প্রশ্নোত্তরে যাকাত সংক্রান্ত ১৫টি সংক্ষিপ্ত জরুরি মাসায়েল

প্রশ্নোত্তরে যাকাত সংক্রান্ত ১৫টি সংক্ষিপ্ত জরুরি মাসায়েল
(যা প্রয়োজন হতে পারে আপনারও)
▬▬▬▬❖◯❖▬▬▬▬
নিম্নে যাকাত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া হল: وبالله التوفيق

❑ ১) প্রশ্ন: আমার কাছে ৬ ভরি সোনা এবং ২০ ভরি রূপার গহনা আছে। আমাকে কি যাকাত দিতে হবে?

উত্তর:
৬ ভরি সোনা ও ২০ ভরি রূপায় যাকাত নেই। কেননা যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সোনার নিসাব হল, সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম হওয়া আর রূপা ৫৯৫ গ্রাম হওয়া (এবং তা এক বছর অতিবাহিত হওয়া)। এর কমে যাকাত আবশ্যক নয়। আর সোনা ও রূপা যেহেতু দুটি ভিন্ন ভিন্ন বস্তু তাই দুটার মূল্যও একসাথে মিলিয়ে হিসাব করা যাবে না। যেমন: খেজুর ও কিশমিশ দুটি ভিন্ন ভিন্ন বস্তু। যাকাত দেয়ার জন্য উভয়টিকে মিলিয়ে নিসাব পূর্ণ করা যাবে না।

অবশ্য যদি আপনার আরও অন্যান্য নগদ অর্থ, ব্যাংক ব্যালেন্স বা ব্যবসায়িক পণ্য থাকে তাহলে সেগুলো উক্ত ৬ ভরি সোনা বা ২০ ভরি রূপার দামের সাথে মিলিয়ে তার সামষ্টিক মূল্য যদি সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম সোনা অথবা ৫৯৫ গ্রাম রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয় এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত হয় তাহলে তাতে ২.৫% (শতকরা আড়াই টাকা) হারে যাকাত দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, ব্যবহারের স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলঙ্কারে যাকাত আবশ্যক কি না সে বিষয়ে দ্বিমত আছে। তবে মতবিরোধ থেকে বাঁচার স্বার্থে এবং ইসলাম পঞ্চস্তম্ভের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার জন্য যাকাত দেয়াই অধিক নিরাপদ-এ কথায় কোন সন্দেহ নাই।

❑ ২) প্রশ্ন: সোনা ৮ ভরি আর ব্যাংক একাউন্টে আছে ১,৫০০০ লাখ টাকা। এতে যাকাত কিভাবে দিব?

উত্তর:
এ ক্ষেত্রে ৮ ভরি স্বর্ণের বর্তমান বিক্রয় মূল কত তা স্বর্ণের দোকান থেকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিবেন। তারপর সেটাকে ব্যাংক একাউন্টে সঞ্চিত ১,৫০০০ লাখ টাকার সাথে যুক্ত করে সেখান থেকে ২.৫% হারে যাকাত বের করবেন যদি তা এক বছর ধরে আপনার কাছে জমা থেকে থাকে।

❑ ৩) প্রশ্ন: আমি জানি, সাড়ে তিন লক্ষ টাকা এক বছর থাকলে যাকাত দিতে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, কত টাকা যাকাত দিতে হবে অর্থাৎ এক লক্ষ টাকায় কত টাকা?

উত্তর:
কারও কাছে যদি সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ অথবা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্য সমপরিমাণ টাকা এক বছর জমা তাহলে তাতে ২.৫% অর্থাৎ এক লক্ষ টাকায় ২,৫০০ টাকা যাকাত দিতে হবে।

❑ ৪) প্রশ্ন: আমি কিছু টাকা বিনিয়োগ করেছি কনফেকশনারি দোকানে। একটি ফ্রিজ, একটি কফি মেকার কিনেছি। বাকি টাকা দিয়ে অন্যান্য জিনিস কিনেছি। যেমন: মিনারেল ওয়াটার, কোল্ড ড্রিংকস, সাবান, বিস্কুট এবং আরও বিভিন্ন পণ্য। এর যাকাত কিভাবে দিব?

