দাওয়াতী কাজ সকল মুসলিমের জন্য ফরজ এবং সাধারণ মানুষদের দাওয়াতী কাজের কতিপয় পদ্ধতি

প্রশ্ন: সৎকাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ কি সবার উপরে ফরজ? যাদের দ্বীনের জ্ঞান নেই যেমন জেনারেল লাইনে পড়া মানুষ কিন্তু দ্বীন জানার চেষ্টা করে, শাইখদের লেকচার শুনে তারা কিভাবে দাওয়াত দিবে? দাওয়াতের আওতাভুক্ত জিনিসগুলো জানতে চাচ্ছি। তারা যদি দাওয়াহ না দেয় অসৎ কাজ দেখেও, যেহেতু এই বিষয়ে সে নিজে জ্ঞান অর্জন করেনি বরং শাইখদের কাছ থেকে শুনেছে তাহলে কি গুনাহ হবে?

উত্তর:
 *দাওয়াতী কাজের গুরুত্ব:*
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দ্বীন প্রচার করা আবশ্যক। প্রত্যেকেই তার জ্ঞান, যোগ্যতা ও সাধ্যানুযায়ী দ্বীন প্রচারে অংশ গ্রহণ করবেন। দ্বীন প্রচার করার জন্য আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন এবং এ জন্য অগণিত সোয়াবের কথা কুরআন-হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন:
🔰 “তোমার রবের পথে ডাক হেকমত এবং উত্তম উপদেশের মধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সবোর্ত্তম পন্থায়।” (আন নাহাল: ১২৫)
🔰 রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও।” (সুনান তিরমিযী, সহীহ)
🔰 আল্লাহর দ্বীনকে প্রচার করার মর্যাদা অনেক বেশি। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত, তার কথার চেয়েউত্তম কথা আর কার হতে পারে??” (হা মীম সাজদাহ: ৩৩)
🔰 “তোমার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা যদি একটি মানুষকেও হেদায়াত দেন তবে তা তোমার জন্য অনেক লাল উঁট পাওয়া থেকে উত্তম।” (সহীহ বুখারী)
🔰 “যে ব্যক্তি মানুষকে হেদায়েতের দিকে আহবান করে সে ব্যক্তি ওই সকল লোকের মতই সোয়াবের অধিকারী হয় যারা তা অনুসরণ করে। কিন্তু যারা অনুসরণ করে তাদের সোওয়াবের কোন ঘাটতি হবে না।” (সহীহ মুসলিম)

 *দাওয়াতী কাজ থেকে পিছপা থাকলে গুনাহগার হতে হবে:*

উপরের আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে, প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তি তার সাধ্য অনুযায়ী দাওয়াতী কাজ এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধ’ এর জন্য নির্দেশিত। সাধ্য থাকার পরও কেউ যদি এ দায়িত্ব পালন না করে তাহলে সেগুনাহগার হবে।

 *সাধারণ মানুষ কোথায় কিভাবে দাওয়াতী কাজ করবে?*

– এ ক্ষেত্রে একজন সাধারণ মানুষ তার অর্থ দ্বারা দ্বীনের কাজে সাহায্য করবে।
– সে দাওয়াতী কাজে শ্রম ব্যয় করবে।
– একজন গৃহিনীর সবচেয়ে বড় দাওয়াতী ক্ষেত্র হল তার পরিবার।
– একজন শিক্ষক/ শিক্ষিকার তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
– একজন ডাক্তারের তার চিকৎসালয়।
– একজন ছাত্র/ছাত্রীর তার ক্লাসের সহপাঠি এবং বন্ধু।
– একজন মানুষ তার কর্মক্ষেত্রে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করবে। এটাও তার দাওয়াতী কাজের অংশ। কেননা, দ্বীনদার ব্যক্তির সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, আন্তরিকতা ইত্যাদি মানুষকে দ্বীন পালনের প্রতি আগ্রহী করে তোলবে। পক্ষান্তরে তার খারাপ আচরণ ও অন্যায়-অপকর্মের কারণে মানুষের মাঝে ইসলামের প্রতি খারাপ মনোভাব সৃষ্টি করবে।
এভাবে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজেদের সাধ্য ও সমর্থ অনুযায়ী এই দায়িত্ব পালন করবে। আল্লাহু আলাম।
👉 পদ্ধতিগুলো বিস্তারিত পড়ুন: ‘আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক’: ইসলাম প্রচারের ৭২টি পদ্ধতি
https://salafibd.wordpress.com/2012/01/01/islam-dawah/
▬▬▬✪✪✪▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব