ছেলেটিকে তার বাবা-মার পক্ষ থেকে বিয়ে বিলম্ব করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে

প্রশ্ন: আমার এক দীনি বন্ধুর বিয়ে করা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু তার ফ্যামিলি তাকে বিভিন্ন কথা বলে আরও অপেক্ষা করতে বলে। এখন তার করণীয় কি?
উত্তর:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি যদি বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে (দৈহিক ও আর্থিক) এবং বিয়ে না করলে অবৈধ যৌনাচার বা হারাম কর্মে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করে তাহলে তার বাবা-মা, পরিবার, লেখাপড়া, ক্যারিয়ার গঠন, চাকরি ইত্যাদি ওজুহাতে বিয়ে বিলম্ব করা জায়েজ নাই। বরং হারাম থেকে বাঁচতে এবং চরিত্রকে সংরক্ষণ করতে অনতিবিলম্বে তার জন্য বিয়ে করা ফরজ।

পক্ষান্তরে যদি দৈহিক সামর্থ্য থাকে কিন্তু আর্থিক অবস্থা এত খারাপ হয় যে, এ মূহুর্তে স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতে অক্ষম তাহলে তার জন্য করণীয় হল, রোজা রাখা। কেননা, রোজার মাধ্যমে মানুষের জৈবিক চাহিদা অবদমিত থাকে।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ، مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ؛ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
“হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে নিচু রাখতে এবং লজ্জা স্থানকে সংযত করতে সব চেয়ে বেশি সহায়ক। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম (রোজা) পালন করে। কেননা তা প্রবৃত্তিকে দমন করে।” [বুখারী ১৯০৫, ৫০৬৫ ও মুসলিম ১৪০০]

উল্লেখ্য যে, ইসলামে কোন পুরুষের জন্য বিয়ের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার সম্মতি নেয়াকে আবশ্যক করা হয় নি। সুতরাং বাবা-মা যদি তার বিয়ে দিতে রাজি হয় তাহলে তো ভালো কিন্তু যদি তারা বিয়ে দিতে রাজি না হয় তাহলে নিজের ঈমান, আখলাক ও ইজ্জত হেফাজতের স্বার্থে সে নিজে নিজে কোন মেয়েকে তার বাবা বা অভিভাবকের সম্মতি ক্রমে বিয়ে করে ঘর-সংসার শুরু করতে পারে। এতে বাবা-মা যদি তার উপর রাগ করে বা বদ দু্আ করে তাহলে তাতে সন্তান গুনাহগার হবে না এবং উক্ত বদদুআ আল্লাহর নিকট কার্যকর হবে না। কারণ সে আল্লাহর বিধান মেনে বিয়ে করেছে।

বরং এ ক্ষেত্রে পিতা-মাতা যদি বাধা দেয়, রাগ, গালাগালি বা বদদুআ করে তাহলে তারা গুনাহগার হবে। কারণ তারা এ ক্ষেত্রে অন্যায় করেছে; সন্তান নয়।
তবে পিতা-মাতাকে রাজি-খুশি করে বিয়ে করা উত্তম তাতে কোন সন্দেহ নাই।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।