একমত দেয়ার সময় মুয়াজ্জিনের জন্য কি ঠিক ইমামের পেছনে থাকা আবশ্যক এবং ইমাম কি নিজেই একামত দিতে পারবেন

প্রশ্ন: সালাতের একমত দেয়ার সময় মুয়াজ্জিনের জন্য কি ইমামের ঠিক পেছনে থাকা আবশ্যক না কি তিনি কিছুটা ডানে-বামেও থেকেও একামত দিতে পারেন? আর ইমাম সাহেব নিজেও কি একামত দিতে পারবেন?

উত্তর:

◍ ইমামের ঠিক পেছনে মুয়াজ্জিনের থাকার আবশ্যকতা সম্পর্কে কোন হাদিস সাব্যস্ত হয় নি। বরং হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لِيَلِني مِنْكُمْ أُولُوا الأحْلاَمِ وَالنُّهَى، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ». رواه مسلم
“আর তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত ও বুদ্ধিমান, তারাই যেন আমার নিকটে (প্রথম কাতারে আমার পেছনে) থাকে। অতঃপর যারা বয়স ও বুদ্ধিতে তাদের নিকটবর্তী তারা। অতঃপর তাদের যারা নিকটবর্তী তারা।’’ (মুসলিম ৪৩২)

সুতরাং সালাতে ইকামত দাতার জন্য ইমামের ঠিক পেছন বরাবর দাঁড়ানো আবশ্যক নয়। বরং সামান্য কিছু ডানে-বামে থাকলেও কোন আপত্তি নাই।

◍ যে আজান দিয়েছে (মুয়াজ্জিন) সেই একামত দেয়ার অধিক হকদার এবং এটাই সুন্নত। যেমন: বিলাল রা. আজান দিতেন অতপর: একামতও দিতেন। তিনি আজান দিতেন কিন্তু অন্য কেউ একামত দিতেন এমন কোন তথ্য হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয় নি।

◍ অপর কোন মুসল্লিও একমত দিতে পারে যদি মুয়াজ্জিন তাকে একমত দেয়ার অনুমতি দেয় বা দায়িত্ব অর্পণ করে। কিন্তু ইমাম ও মুক্তাদির উপস্থিতিতে ইচ্ছামত অন্য কারো একামত দেয়া জায়েজ নাই। কারণ এটা অন্যের দায়িত্বে হস্তক্ষেপের শামিল। তাছাড়া এতে মুয়াজ্জিন মনে কষ্ট পেত পারে এবং মুসল্লিদের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।

◍ মুয়াজ্জিন একমত দিবে ইমামের অনুমতি বা ইশারা পেলে; তার আগে নয়। (ইমামের কোন সমস্যা থাকলে ভিন্ন কথা।) যেহেতু জামাআতে সালাত পড়ানোর দায়িত্ব ইমামের উপর অর্পিত। সুতরাং জামাআত দাঁড়ানো এবং একমত দেয়া হবে ইমামের অনুমতি বা ইঙ্গিত ক্রমে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, বিলাল রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদ সংলগ্ন তাঁর হুজরা থেকে বের না হলে একামত দিতেন না।
তবে কোন ওজরের কারণে মুয়াজ্জিন একামত দিতে অক্ষম হলে ইমাম নিজেও একামত দিয়ে সালাত শুরু করতে পারে। এতে কোন সমস্যা নাই।

◍ অনুরূপভাবে প্রয়োজন বশত: মুয়াজ্জিনও একামত দিয়ে ইমামতিও করতে পারে যদি ইমাম তাকে অনুমতি বা দায়িত্ব প্রদান করে অথবা কোন কারণে সে অনুপস্থিত থাকে।

উৎস:
– নূরুন আলাদ দারব-শাইখ বিন বায (রহঃ)
– শারহুল মুমতি ২/৬৫-৬৬-শাইখ সালেহ আল উসাইমিন (রহঃ)
– আল মুলাখখাস আল ফিকহি ১/১০০-শাইখ ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ)
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬◆◯◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।