উত্তর:
দোকান ও দোকানের আসবাব-সামগ্রী তথা ফ্রিজ, কফি মেকার ইত্যাদি যাকাতের হিসাবে গণ্য হবে না। এগুলোতে কোন যাকাত নেই। তবে ব্যবসার পণ্য বা মালামাল তথা কোল্ড ড্রিংকস, সাবান, বিস্কুট ইত্যাদির যাকাত দিতে হবে যদি সেগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য যাকাতের নিসাব পরিমাণ তথা সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্য সমপরিমাণ হয় এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত হয়।

দোকানের মালামালে যাকাত বের করার পদ্ধতি হল, বছর শেষে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, শ্রমিকের মজুরী ও সংশ্লিষ্ট সকল খরচ বাদ দিতে হবে, কারো কাছে ঋণ নিয়ে থাকলে সেটাও বাদ দিতে হবে। তারপর দোকানে যে সকল মালামাল আছে সেগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য, নগদ অর্থ (মূল ধন ও লাভ), অন্যের নিকট পাওনা টাকা ইত্যাদি হিসেব করে যদি যাকাতের নিসাব পরিমাণ (সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্য সমপরিমাণ) হয় তাহলে সেখানে থেকে ২.৫% (শতকরা আড়াই টাকা) হারে যাকাত দিতে হবে।

❑ ৫) প্রশ্ন: দয়া করে আমার নিম্নোক্ত সম্পদে যাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দিলে উপকৃত হব:

– ব্যবসায় ইনভেস্ট করা আছে ১২ লক্ষ টাকা। (নতুন ব্যবসা-খাবার/রেস্টুরেন্ট)
– একটা দোকান আছে যার মূল্য ১০ লক্ষ টাকা। (দোকান থেকে কোন ইনকাম নাই। ছোট ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে আছে)।
– স্বর্ণ আছে ১০ ভরি (২২ ক্যারেট)।
– জমি আছে-যার ক্রয় মূল্য ৭ লক্ষ (প্রায় ৭ বছর। জমি থেকে কোন ইনকাম নেই। বর্তমান মূল্য ৫ লক্ষ)।
– ব্যাংকে সেভিংস একাউন্টে আছে প্রায় ১,৫০,০০০ টাকা।
– দেনা আছে প্রায় ৮,৮০,০০০ টাকা (ব্যবসায়িক দেনা ৩ লক্ষ)।
– পাওনা আছে প্রায় ৮০,০০০ টাকা।

‍উত্তর:

আপনার উল্লেখিত সম্পদে যাকাত নির্ণেয়ের পদ্ধতি:

● দোকানের মূল্য (দোকান ঘর, দোকানের আসবাব-পত্র, জমির দাম ইত্যাদি) বাবদ ১০ লক্ষ টাকা যাকাতের মধ্যে গণ্য হবে না। তবে বিক্রয়ের জন্য যে সকল পণ্য আছে সেগুলোর মূল্য যাকাত হিসেবে গণ্য হবে।
● জমি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য না হলে (জমি ব্যবসা না হলে) তাতে যাকাত নেই।
● ঋণ হিসেবে গৃহীত (৮, ৮০,০০০ টাকা) হিসাব থেকে বাদ দিতে হবে। এতে যাকাত নেই।
● পাওনা টাকা (৮০,০০০ টাকা) হিসেবের মধ্যে ধরতে হবে। [উল্লেখ্য যে, যদি পাওনাদারের নিকট থেকে পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে তাহলে তার যাকাত দিতে হবে আর যদি ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয় তাহলে ইচ্ছা করলে যখন তা হস্তগত হবে তখন পেছনের বছরগুলোর একসাথে যাকাত আদায় করতে হবে।)
● ১০ ভরি স্বর্ণের বর্তমান বাজার দর হিসাব করতে হবে।
তারপর সব যোগ-বিয়োগ করে বছরান্তে জমা কৃত সম্পদের পরিমাণ যদি যাকাতের নিসাব তথা সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্য সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে সেখানে থেকে ২.৫% (শতকরা আড়াই টাকা) হারে যাকাত দিতে হবে।

❑ ৬) প্রশ্ন: অনেকে বলে থাকে, যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে সোনা বা রূপার বিক্রয় মূল্য নয়; ক্রয়মূল্যের উপর ধরতে হবে। এ সম্পর্কে একটু খোলাসা করে বুঝিয়ে বলবেন।

উত্তর:
ক্রয় কৃত নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ-রৌপ্যের উপর এক বছর অতিবাহিত হলে যে দিন বছর পূর্ণ হবে সে দিনকার বাজার দর (অর্থাৎ উক্ত স্বর্ণের বাজার দর) হিসাব করে ২.৫০% হারে যাকাত দিতে হবে।

❑ ৭) প্রশ্ন: আমার বন্ধু একটি দোকান কিনে ভাড়া দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব কি হবে এবং তা কিভাবে নির্ধারণ করতে হবে?

উত্তর:
কেবল দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া অথবা এর পাশাপাশি যদি তার নিকট অন্যান্য গচ্ছিত নগদ অর্থ, ব্যাংক ব্যালেন্স, স্বর্ণ-রৌপ্য ইত্যাদি সম্পদ থাকে তাহলে সেগুলো জমা করে যদি তা সর্বনিম্ন ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ রৌপ্যের মূল্যের সমপরিমাণ হয় এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত হয় তাহলে সেখান থেকে ২.৫% (শতকরা আড়াই টাকা) হারে যাকাত দিতে হবে।

❑ ৮) যাকাতের টাকা কি দান-সদকার মত গোপনে করতে হয় নাকি প্রকাশ্যেও করা যায়? উদ্দেশ্য অনেক বিত্তবান আছেন যারা যাকাত দেন না তাদেরকে উৎসাহিত করা।

উত্তর: যাকাত ও দান-সকদা গোপনে দেয়া উত্তম। কেননা গোপন দান অন্তরে রিয়া (লোক দেখানো মনোভাব) সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকার একটি কারণ। তবে যদি নিয়ত থাকে যে, আপনার দেখাদেখি অন্যরা উৎসাহিত হবে বা দানের ক্ষেত্রে লোকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে তাহলে এ উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে যাকাত বা সাধারণ দান-সদকা করা জায়েজ আছে। কেননা এখানে নিয়তটাই মুখ্য। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ইন্নামাল আমালু বিন্নিয়্যাত- “নিয়তের উপর সকল আমল নির্ভরশীল।” (সহিহ বুখারী)

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কখনো সাহাবীদেরকে প্রকাশ্যে দান-সকদা করার জন্য আহ্বান করেছেন। আর তখন সাহাবীগণ দানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করেছেন। আলহামদু লিল্লাহ।

❑ ৯) প্রশ্ন: মা, বাবা কি ছেলের বা মেয়ের দেওয়া যাকাত নিতে পারবে?
উত্তর:
এমন গরিব-অসহায় আত্মীয়-স্বজনকে যাকাত দেয়া জায়েজ যাদের ভরণ -পোষণ দেয়া আপনার জন্য ফরয নয়। যেমন: পিতা, মাতা, স্ত্রী প্রমুখকে যাকাত দেয়া যাবে না। কেননা তাদের ভরণ-পোষণ দেয়া ফরয।
কিন্তু ভাই, বিবাহিত বোন, চাচা, চাচী, ফুফা, খালু, মামা ইত্যাদি ব্যক্তিদেরকে যাকাত দেয়া যাবে যদি তারা যাকাত পাওয়ার হকদার হয়। এমন কি স্ত্রী যদি ধনী হয় আর স্বামী যদি গরিব হয় তাহলে স্ত্রী তার স্বামীকে যাকাত দিতে পারে। কেননা, স্বামীর ভরণ-পোষণ দেয়া স্ত্রীর জন্য ফরজ নয়।
আল্লাহু আলাম।

❑ ১০) প্রশ্ন: নিজের বিবাহিতা মেয়ে বা বোনকে যাকাত দেওয়া যাবে কি?

উত্তর:
হ্যাঁ, বিবাহিতা মেয়ে বা বোনকে যাকাত দেয়া জায়েজ আছে। কেননা ইসলামের দৃষ্টিতে এমন গরিব-অসহায় ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া জায়েজ যাদের ভরণ-পোষণ দেয়া যাকাত দাতার জন্য ফরয নয়। সুতরাং যে মেয়ে ও বোনের বিয়ে হয়েছে তারা যদি গরিব হয় তাহলে তাদেরকে যাকাত দেয়া জায়েজ আছে। অনুরূপভাবে চাচা, চাচী, ফুফা, খালু, মামা ইত্যাদি ব্যক্তিদেরকে যাকাত দেয়া যাবে যদি তারা যাকাত পাওয়ার হকদার হয়।

এমন কি স্ত্রী যদি সম্পদশালী হয় আর স্বামী ঋণগ্রস্ত হয় আর আর্থিক সংকটে ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয় তাহলে তাহলে স্ত্রী তার স্বামীকে যাকাতের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পারে। শরিয়তে এতে কোনও বাধা নেই। কেননা, স্বামীর ভরণ-পোষণ দেয়া স্ত্রীর জন্য ফরয নয়।

❑ ১১) প্রশ্ন: আমার যে পরিমাণ যাকাত আসবে তা আমার এক নিকটাত্মীয়কে দিতে চাই। কারণ সে খুব সমস্যায় আছে। কিন্তু আমি যদি তাকে যাকাতের টাকা উল্লেখ না করে দেই তাহলে আমার যাকাত আদায় হবে কি?

উত্তর:
আপনার উক্ত আত্মীয় যদি যাকাত পাওয়ার হকদার হয় তাহলে তার হাতে যাকাত পৌঁছানো হলে তা আদায় হয়ে যাবে। যাকাত শুদ্ধ হওয়ার জন্য তাকে জানিয়ে দেওয়া আবশ্যক নয়। কিন্তু যদি কারো ব্যাপারে জানা যায় যে, সে সাধারণত যাকাতের অর্থ গ্রহণ করে না তাহলে তাকে না জানিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বরং তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতে হবে যে, এটা যাকাতের টাকা। তারপর সে ইচ্ছে করলে গ্রহণ করবে অথবা করবে না।

❑ ১২) প্রশ্ন: যাকাত সাধারণত কোন সময় দেওয়া উত্তম? আমি শুনেছি রমজান মাসে। এটা কতটা সত্য?

উত্তর:
যাকাত দেয়ার উত্তম সময় হল, যাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদের উপর যে দিন বছর পূর্ণ হবে সে দিন দেয়া। বিলম্ব না করা।
অবশ্য, অনেকেই রমাযানে বছর পূর্তির হিসাব করে যাকাত দেয়। কারণ এ সময় চারদিকে ঈমানি পরিবেশ বিরাজ করে এবং মানুষের মত নরম থাকে। কিন্তু রমাযানে যাকাত দেয়া উত্তম এমনটি কুরআন-হাদিসে বলা হয় নি।

❑ ১৩) প্রশ্ন: যাকাতের টাকা প্রাণী কল্যাণে ব্যবহার করা যাবে কি? যেমন: ছিন্নমূল কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি।

উত্তর:
সূরা তওবার ৬০ আয়াতে মহান আল্লাহ যাকাত খরচের ৮টি খাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নাই। সুতরাং কুকুর-বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী কল্যাণে যাকাতের অর্থ খরচ করা বৈধ নয়।

❑ ১৪) প্রশ্ন: যাকাতের টাকা দিয়ে একজন গরিবকে যদি অটোরিকশা কিনে দেয়া হয় তাহলে কি যাকাত আদায় হবে?

উত্তর:
সবচেয়ে উত্তম হল, গরীব-অসহায় মানুষকে সরাসরি যাকাতের টাকা দেয়া-যেন সে ইচ্ছে মত তার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। কিন্তু যদি আশঙ্কা হয় যে, তার হাতে টাকা দিলে সে তা অন্যায় বা অপ্রয়োজনীয় কাজে খরচ করবে তাহলে তাকে তার প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করার দেওয়া জায়েজ আছে।
সুতরাং গরিব মানুষকে যাকাতের টাকা দিয়ে রিক্সা কিনে দিতে চাইলে আগে সাথে কথা বলে নেয়া উচিৎ। সে যদি তাতে সম্মত হয় তাহলে কিনে দিবেন অন্যথায় সরাসরি তার হাতে টাকা দিবেন যেন সে ইচ্ছামত তার অভাব পূরণ করতে পারে। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।

❑ ১৫) প্রশ্ন: যাকাতের টাকা দিয়ে কি গরিব মানুষকে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে দেয়া যাবে? যেমন: কোন সংগঠন বা জনকল্যাণ সংস্থাকে যাকাতের টাকার কিছু অংশ দিয়ে দিলে সংগঠন যদি ঐ টাকা দিয়ে এই দুর্যোগের সময় খাদ্য ক্রয় করে গরিব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয় তাহলে কি যাকাত দাতার যাকাত আদায় হয়ে যাবে যে অংশ সে দিয়াছে?

উত্তর:
ফসল ও গবাদি পশু ছাড়া অন্যান্য সম্পদ (টাকা, স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্যবসায়িক পণ্য ইত্যাদি) এর যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে টাকা দেওয়াই সবচেয়ে উত্তম-যেন গরীব-অসহায় মানুষ তাদের প্রয়োজন মতো খরচ করতে পারে। কিন্তু যদি দুর্যোগ বা বিশেষ পরিস্থিতিতে তাদের হাতে টাকা দেওয়ার চেয়ে খাদ্য, বস্ত্র, ঔষধ, বাসস্থান ও ঘর নির্মাণ ইত্যাদির বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে তাদেরকে সেগুলো ক্রয় করে দেওয়া জায়েজ রয়েছে ইনশাআল্লাহ।

এ কাজটি যাকাত দাতা সরাসরি নিজে করতে পারে অথবা অন্য কোন বিশ্বস্ত ব্যক্তি, সংগঠন বা জনকল্যাণমুখী সংস্থার মাধ্যমেও করতে পারে। এতে ইনশাআল্লাহ কোন সমস্যা নেই। তবে যাকাত পাওয়ার হকদার ব্যক্তিগণ সঠিকভাবে পাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।
আল্লাহ তৌফিক দান করুন। আমিন

আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬❖◯❖▬▬▬▬
সংকলনে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।