয়ে দণ্ডায়মান হতেন।
মোটকথা, পায়ের সাথে পা লাগানো যেমন সুন্নত তেমনি কাঁধের সাথে কাঁধ মিলানও সুন্নত।

➤ শাইখ উসাইমিন রহ. বলেন,
أما إلصاق الكعبين بعضهما ببعض فلا شك أنه وارد عن الصحابة رضي الله عنهم، فإنهم كانوا يسوون الصفوف بإلصاق الكعبين بعضهما ببعض، أي: أنّ كل واحد منهم يلصق كعبه بكعب جاره لتحقيق المساواة. و اهذا إذا تمت الصفوف و قام الناس
(-جمع أشرف عبد الرحيم – (1/ 436 – 43

“এতে কোনও সন্দেহ নাই যে, একে অপরের সাথে পায়ের গোছ বা গিঁঠ লাগানোর বিষয়টি সাহাবিদের থেকে বর্ণিত হয়েছে। কারণ তারা প্রত্যেকেই একে অপরের পায়ের গোছের সাথে গোছ সংযুক্ত করে কাতার সোজা করতেন। অর্থাৎ সবাই তার পার্শ্বস্থ ব্যক্তির পায়ের গোছের সাথে গোছ লাগাতেন এ জন্য যেন, কাতার সোজার করার বিষয়টি ভালোভাবে বাস্তবায়িত হয়। আর এটা ঐ সময় যখন কাতার পূর্ণ হয়ে যেতো এবং লোকজন দণ্ডায়মান হতো। ” [ফাতাওয়াশ শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল উসাইমিন রাহ. ১/৩৩৬-৪৩৭]

অনেক আলেম পরস্পরের কাঁধ বরাবর দাঁড়ানোর বিষয়টিকে সমর্থিত করলেও পায়ের সাথে পা লাগিয়ে দাঁড়ানোর বিষয়টি সমর্থন করেন নি। তাদের মতে, এ সকল হাদিস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, কাতার সোজা করার ক্ষেত্রে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া এবং কাছাকাছি দাঁড়ানো। পায়ের সাথে পা লাগানোর প্রকৃত অর্থ উদ্দেশ্য নয়। যেমনটি ইবনে হাজার আসকালানি সহ অনেক আলেম অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

হাফেজ ইবনে হাজার বলেন,
المراد بذلك المبالغة في تسوية الصفوف و تقاربها ، لاحقيقة الإلتصاق و يمكن أن أحدهم يمس منكبه منكب الآخر، فأما القدم و الركبة فلا يلزم التماس، و ذلك لأن البعض قد يتأذى من التلاصق و التقارب الشديد ، و القصد هو تراص الصفوف و سدّ الخلل فيها حتى لا تدخل بينهم الشياطين
“নুমান বিন বাশীর রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের দ্বারা উদ্দেশ্য হল, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে খুব ভালোভাবে কাতার সোজা করা। পায়ের সাথে পা লাগানো উদ্দেশ্য নয়। একে অপরে কাঁধের সাথে কাঁধ স্পর্শ করা সম্ভব। কিন্তু পা ও হাঁটু স্পর্শ করা আবশ্যক নয়। কারণ খুব বেশি কাছাকাছি হলে বা লাগালাগি করে থাকলে কারও কারও কষ্ট হতে পারে। মুখ্য বিষয় হল, কাতার সোজা করা ও তাতে ফাঁক বন্ধ করা যেন, মুসল্লিদের মাঝে শয়তান প্রবেশ করতে না পারে।” [ফাতহুল বারি]

কিন্তু পূর্বোক্ত একাধিক হাদিসের আলোকে সাহাবিদের বুঝ ও আমল দ্বারা এটাই নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয় যে, তারা এমনভাবে দণ্ডায়মান হতেন যে, তাদের মাঝে কোনও ফাঁক থাকতো না।

যাহোক, জামাতে সালাত আদায়ের সময় পায়ের সাথে পা এবং কাঁধের সাথে কাঁধ বিলাতে গিয়ে যদি হানাফি মাজহাবের অনুসারী কোন ভাই বিরক্তি অনুভব করে তাহলে তার সাথে জোরাজুরি করতে যাওয়া সমীচীন নয়। বরং সে ক্ষেত্রে পা লাগানো ছাড়াই কাতারা যথাসম্ভব কাছাকাছি দাঁড়াতে হবে। এতে পা লাগিয়ে দাঁড়ানোর সুন্নতের প্রতি আমলের নিয়ত থাকার কারণে সওয়াব অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ। আর বিষয়টি যেহেতু ওয়াজিব বা রোকন পর্যায়ের নয় বরং সুন্নত পর্যায়ের আমল সেহেতু কেউ তা না করলেও সালাতেরও কোনও ক্ষতি হবে না ইনশাআল্লাহ। অতএব এ বিষয়টি নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করা বা বাড়াবাড়ি করা অনুচিত।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।