প্রশ্ন: আমি যদি স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনও অসুস্থ ব্যক্তিকে রক্ত দেই তাহলে কি আমার পাপ হবে?
উত্তর: কোন মুমূর্ষু রোগীকে জীবন বাঁচানোর স্বার্থে জরুরি রক্ত দানের প্রয়োজন হলে একজন মহিলার জন্য তার রক্ত দান করতে কোনও আপত্তি নাই যদিও স্বামীর অনুমতি না নেয়া হয় বা অনুমতি নেয়ার সময় না পাওয়া যায়। এমনকি স্বামীর নিষেধ স্বত্বেও সে তার রক্ত দান করতে পারে (যদি নিষেধের শরিয়ত সম্মত কোনও কারণ না থাকে)। কারণ এখানে একজন মৃতপ্রায় মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া একজন নারী যেমন স্বামীর অনুমতি ছাড়াই নিজস্ব অর্থ-সম্পদ দান করতে পারে তেমনি তার শরীরের রক্তও দান করতে পারে।
এ হল, জরুরি অবস্থার কথা।
আর স্বাভাবিক অবস্থায় (জরুরি প্রয়োজন না হলে) রক্ত দানের ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি নেয়া উত্তম; জরুরি নয়। অর্থাৎ স্বামীর সাথে কথা বলে তার সম্মতিক্রমে রক্ত দিবে। এটা অবশ্যই ভালো। কারণ স্বামীর মন রক্ষা করা সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে হাদিসে একজন স্ত্রীকে তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।
– কখন রক্ত দেয়া উচিৎ নয়?
সাধারণ অবস্থায় রক্ত দেয়ার কারণে যদি স্ত্রী শারীরিকভাবে এমন দুর্বল হয় যে, এ কারণে সন্তানকে দুগ্ধ দান, সন্তান প্রতিপালন, বাড়ির দায়-দায়িত্ব পালন বা স্বামী হক আদায়ে অপারগ হয়ে যায় তাহলে রক্ত দেয়া বৈধ হবে না। (যদিও পরিমিত রক্ত দেয়ার ফলে সাধারণত: এমনটা ঘটে না)।
– কোন নারীর জন্য এমন ব্যক্তিকে রক্ত দেয়া বৈধ নয় যাকে রক্ত দিলে দাতা বা গৃহীতা উভয়ের জন্য ফিতনার কারণ হতে পারে। কারণ সাধারণত: মানুষ এমন ব্যক্তির প্রতি দুর্বল হয় যে তার উপকার করে। সুতরাং কাউকে রক্ত দেয়ার কারণে যদি উভয়ের মাঝে ফেতনা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে তাহলে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
– স্বাভাবিক অবস্থায় এমন ব্যক্তিকে রক্ত দেয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য, যার সাথে স্বামীর শত্রুতা বা মনোমালিন্য আছে বা স্বামী যার ব্যাপারে অসন্তুষ্ট। কেননা, এমন ব্যক্তিকে রক্ত দেয়ার ফলে স্বামী স্ত্রীর উপর ক্রোধান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে-যা তাদের দাম্পত্য জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অথচ মানুষের উপকার করার চেয়ে স্বামীকে খুশি রাখা ও নিজের দাম্পত্য জীবন রক্ষা করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
আব্দু্ল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।