নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে এ কথার ব্যাখ্যা

প্রশ্ন: অনেক মানুষ আছে যারা নামায পড়েও মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে, অন্যের ক্ষতি করে বা নানা পাপাচার করে। তখন যদি কেউ তাকে বলে যে, “নামায মানুষকে ভালো করতে পারে না” বা “নামায পড়লেই মানুষ ভালো হয় না” ইত্যাদি। এ জাতীয় কথা বললে কি গুনাহ হবে? আর “নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে।” এ কথার অর্থ কি?

উত্তর:
“নামায মানুষকে ভালো করতে পারে না” বা “নামায পড়লেই মানুষ ভালো হয় না”-এ জাতীয় কথা নি:সন্দেহে ঈমানের জন্য ধ্বংসাত্মক। কেননা, আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন,
إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ
“নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে।” [সূরা আনকাবুত: ৪৫]

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট আগমন করে অভিযোগ করল,
إنَّ فُلانًا يصلِّي باللَّيلِ فإذا أصبحَ سرقَ ، فقالَ : إنَّهُ سينْهاهُ ما تقولُ
“অমুক লোক রাতে নামায পড়ে আর ভোর হলে চুরি করে।” তখন তিনি বললেন, “তুমি যা বলছ সলাত তাকে সেটা থেকে (চুরি করা থেকে) বিরত রাখবে।”
[সিলসিলা সহীহাহ, তাহকীক মিশকাত, সহীহ-আলবানী রহ.]
একজন ব্যক্তি যথাযথভাবে সালাত আদায় করলে, মসজিদে যাতায়াত অব্যাহত রাখলে তাহলে অবশ্যই সালাত তাকে সংশোধন করবে, তার মধ্যে পরিবর্তন ঘটাবে-এ জন্য হয়ত কিছুটা সময় লাগবে। কেননা, আল্লাহ এবং তার রাসুলের কথা মিথ্যা হওয়া অসম্ভব।
কেউ নামাযি হওয়ার পরও সংশোধন না হলে বুঝতে হবে সে, তার নামাযে সমস্যা আছে। সে নামাযের প্রতি যথার্থ আনুগত্যশীল নয় বা যে ধরণের মন-মানসিকতা নিয়ে সালাত আদায় করার দরকার তার মধ্যে সেটা অনুপস্থিত….।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. বলেন,
” لاَ تَنْفَعُ الصَّلاَةُ إِلاَّ مَنْ أَطَاعَهَا ” ثُمَّ قَرَأَ عَبْدُ اللهِ : إنَّ الصَّلاَةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
সালাত তার কোনই উপকারে আসবে না যে সালাতের প্রতি আনুগত্যশীল না হবে। তারপর তিনি কুরআনের এই আয়াতটি পাঠ করলেন,
إنَّ الصَّلاَةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
“নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আনকাবুত: ৪৫)
[ইবনে আবী শায়বা, সনদ হাসান]
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, KSA.