জীবন পরিবর্তন করার মত ১৩০টি জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা

জীবন পরিবর্তন করার মত ১৩০টি ‘জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
মানুষ জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে এবং বহু আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভর্তি করে। পড়াশোনা ও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে তার হৃদয় আলোকিত ও সমৃদ্ধ হয়। পরিপক্ব হয় তার বুদ্ধি ও বিবেক। এই দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতার ফলাফল হল, জ্ঞানীদের প্রজ্ঞা পূর্ণ বিভিন্ন উক্তি ও প্রবচন। এগুলো আমাদের জীবনের জন্য অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, জ্ঞানী ও অভিজ্ঞজনদের জ্ঞান ও উপদেশ পূর্ণ কথা আমাদের জীবন চলার পথকে সহজ করে দেয় এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে।

নিম্নে এ জাতীয় ১৩০টি প্রজ্ঞা পূর্ণ উক্তি এবং জ্ঞানের কথা উপস্থাপন করা হল:

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-১

১. ভুল করা দোষের কথা নয় বরং ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা দূষণীয়।
২. জ্ঞানী মূর্খকে চিনতে পারে। কেননা সে জ্ঞানী। পক্ষান্তরে মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না। কেননা সে মূর্খ।
৩. বন্ধুত্ব একটি ছাতার ন্যায়। বৃষ্টি যতই প্রবল হয় ছাতার ততই প্রয়োজন পড়ে।
৪. পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার কথা নয়। বরং যথা সময়ে উঠে না দাঁড়ানোই লজ্জার ব্যাপার।
৫. বুদ্ধির সীমা আছে কিন্তু বোকামির কোন সীমা নেই।
৬. মানুষের সাথে বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না। কারণ, বন্ধুত্ব স্থাপনই অর্থ উপার্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৭. মানুষের সাথে সে রূপ আচরণ কর যেমন তারা পছন্দ করে। নিজের পছন্দ মাফিক আচরণ কর না।
৮. তর্কে জেতা বুদ্ধিমানের কাজ নয় বরং বুদ্ধিমানের কাজ হল, তর্কে না জড়ানো।
৯. আহাম্মকের সাথে তর্ক কর না। কারণ, মানুষ হয়ত দুজনের মাঝে পার্থক্য করতে ভুল করবে।
১০. তোমার স্ত্রীর রুচি বোধকে অবমূল্যায়ন কর না। কারণ, সে তোমাকে প্রথম পছন্দ করেছে।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-২

১১. যারা ব্যর্থতার মুখোমুখি হওয়ার সাহস রাখে তারাই কষ্টকে জয় করে এবং সফল হয়।
১২. তোমার পিঠে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত চড়তে পারবে না যতক্ষণ না তুমি পিঠ নিচু কর।
১৩. তুমি যতটা মূল্যবান ততটা সমালোচনার পাত্র হবে।
১৪. যে অধিকার আদায়ের পেছনে চেষ্টা চালানো হয় তা কখনই বৃথা যায় না।
১৫. ইমাম মুসলিম রাহ. বলেন, “শরীরকে আরামে রেখে জ্ঞানার্জন করা সম্ভব নয়।”
১৬. বেলাল বিন সাদ রাহ. বলেন, “পাপ ছোট কি না তা দেখ না বরং দেখ যার অবাধ্যতা করছ তিনি কত বড়।
১৭. রাফেঈ বলেন, “যদি তুমি দুনিয়াকে নতুন কিছু উপহার দিতে না পার তবে তুমি দুনিয়ার একটি বোঝা।”
১৮. মিসরীয় সাহিত্যিক আব্বাস মাহমুদ আক্কাদ বলেন, “তিনটি ভাল বই একবার করে পড়ার চেয়ে একটি ভাল বই তিনবার পড়া বেশি উপকারী।”
১৯. পৃথিবীটা লবণাক্ত পানির মত। যতই তা পান করবে পিপাসা ততই বাড়বে।
২০. তুমি পাহাড়ের চূড়ার মত হইয়ো না। কারণ, এতে তুমি মানুষকে ছোট দেখবে আর মানুষও তোমাকে ছোট দেখবে।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৩

২১. চিরকাল অন্ধকারকে গালমন্দ না করে ছোট্ট একটি বাতি জ্বালানো অনেক ভালো।
২২. সব কিছু জানা তোমার জন্য আবশ্যক নয়। কিন্তু যা কিছু বলছ তার সবটুকু সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
২৩. কুপে থুথু ফেল না। কারণ, হয়ত কখনো তোমার এ কুপ থেকে পানি পান করার প্রয়োজন হতে পারে।
২৪. গাছ থেকে যখন আপেল পড়ল তখন সবাই বলল, গাছ থেকে আপেল পড়েছে। কিন্তু সব মানুষের মধ্যে এক ব্যক্তিই শুধু জানতে চাইল কেন আপেলটি পড়েছে? (আর তার মাধ্যমেই আবিষ্কৃত হল মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।)
২৫. জীবন চলার পথে পড়ে আছে অসংখ্য পাথর। এতে তোমার চলার পথ যেন থেমে না যায়। বরং পাথরগুলো কুড়িয়ে তৈরি কর সাফল্যের সিঁড়ি।
২৬. যে হিংসা করে সে সবার আগে নিজের ক্ষতি করে।
২৭. আত্মতৃপ্তিতে ভোগা সংকীর্ণ জ্ঞানের পরিচয়।
২৮. যে অল্পতে তুষ্ট থাকে তার কাছে এ পৃথিবীর সব কষ্ট সহজ হয়ে যায়।
২৯. যদি নিজে নিজের বিবেককে বড় মনে কর তবে শত্রু সৃষ্টি হবে আর যদি হৃদয়কে বড় কর তবে বন্ধু বৃদ্ধি হবে।
৩০. যার ভুল হয় সে মানুষ আর যে ভুলের উপর স্থির থাকে সে শয়তান।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৪

৩১. বাকপটু ও নির্বোধের সাথে তর্কে যেও না। কারণ, বাকপটু তোমাকে কথায় পরাজিত করবে আর নির্বোধ তোমাকে কষ্ট দিবে।
৩২. যদি তুমি তোমার বন্ধুর সব কাজের সমালোচনা কর তবে এমন একটা সময় আসবে যখন সমালোচনা করার মত আর কোন বন্ধু খুঁজে পাবে না।
৩৩. শুধু জ্ঞান তোমার কোন কাজ দেবে না যদি না তুমি চরিত্রের মুকুট মাথায় পরিধান কর।
৩৪. অস্ত্রের আঘাত শুকিয়ে যায় কিন্তু কথার আঘাত শুকায় না।
৩৫. হাতে একটা চড়ুই পাখি থাকা গাছে দশটি থাকার চেয়ে ভাল।
৩৬. যদি চাও যে তোমার আদেশ পালন করা হোক তবে এমন আদেশ দাও যা করা সম্ভব।
৩৭. বক্তব্যে যদি অল্প কথায় ভাব ফুটিয়ে তুলতে সম্ভব হয় তবে সেটাই শ্রেষ্ঠ বক্তব্য।
৩৮. মানুষের সাথে কথা বল তাদের বুঝার ক্ষমতা অনুযায়ী।
৩৯. জ্ঞান যতই গভীর হয় কথা ততই হ্রাস পায়।
৪০. খারাপ বন্ধুর চেয়ে একা থাকা অনেক ভাল।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৫

৪১. মিথ্যার দাপট ক্ষণস্থায়ী কিন্তু সত্যের দাপট চিরস্থায়ী।
৪২. সম্পদ আসে কচ্ছপের মত আর যায় হরিণের মত।
৪৩. নির্বোধের কথার উত্তর না দেয়াই তার উত্তর।
৪৪. চরিত্রের কারণেই অনেক সম্মানিত ব্যক্তি সম্মান হারিয়েছে আবার অনেক নগণ্য ব্যক্তি কুঁড়িয়েছে বিরাট সম্মান।
৪৫. কোন ঘুমন্ত লোকের নিকট বসে না থাকা আর কোন ঘুমন্ত লোকের পাশে না ঘুমানো ভদ্রতার ব্যাপার।
৪৬. যে কাউকে বিশ্বাস করে না তাকে কেউ বিশ্বাস করে না।
৪৭. কোন মানুষকে সম্মান করা তার হৃদয়ের মনি কোঠায় প্রবেশের চাবির সমতুল্য।
৪৮. কোন জিনিসই অতিরিক্ত হওয়া ভালো নয় দুটি জিনিস ছাড়া। এক: জ্ঞান, দুই: ভদ্রতা।
৪৯. বিপদে হা-হুতাশ করা আরেকটি বিপদ।
৫০. জ্ঞানীর সম্পদ হল তার জ্ঞান আর মূর্খের সম্পদ হল তার অর্থ।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৬

