কসম ভঙ্গের কাফফারা এবং ওয়াদা ও কসমের মাঝে পার্থক্য

প্রশ্ন: কোন ব্যক্তি যদি কোন কাজ করবে বলে আল্লাহর নামে কসম করে তারপর তা ভঙ্গ করে তাহলে তার জন্য কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব।

কসম ভঙ্গের কাফফারা হল:

– দশজন মিসকিনকে মধ্যম ধরণের খাবার খাবার খাওয়ানো।
– অথবা ১০ জন মিসকিনকে পোশাক দেয়া।
– অথবা একজন গোলাম আযাদ করা।
– এ তিনটি কোনটি সম্ভব না হলে তিনটি রোযা রাখা।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللَّـهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـٰكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الْأَيْمَانَ ۖ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ ۖ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ ۚ ذَٰلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ ۚ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّـهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।” সূরা মায়িদাহ: ৮৯)

সুতরাং কেউ যদি আর্থিক সংকটের কারণে উপরোক্ত তিনটি জিনিসের কোনটি দ্বারা কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করতে সক্ষম না হয় তাহলে তিনটি রোযা রাখবে।

🔰 কসম ও ওয়াদার মাঝে পার্থক্য:
এখানে এ বিষয়টি খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে, ওয়াদা করা আর কসম খাওয়া এক জিনিস নয়। কেউ হয়ত মনে মনে বা কারো কাছে ওয়াদা করল যে, সে এ কাজটা করবে কিন্তু পরে কোন কারণে তা করতে পারল না। তাহলে তা ‘কসম ভঙ্গ’ হিসেবে গণ্য হবে না। কারণ সে আল্লাহর নামে কসম করে নি।
পক্ষান্তরে কেউ যদি বলে, “আল্লাহর নামে কসম করে বলছি, উমুক কাজটা করব।” তাহলে এটা হল কসম। এখন সে যদি উক্ত কাজটা না করে তাহলে তা ‘কসম ভঙ্গ’ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে। কিন্তু সাধারণ ওয়াদা/অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে তার কোন কাফফারা নেই। কিন্তু ওয়াদা রক্ষা না করতে পারার কারণে আল্লাহর নিকট তওবা করবে এবং যার সাথে ওয়াদা করেছিল তার কাছে ক্ষমা চাইবে। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।