গীবত (পরচর্চা) ও তহমত (অপবাদ)

প্রশ্ন: গীবত করা তো আপন মৃত্যু ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করার সমান। তাহলে ধরুন, কেউ কারোর নামে সমালোচনা করছে কিন্তু সেটা সত্য। অর্থাৎ যার নামে সমালোচনা করা হচ্ছে সত্যই তার মধ্যে সমস্যা আছে। তাহলেও কি গীবত বলে গণ্য হবে? কারণ তার নামে সত্যি কথাটাই বলা হচ্ছে; মিথ্যা বলা হয় নি।

উত্তর:
কারো মধ্যে যদি বাস্তবেই কোন দোষ-ত্রুটি থাকে আর তা যদি তার অসাক্ষাতে সমালোচনা করা হয় তাহলে এটাই প্রকৃত গীবত (পরচর্চা)। এটাই মৃত ভায়ের গোস্ত খাওয়ার সমতুল্য এবং কবিরা গুনাহ। কিন্তু যদি তার মধ্যে কোন দোষ না থাকে তারপরও অন্যায়ভাবে তার দোষ চর্চা করা হয় তাহলে এটাকে তহমত বা অপবাদ বলা হয়। গীবতের চেয়ে অপবাদ দেয়া আরও বড় অন্যায়। কারণ, এতে এক সাথে অনেকগুলো অন্যায় সংঘটিত হয়। যেমন, অপবাদ, মিথ্যা, সম্মানহানি ও জুলুম।

গীবত (পরচর্চা) ও তহমত (অপবাদ) এর সংজ্ঞা সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদিসটি পড়ুন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেন: তোমরা কি জান, গীবত কি? তাঁরা বললেন: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন:
“গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে।”

প্রশ্ন করা হল: আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন?

তিনি বললেন: “তুমি তার সম্পর্কে যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে।” (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-২৫৮৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে গীবত-পরচর্চা, মিথ্যারোপ, অপবাদ ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক অন্যায় থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানি)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব