প্রশ্ন: ‘হযরত’ কাদের বলা যাবে? কোন নেতা-নেত্রীকে যদি ‘হযরত’ বলা হয় তাহলে কি গুনাহ হবে?
উত্তর:
হযরত/হজরত আরবি শব্দ। এর অর্থ: সম্ভ্রমের পাত্র, মহাত্মা, অতি সম্মানিত ব্যক্তি। (বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান)
এ শব্দটি আরবি হলেও আরবদের মাঝে এটির তেমন প্রচলন লক্ষ্য করা যায় না। মিসর সহ কোন কোন এ্যারাবিয়ান দেশে সীমিত পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়। তবে উর্দুতে এর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। উর্দু ভাষায় এ শব্দটি মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য সম্মান প্রদর্শনার্থে ব্যবহৃত হয়। তবে বাংলা ভাষায় সাধারণত: এ শব্দটি কেবল ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও ইসলামি জ্ঞান বিদগ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। এর ব্যতিক্রম নেই বললেই চলে।
সুতরাং যেহেতু আমাদের দেশে আলেম-ওলামা এবং ইসলামি ব্যক্তিত্ব ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে এ শব্দটির প্রয়োগ নেই সেহেতু অন্য কারো ক্ষেত্রে এ শব্দটির ব্যবহার করা উচিৎ নয় বলে মনে করি। অন্যথায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। কারণ প্রত্যেক দেশের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি এবং রীতিনীতি রয়েছে।
অত:এব দেশের প্রচলিত রীতি-নীতি ও ভাষার ব্যবহারিক নিয়ম ভঙ্গ করে হঠাৎ নতুন শব্দ প্রয়োগে কোনও নেতা-নেত্রী বা অন্য কারো প্রতি সম্মান জানানো অনুচিত।
যেমন: কোন আলেমকে কেউ যদি `মিস্টার’ বলে সম্বোধন করে তাহলে তা তার ব্যক্তিত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় সর্বগ্রাহ্য হবে না- যদিও অর্থগতভাবে কোন সমস্যা নেই। অনুরূপভাবে ‘মাওলানা’ অর্থ: বন্ধু, সহযোগী, অভিভাবক ইত্যাদি। এ শব্দটি আমাদের দেশে আলেম-ওলামা, ইসলামি বক্তা, মসজিদের ইমাম ও ইসলামী স্কলারদের নামের সাথে ব্যবহৃত হওয়ার প্রচলন রয়েছে। এখন কেউ যদি শাব্দিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে সাধারণ কোন নেতা-নেত্রী বা বিশিষ্টজনের নামের সাথে তা ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে নিশ্চিতভাবেই জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হবে।
সুতরাং দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও প্রচলনের দিকে লক্ষ্য রেখে যাকে যে শব্দ প্রয়োগে সম্মান দেখালে যথাযথ সম্মান দেখানো হবে এবং মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে না সে শব্দই প্রয়োগ করা উচিৎ।
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।