৫১. যদি বাঘের দাঁত বের হয়ে থাকতে দেখ তবে মনে কর না যে, সে হাসছে।
৫২. জ্ঞানী আগে চিন্তা করে পরে কথা বলে আর নির্বোধ আগে কথা বলে পরে চিন্তা করে।
৫৩. যে অন্যের বিপদাপদ দেখে তার নিকট নিজের বিপদ তুচ্ছ হয়ে যায়।
৫৪. যার গোপনীয়তা প্রকাশ পেয়ে যায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সংখ্যা বেড়ে যায়।
৫৫. প্রকৃত বন্ধুরা তারকার মত। তারকা সব সময় দেখা যায় না কিন্তু সেগুলো আকাশেই থাকে।
৫৬. ঘোড়াকে জোর করে পানিতে টেনে নেয়া সম্ভব। কিন্তু তাকে জোর করে পানি পান করানো সম্ভব নয়।
৫৭. ঝাড়ুদারের পেশা হল, আবর্জনা পরিষ্কার করা। আর যারা তাদেরকে ঘৃণা করে তাদের পেশা হল: নোংরা ও আবর্জনা সৃষ্টি করা।
৫৮. ব্যর্থ মানুষেরা দু প্রকার। এক প্রকার হল, যারা কাজের চিন্তা করেছে কিন্তু কাজ করে নি। আরেক প্রকার হল, যারা কাজ করেছে কিন্তু চিন্তা করে তা করে নি।
৫৯. কথা বলার আগে বিষয় নির্বাচন কর। আর বিষয় নির্বাচনে পর্যাপ্ত সময় নাও, যাতে তা পরিপক্ব হয়। কারণ, মানুষের কথাগুলো ফলের মত। সেগুলো পরিপক্ব হতে পর্যাপ্ত সময়ের প্রয়োজন।
৬০. ছোট-খাট বিষয়ে বিতর্ক করলে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। কারণ, আমাদের মাঝে এমন অনেক লোক আছে যারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের চেয়ে ছোট-খাট বিষয়গুলো সম্পর্কে বেশি জ্ঞান রাখে।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৭

৬১. মানুষ যখন কারো প্রশংসা করে তখন খুব কম লোকেই তা বিশ্বাস করে। কিন্তু যখন কিনা কারো বদনাম করা হয় তখন প্রায় সবাই তা বিশ্বাস করে।
৬২. যখন অনেক উঁচু স্তরে পৌঁছে যাও তখন নিচের দিকে তাকাও যেন দেখতে পাও কারা তোমাকে এ পর্যায়ে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। আর আকাশের দিকে তাকাও যেন আল্লাহ তোমার পদযুগল স্থির রাখেন। অর্থাৎ যেন আল্লাহ তোমার এ মর্যাদা ধরে রাখেন।
৬৩. যখন হতাশা জীবনকে ঘিরে ফেলে তখন হতাশার সাগরে আশার সেতু রচনা কর, জীবন হয়ে উঠবে সুন্দর।
৬৪. মানুষ (তোমার কথায় বিরক্ত হয়ে) তাদের কান বন্ধ করার আগে তুমি নিজের মুখ বন্ধ কর আর মানুষ (তোমার বিরুদ্ধে) মুখ খোলার আগে নিজের কান খোল। তবেই তুমি সফল মানুষ হবে।
৬৫. যে ব্যক্তি দ্বিমুখী নীতি নিয়ে জীবন যাপন করে সে ব্যক্তি যখন মারা যায় তার কোন নীতিই থাকে না।
৬৬. রাগ অবস্থায় যদি কথা বল তবে এমন কথা বলে ফেলতে পর যার জন্য তুমি সারা জীবন লজ্জিত থাকবে।
৬৭. সচ্চরিত্র মানুষের অনেক খারাপ দিককে ঢেকে দেয় যেমন অসৎ চরিত্র অনেক ভালো দিককে ঢেকে দেয়।
৬৮. তোমার শক্তিমত্তা যখন তোমাকে অন্যায়-অবিচারের দিকে আহবান করে তখন আল্লাহর শক্তিমত্তার কথা স্মরণ কর।
৬৯. নীতি হীন মানুষ কাঁটা হীন ঘড়ির মত।
৭০. মানুষের অস্থির ধমনীকে শান্ত করার জন্য উপযুক্ত সময়ে একটি সুন্দর কথা বলার চেয়ে কার্যকরী কোন চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয় নি।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৮

৭১. সততা একটি ছোট গাছের মত। সেটি লাগানোর পর পরিচর্যা নেয়া প্রয়োজন, যেন তা শক্ত হয় ও বৃদ্ধি পায়।
৭২. নম্রতার মাধ্যমে যা অর্জন করা যায় কঠোরতা মাধ্যমে তা অর্জন করা যায় না।
৭৩. বেশি কৌতুক করলে ব্যক্তিত্ব চলে যায় আর বেশি হাসলে প্রভাব ক্ষুণ্ণ হয়।
৭৪. পৃথিবীতে যত পাত্র আছে তাতে কিছু রাখা হলে তার স্থান ছোট হয়ে আসে। তবে জ্ঞানের পাত্র এর ব্যতিক্রম। এতে যতই জ্ঞান ঢালা হয় ততই তা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৭৫. মূর্খতার মত দরিদ্রতা আর জ্ঞানের মত সম্পদ কিছু নেই।
৭৬. লোকমান হাকিম রাহ. বলেন, “মানুষ যখন গর্ব করে সুন্দরভাবে কথা বলার মাধ্যমে; তুমি তখন গর্ব কর নীরবতা সহকারে অন্যের কথা সুন্দরভাবে শোনার মাধ্যমে।”
৭৭. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুকাফ্ফা বলেন, তুমি যদি করো উপকার কর তবে সাবধান! কখনো তা তার কাছে উল্লেখ কর না। আর কেউ যদি তোমার উপকার করে তবে সাবধান! কখনো তা ভুলে যেও না।
৭৮. তিনি আরও বলেন, যা কিছু শোন সেগুলো থেকে সব চেয়ে ভালো কথাগুলো লিখে রাখ। আর যা কিছু লেখ সেগুলো থেকে সব চেয়ে ভালোকথাগুলো সংরক্ষণ কর আর যা কিছু শোন সেগুলো থেকে চেয়ে ভালো কথাগুলো মানুষকে বল।
৭৯. যে ব্যক্তি কাউকে গোপনে উপদেশ দিল সে তাকে খুশি ও সুশোভিত করল আর যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে কাউকে উপদেশ দিল সে যেন তাকে লাঞ্ছিত ও কলঙ্কিত করল।
৮০. জনৈক জ্ঞানী বলেন, সব কিছুই ছোট আকারে শুরু হয় পাপ ছাড়া। কারণ, কেউ বড় পাপ করতে শুরু করলে আস্তে আস্তে তা তার নিকট ছোট মনে হয়। আর কোন কিছু অতিরিক্ত হলে তার মূল্য কমে যায় আদব বা ভদ্রতা ছাড়া। কারণ, আদব যতই বৃদ্ধি পায় তার মূল্য ততই বেড়ে যায়।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-৯

৮১. জনৈক জ্ঞানী ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কোথা থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন? তিনি বললেন, অন্ধের কাছ থেকে। কারণ, সে মাটিতে পা ফেলে না লাঠি দ্বারা তা ভালভাবে পরীক্ষা না করে।
৮২. জনৈক দার্শনিক বলেন, মানুষ তিন প্রকার। একশ্রেণীর মানুষ হল, খাদ্যের মত যাদের দরকার হয় সবসময়। আরেক শ্রেণীর মানুষ হল, ওষুধের মত যাদের দরকার হয় মাঝে মাঝে। আরেক শ্রেণীর মানুষ হল রোগের মত যা আপনার কখনোই দরকার হয় না।
৮৩. পানি গর্ত সৃষ্টি করে। কিন্তু তা শক্তি দিয়ে নয় বরং অব্যাহত পতনের মাধ্যমে।
৮৪. কথা যদি অন্তর থেকে বের হয় তবে তা অন্তরে প্রবেশ করে। কিন্তু তা যদি শুধু মুখ থেকে বের হয় তা কান অতিক্রম করে না।
৮৫. ফুল থেকে শিক্ষা নাও প্রফুল্লতা, ঘুঘু থেকে শিক্ষা নাও নম্রতা, মৌমাছি থেকে শিক্ষা নাও শৃঙ্খলা, পিপীলিকা থেকে শিক্ষা নাও কাজ আর মোরগ থেকে শিক্ষা নাও খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা।
৮৬. পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে আপনার চেয়েও কষ্টে আছে। অত:এব, হাসি-খুশি থাকুন।
৮৭. মুচকি হাসি হল, শব্দ বিহীন কথা।
৮৮. তোমার স্ত্রীর রুচি বোধের ত্রুটি ধর না। কারণ, তুমি তার প্রথম পছন্দ।
৮৯. যে ব্যক্তি এক সাথে দুটি শিকার ধরার জন্য ছুটবে সে দুটিই হারাবে।
৯০. এক হাতে দুটি তরমুজ নেওয়া যায় না।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-১০

৯১. পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ হল, ব্যর্থ হওয়ার পরিকল্পনা করা।
৯২. মানুষের হৃদয় জয় করতে চাইলে তাদের উপকার কর।
৯৩. জ্ঞান যখন পরিপক্ব হয় কথা তখন হ্রাস পায়।
৯৪. যে অল্পে তুষ্ট থাকে সে সম্মান পায় আর যে অতি লোভ করে সে লাঞ্ছিত হয়।
৯৫. অন্ধকারকে সারা জীবন গালাগালি না করে ছোট্ট একটি মোমবাতি জ্বালানো অনেক ভালো।
৯৬. বড় বড় উপাধি নির্বোধদের প্রত্যাশার জিনিস পক্ষান্তরে মহান ব্যক্তিদের নাম ছাড়া অন্য কিছুই দরকার নাই।
৯৭. তোমার প্রকৃত বন্ধু সেই ব্যক্তি যে তোমার ভুলগুলোকে স্পষ্ট ভাষায় তোমাকে জানায়। সে ব্যক্তি নয় যে তোমাকে খুশি করতে তোমার ভুলগুলোকে সঠিক বলে তোমার সামনে তুলে ধরে।
৯৮. মৃদু হাসি ভাষাহীন বক্তব্য।
৯৯. সুন্দর কথা মানুষের হৃদয়ে পৌঁছার পাসপোর্ট।
১০০. অহংকার যখন বেড়ে যায় জীবনের আনন্দ তখন লোপ পায়।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-১১

১০১. তোমার শত্রুও যদি পরামর্শ চায় তবে তাকে ভালো পরামর্শ দাও। কারণ, তোমার পরামর্শে হয়ত সে তোমার বন্ধুতে পরিণত হবে।
১০২. ধৈর্য ধর, শক্ত হও আর মনে রেখ, সময় সর্বদা এক অবস্থায় থাকে না।
১০৩. শিশুকালে শিক্ষা দেওয়া পাথরে খোদাই করার মত।
১০৪. সবচেয়ে বড় মিথ্যুক সে ব্যক্তি যে নিজের সম্পর্কে বেশী বলে।

১০৫. ইমাম শাফেয়ী:
“প্রকৃত শিক্ষা সেটাই যা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়। সেটা প্রকৃত শিক্ষা নয় যা শুধু মুখস্থ রাখা হয় কিন্তু কোন কাজে লাগানো যায় না।”
‘‘যে ব্যক্তি কাউকে গোপনে উপদেশ দিল সে সত্যিকার তার কল্যাণকামিতার পরিচয় দিল আর যে লোক সম্মুখে উপদেশ দিল সে তাকে অপমান করল।”

১০৬. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল:
“আল্লাহর ভয়কে পাথেয় আর আখিরাতকে গন্তব্য বানিয়ে পথ চলো।”

১০৭. আব্দুল্লাহ ইবনুল মোবারক:
“অনেক বড় বড় কাজ নিয়তের কারণে ছোট হয়ে যায়। আর অনেক ছোট ছোট কাজ নিয়তের কারণ, বড় হয়ে যায়।”

১০৮. জনৈক মনিষী:
“আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। পশুদেরকে কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি। আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।সুতরাং মানুষের বিবেক যখন কু প্রবৃত্তির উপর প্রাধান্য পায় তখন সে ফেরেশতাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর যখন তার কু প্রবৃত্তি বিবেকের উপর প্রাধান্য পায় তখন সে পশুর স্তরে নেমে যায়।”

১০৯. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.:
“প্রবৃত্তি পূজারীদের সাথে উঠ-বসা করলে অন্তরের মৃত্যু ঘটে।”

১১০. ইমাম শাবী:
ইমাম শাবী কে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কিভাবে এত জ্ঞানার্জন করেছেন?
তিনি বললেন,
“কখনো পরের উপর নির্ভর করে থাকি নি।
জ্ঞানার্জনের জন্য দেশ-দেশান্তরে ঘুরেছি।
জড় পদার্থের মত ধৈর্য ধারণ করেছি।
কাকপক্ষীদের মত খুব ভোরে বিছানা ত্যাগ করেছি।”

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-১২

১১১. রাগ হল এমন একটি বাতাস যা বিবেকের প্রদীপ নিভিয়ে দেয়।
১১২. গোপন বিষয় দু জনকে অতিক্রম করলে ছড়িয়ে পড়ে।
১১৩. স্ত্রীকে যদি আপনি কেবল তার গুনাগুণ দেখে ভালবাসেন তবে তা প্রকৃত ভালবাসা নয়। প্রকৃত ভালবাসা তখনই হবে যখন আপনি তার মধ্যে দোষ দেখেও তাকে ভালবাসবেন।

১১৪. আমাদের জীবনের অধিকাংশ সমস্যা হয় দুটি কারণে:
এক. আমরা অনেক সময় চিন্তা না করেই কাজ করি।
দুই. আবার অনেক সময় কাজ না করে শুধু চিন্তা করি।

১১৫. জনৈক মনিষী বলেন, “সাফল্যের মূল রহস্য কি তা জানি না। কিন্তু ব্যর্থতার মূল রহস্য হল, সবাইকে খুশি করা চেষ্টা করা।”

১১৬. চারটি জিনিস মর্যাদা বৃদ্ধি করে:
ক. ধৈর্য ও সহনশীলতা
খ. বিনয়
গ. উদারতা
ঘ. সুন্দর ব্যবহার।

১১৭. চারটি জিনিস মহত্ত্বের পরিচায়ক:
ক. মানুষের উপকার করা (অর্থ, শ্রম, বুদ্ধি ও পরামর্শ দেয়ার মাধ্যমে)।
খ. মানুষকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা।
গ. কারো ভালো কাজের পুরষ্কার যথাসম্ভব দ্রুত দেয়া।
ঘ. কাউকে শাস্তি দেয়ার প্রয়োজন হলে তাড়াহুড়া না করা।

১১৯. চারটি কাজ নিচু স্বভাবের পরিচায়ক:
ক. গোপন কথা ফাঁস করে দেয়া।
খ. বিশ্বাসঘাতকতা করা।
গ. অসাক্ষাতে অন্যের দোষ সমালোচনা করা।
ঘ. প্রতিবেশী বা সঙ্গীর সাথে খারাপ আচরণ করা।

১২০. জ্ঞানীরা চারটি জিনিস থেকে দূরে থাকে:
ক. যে কোন কাজে তাড়াহুড়া করা।
খ. সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগা।
গ. আত্মম্ভরিতা দেখানো।
ঘ. গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবহেলা করা।

❑ জ্ঞানের কথা-জ্ঞানীর কথা-১৩

১২১. যে ঘরে বই নেই সে ঘর প্রাণহীন।
১২২. পেছনের ধোঁকাবাজ নেকড়ের চেয়ে সামনের হিংস্র বাঘ শ্রেয়।
১২৩. কষ্ট-ক্লেশ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কখনো কষ্টের মুখোমুখি হয় নি সে জীবনকে যথার্থভাবে অনুধাবন করতে পারে নি।
১২৪. যে ব্যক্তি আশার সাথে পরিচিত সে অসম্ভবকে চেনে না।
১২৫. ‘অসম্ভব’ জিনিসটি হল শক্ত পাথরের মত। কঠিন সিদ্ধান্তের কশাঘাতে তা ভাঙ্গতে বাধ্য।
১২৬. বিলম্বে পৌঁছা, না পৌঁছার চেয়ে উত্তম।
১২৭. গোপনীয়তা হল চাবির মত। মানুষের উচিৎ, এই চাবিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা।
১২৮. মানুষ কখনও সাফল্যের বাগানে পৌঁছুতে পারে না যতক্ষণ না সে ক্লান্তি, ব্যর্থতা ও হতাশার পিচ্ছিল পথ পাড়ি দিয়ে আসে।
১২৯. বাতাস যেমন জাহাজের চাহিদা অনুযায়ী প্রবাহিত হয় না তেমনি মানুষ যত আশা করে তার সব আশাই পূরণ হয় না।
১৩০. সবচেয়ে উঁচু ভবন নির্মানের দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হল, চারপাশের সব ভবন ভেঙ্গে ফেলা। অপরটি হল, অন্য সব ভবন থেকে উঁচু ভবন নির্মাণ করা। তুমি সব সময় ২য় পদ্ধতিটি অবলম্বন কর।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
অনুবাদ ও গ্রন্থনায়:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।।