ঈদের সেলামি বা টাকা আদান-প্রদান কি জায়েজ

প্রশ্ন: ঈদের সেলামি বা টাকা আদান প্রদান কি জায়েজ?

উত্তর:
সেলামি/সেলামী (বিশেষ্য পদ)। শাব্দিক অর্থ: নজরানা, উপঢৌকন; জমিদার, বাড়ীওয়ালা ইত্যাদিকে উপহারস্বরূপ দেয় টাকা। (English & Bengali Online
Dictionary & Grammar)
আর ‘ঈদ সেলামি’ বলতে বুঝায়, ঈদ উপলক্ষে বড়দের পক্ষ থেকে ছোটদেরকে উপহার, উপঢৌকন-বিশেষ করে উপহারস্বরূপ দেয় টাকা।

ইসলামের দৃষ্টিতে এতে কোনও আপত্তি নেই। এটি একটি সুস্থ ও সুন্দর সামাজিক রীতি এবং চারিত্রিক সৌন্দর্য। কেননা এতে ছোটদের প্রতি স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ঈদ সেলামি পেলে ছোটরা আনন্দিত হয়। এতে তাদের ঈদের উৎসব আরও বেড়ে যায়।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষকে খুশি করা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ইসলামে উপহার লেনদেন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এতে পারস্পারিক ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয়। বিশেষ করে ছোটরা বড়দের স্নেহ-মমতা ও ভালবাসা পাওয়ার বেশি হকদার।

তবে ঈদ সেলামি দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা দরকার। যথা:

◉ ১) আমাদের দেশে ঈদ সেলামি পাওয়ার জন্য ছোটরা বড়দের পা ছুয়ে সালাম করে। এটি সম্পূর্ণ অনৈসলামিক কালচার। এর সম্প্রসারণ রোধ করা জরুরি। কেউ এমনটি করলে তাকে নিষেধ করতে হবে।

◉ ২) সেলামি দেয়ার ক্ষেত্রে ছোট ভাই, বোন ও সন্তানদের কাউকে দেয়া দেওয়া হবে আর কাউকে বঞ্চিত করা হবে-এমনটি যেন না হয়। কেননা এতে পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

◉ ৩) সবাইকে সমানভাবে উপহার দেয়া জরুরি নয় বরং বয়স ও অবস্থা অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে। যেমন: বড়কে বেশি আর ছোটকে কম, বিবাহিতকে এক রকম অবিবাহিতকে অন্য রকম। এতে কোন আপত্তি নাই।

◉ ৪) তারা কীভাবে তা খরচ করছে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরি। কেননা অনেক সময় বাচ্চারা হাতে টাকা পেয়ে নানা আজেবাজে ও অনর্থক কাজে ব্যয় করে। অনেকে বিভিন্ন গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়। তাই অভিভাবকদের এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখা জরুরি।
আল্লাহু আলাম।

ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র এই প্রত্যাশায় সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম সালিহাল আমাল (আল্লাহ আমাদের এবং আপনাদের সৎকর্ম গুলো কবুল করুন)। আমিন।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।