মুনাফিকদের নিকট সবচেয়ে কষ্টকর সালাত হল, ইশা ও ফজরের সালাত

প্রশ্ন: নিম্নের হাদিসটি/আসারটি এক ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া: “ইবনে উমর (রা:) থেকে বর্ণিত: ❝আমরা যদি কাওকে ফজর আর ইশা সালাতের সময় না দেখতে পেতাম তবে তার সম্পর্কে আমরা খারাপ ধারণা পোষণ করতাম!❞ আমি জানতে চাই এটি সঠিক কি না?
উত্তর:
হ্যাঁ, উপরোক্ত আসারটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন,
كنَّا إذا فقدنا الإنسان في صلاةِ الصُّبحِ والعشاءِ ؛ أسأنا به الظَّنَّ
“যদি আমরা ফজর এবং ইশার সালাতে কাউকে না পেতাম তাহলে তার প্রতি কু ধারণা পোষণ করতাম।” [সহিহুল মাওয়ারেদ-সহিহ: শাইখ আলবানি, হা/৩৬৪]
অর্থাৎ কেউ যদি ফজর এবং ইশার সালাতে অনুপস্থিত থাকতো তাহলে সাহাবিগণ তার ইসলামের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করতেন। তাদেরকে মুনাফিক ভাবতেন। কারণ মুনাফিকদের জন্য ফরজ ও ইশার সালাত সবচেয়ে কষ্টকর।
যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ বলেছেন,
‏ “‏ إِنَّ أَثْقَلَ صَلاَةٍ عَلَى الْمُنَافِقِينَ صَلاَةُ الْعِشَاءِ وَصَلاَةُ الْفَجْرِ وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا وَلَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصَّلاَةِ فَتُقَامَ ثُمَّ آمُرَ رَجُلاً فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِي بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَى قَوْمٍ لاَ يَشْهَدُونَ الصَّلاَةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ بِالنَّارِ
“মুনাফিকদের জন্য সবচাইতে ভারী সালাত হল, ইশা ও ফজরের সালাত। তারা যদি এই দুই সালাতে কী মর্যাদা আছে জানতে পারত তবে হামাগুড়ি দিয়েও এ দুই সালাতে উপস্থিত হতো। আমি মনস্থ করেছিলাম যে, সালাতের ইকামত দিতে বলে কাউকে আদেশ করি যে, সে যেন লোকদের নিয়ে-সালাত কায়েম করে।
তারপর আমি কাঠের বোঝাসহ একদল লোক নিয়ে সেই সব লোকের ঘরে চলে যাই যারা সালাতে উপস্থিত হয় না। অতঃপর তাদের ঘর আগুন দিয়ে তাদের সহ জ্বালিয়ে দেই।”
[সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) অধ্যায়: ৫/ মসজিদ ও সালাতের মর্যাদা, পরিচ্ছেদ: ৪২. জামা’আতে সালাত আদায়ের ফযিলত, তা বর্জনকারীর প্রতি কঠোরতা]
মূলত: ইশা ও ফজরের সময়টা মানুষের বিশ্রাম গ্রহণ ও ঘুমের সময়। তারপরেও মুক্তিকামী ঈমানদারগণ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সকল ক্লান্তি ও অলসতাকে পেছনে ফেলে ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে এসময় মসজিদ উপস্থিত হন এবং জামাতের সাথে সালাত আদায় করেন। কিন্তু কপট-মুনাফিকদের দ্বারা তা সম্ভব হয় না। এটি তাদের জন্য খু্বই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
সুতরাং এখান থেকে বুঝা যায়, যারা নিয়মিত ইশা ও ফজর সালাতে অনুপস্থিত থাকে তাদের ঈমান আশঙ্কা জনক।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত-বিশেষ করে ইশা ও ফজর সালাত-মসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করার তওফিক দান করুন এবং এ ক্ষেত্রে সব ধরণের অলসতা, অবহেলা ও গাফলতি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
–আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল–