কুলখানী, জন্ম দিবস পালন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ না করলে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী করণীয়?

প্রশ্ন: আমরা জানি যে কুলখানি, জন্মদিন পালন ইত্যাদি অনুষ্ঠান করা জায়েজ নেই। এগুলো বিদআত। কিন্তু অনেক সময় আমরা এমন অবস্থায় পড়ি যে, ঐ অনুষ্ঠানগুলোতে না গেলে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই অবস্থায় আমাদের করণীয় কী?

উত্তর:
কুলখানি বিদআত আর জন্ম দিবস অমুসলিমদের সংস্কৃতি। দুটাই হারাম। এ জাতীয় অন্যান্য বিদআতি, অপসংস্কৃতি ও শরীয়া বিরোধী অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করাও হারাম। এগুলোতে অংশ গ্রহণ করলে মহান আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন আর অংশ গ্রহণ না করলে দ্বীনের জ্ঞান বঞ্চিত ঐ সকল আত্মীয়-স্বজন অসন্তুষ্ট হবেন। এখন এ সব অজ্ঞ প্রবৃত্তি পূজারী লোকদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে গিয়ে যদি মহামহিম স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা নারাজ হন তাহলে আমরা কোনটা অগ্রাধিকার দিব? অবশ্যই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। মুসলিম হিসেবে এটাই অপরিহার্য।

সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ সকল অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ থেকে দুরে থাকা কর্তব্য। তবে যদি এতে তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার আশংকা করেন তাহলে দাওয়াতের স্বার্থে এ ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন ইবরাহীম আলাইহি সালামকে তার কউমের লোকেরা মূর্তি পূজায় অংশ গ্রহণের আহ্বান জানালে তিনি কৌশলে তা হতে বিরত থাকলেন। তিনি তাদেরকে বললেন, إِنِّي سَقِيمٌ “আমি অসুস্থ।” (সূরা আস সাফফাত: ৮৯) তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন না কিন্তু এ সকল শিরকের মহাসমারোহে নিশ্চয় তিনি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানসিক অসুস্থতার কথা ভেবে এ কথা বলেছিলেন। অথচ তারা ভাবল যে, তিনি হয়ত শারীরিকভাবে অসুস্থ। ইসলামের পরিভাষায় এটাকে বলা হয় তাওরিয়া। অর্থাৎ এমন একটা কথা বলবেন যে, তারা ভাববে একটা কিন্তু আপনার উদ্দেশ্য হবে ভিন্ন। এভাবে মিথ্যা থেকে বেঁচে যাবেন।
(বিস্তারিত জানতে সূরা আস সাফফাত এর ৮৯ নং আয়াতের তাফসীর পড়ুন)
অথবা কোন ব্যস্ততার অজুহাতে এ সব অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকবেন।

তবে তাদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে যথাসাধ্য তাদেরকে ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম থেকে ফিরানোর চেষ্টা করবেন। তাও সম্ভব না হলে কমপক্ষে নিজেকে এ সকল গুনাহর কাজ থেকে হেফাজত করবেন এবং তাদের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করবেন। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
والله أعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।।