বিয়ের রাতে পাত্র-পাত্রীকে ক্ষীর, পায়েস ইত্যাদি খাওয়ানো এবং উপহার-সামগ্রী প্রদান করা

প্রশ্ন: আমাদের দেশে বিয়ের পাত্র-পাত্রীকে তাদের আত্মীয় স্বজনগণ পায়েস বা মিষ্টান্ন খাওয়ায়, তারপর তাদেরকে কিছু টাকা বা উপহার-সামগ্রী দেয়। এটা কি ইসলামে জায়েজ?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় বিয়ের আগের রাতে অথবা বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকে পাত্র-পাত্রীকে পায়েস, ক্ষীর বা বিভিন্ন মিষ্টান্ন দ্রব্য খাওয়ানোর প্রথা প্রচলিত আছে। কোন কোন এলাকার আঞ্চলিক ভাষায় এটিকে ‘থুবড়া’ বলা হয়। তারপর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবরা তাদের হাতে কিছু টাকা বা উপহার সামগ্রী দেয়। এগুলো সামাজিক প্রথা মাত্র। এর উদ্দেশ্য আনন্দ-বিনোদন করা। এটিকে হিন্দুদের ধর্মীয় প্রথা বলা সঙ্গত নয়।

সুতরাং এতে কোন আপত্তি নেই-এগুলোকে হারাম বলা যাবে না যতক্ষণ না তাতে শরিয়ত বিরুদ্ধ বা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোন কিছু ঘটে। যেমন: নন মাহরাম কর্তৃক কনের মুখে তুলে খাওয়ানো, পর্দা হীনতা, মিউজিক, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের উচ্চস্বরে গীত গাওয়া, নাচ-গান, নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে হৈ হুল্লোড় করা ইত্যাদি।

এছাড়াও আমাদের দেশের এলাকা ভেদে বিয়ের ক্ষেত্রে আরও বিভিন্ন ধরণের দেশাচার ও রীতি-নীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রতিটি দেশেই অঞ্চল ভেদে এ জাতীয় নিজস্ব কতিপয় সংস্কৃতি ও রীতি-নীতি চালু আছে। আরব দেশেও তাদের বিয়েতে যুগ যুগ ধরে চলে আসা নানা ধরণের সংস্কৃতি ও প্রথা চালু আছে। বিজ্ঞ আলেমগণ সেগুলোকে হারাম বলেননি। মোটকথা, দেশাচার, সামাজকি প্রথা ও আঞ্চলিক রীতি-নীতি ইত্যাদি ইসলামে নিষিদ্ধ বা হারাম নয় যতক্ষণ না তাতে শরিয়ত বিরুদ্ধ বা হারাম কিছু মিশ্রণ ঘটে। যদি সেগুলোতে ইসলামের নিষিদ্ধ ও হারাম কিছুর মিশ্রণ ঘটে তাহলে তখন অবশ্যই তা হারাম হবে।
এই কারণে ফকিহগণ বলেন, العادة محكمة “মানুষের রীতি-নীতি শরিয়তের বিধান সাব্যস্ত কারী হিসেবে গণ্য হবে।” (তবে শর্ত হল, তাতে শরিয়ত বিরুদ্ধ বা হারাম কোনও কিছু থাকতে পারবে না।) এই মূলনীতির ব্যাপারে ফকিহগণ সকলেই একমত। আল্লাহু আলাম।▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।