সাধারণ তাকবির ও বিশেষ তাকবির কী এবং কখন ও কীভাবে তা পাঠ করতে হয়

🔸সাধারণ তাকবির পাঠ:

জিলহজের প্রথম দিন থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বড়ত্ব ঘোষণার উদ্দেশ্যে তাকবির পাঠ করা সুন্নত। এ তাকবির প্রকাশ্যে ও উচ্চস্বরে মসজিদ, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, বাজারসহ সর্বত্র উচ্চ আওয়াজে পাঠ করা যাবে।

সলাতের আগে কিংবা পরে, সকাল-সন্ধ্যা, দিন রাত যে কোন সময় পড়া ভালো। তবে মেয়েরা নিম্ন স্বরে তাকবীর পাঠ করবে।

🔸 তাকবির:

বিন বায র. বলেন, নিচের তাকবীর গুলো সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত:
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، لَاإِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ وَلِلهِ الحَمْدُ
الله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله، الله أكبر الله أكبر ولله الحمد
الله أكبر كبيرًا، والحمد لله كثيرا، وسبحان الله بكرة وأصيلا

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ও আবু হুরায়রা রাদিল্লাহু আনহুমা জিলহজ মাসের প্রথম দশকে বাজারে যেতেন ও তাকবির পাঠ করতেন। লোকজনও তাদের অনুসরণ করে তাকবির পাঠ করতেন। অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই দুই প্রিয় সাহাবি লোকজনকে তাকবির পাঠের কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন।

▪️ ইমাম বুখারি রহ. বলেছেন, ইবনে উমর ও আবু হুরায়রা রাদয়িাল্লাহু আনহুমা এ দশদিন তাকবির বলতে বলতে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হতেন। লোকজনও তাদের দেখে দেখে তাকবির বলত।

🔸 তাকবির পড়তে পড়তে ঈদগাহে গমন:

ঈদের রাত থেকে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত হালকা উচ্চ আওয়াজে তাকবির পাঠ করা সুন্নত। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. এক বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকবির (আল্লাহু আকবার) ও তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) উচ্চ আওয়াজে পাঠ করতে করতে ঈদগাহের দিকে গমন করতেন।” [সহীহ, ইরওয়া, ৩/১২৩]।

নাফে’ থেকে বর্ণিত:
” أن ابن عمر كان إذا غدا يوم الفطر ويوم الأضحى يجهر بالتكبير حتى يأتي المصلى ، ثم يكبر حتى يأتي الإمام ، فيكبر بتكبيره ” أخرجه الدارقطني بسند صحيح.
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. যখন ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় বের হতেন তখন ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত উচ্চ আওয়াজে তাকবির পাঠ করতেন। তারপর আবার ইমাম আসা পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন। অতঃপর ইমামের সাথে তাকবির বলতে থাকতেন। [দারাকুতনী, সনদ সহীহ, ইরওয়া, হাদিস নাম্বার: ৬৫০]।

🔸 আইয়ামে তাশরিকের দিন দিনগুলোতে বিশেষ তাকবির পাঠ:

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. এর সূত্রে বর্ণিত, তিনি আইয়ামে তাশরিকের মধ্যে এভাবে তাকবির বলতেন:
“الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله . والله أكبر ، الله أكبر، ولله الحمد ”
বাংলা উচ্চারণ:
“আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার,
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু,
ওয়াল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার,
ওয়া লিল্লাহিল হামদ”
বি. দ্র. দলবদ্ধ হয়ে একসাথে তাকবির পাঠ করা সুন্নত পরিপন্থী কাজ। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিংবা তাঁর কোন সাহাবি থেকে এমনটা পাওয়া যায় না। তাই সঠিক নিয়ম হল, সকলেই একা একা পাঠ করবে।

▪️ শায়খ বিন বায রাহ. বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং এক দল সাহাবি থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আরাফার দিন ফজরের পর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ সালাতের পরে তাকবির পাঠ করতেন। তবে এই দিন গুলোতে সাধারণ তাকবির এবং বিশেষ তাকবির উভয়টি চলমান থাকবে।”
▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬

গ্রন্থনা:
আব্দুল্লাহ আল বাকী বিন আব্দুল জলীল
ইসলামী দাওয়াহ সংস্থা, জেদ্দা, সৌদি আরব।

▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
সম্পাদনা:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।