রূপচর্চায় খাদ্যদ্রব্য ব্যবহারের বিধান

প্রশ্ন: মধু, দুধ বা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য মুখ, হাত, পা বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে লাগিয়ে রূপচর্চা করা জায়েজ আছে কি?
উত্তর: যদি মেডিকেল সাইন্স, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের গবেষণা কিংবা বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে প্রমাণিত হয় যে, দুধ, মধু, ডিম বা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করলে শরীরের উপকার হয়, ত্বকে মসৃণতা আসে, ব্রণ, মেছতা বা ত্বকের দাগ দূরীভূত হয়, চুল পড়া বন্ধ হয় বা চুলের গোড়া শক্ত হয় ইত্যাদি তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে এগুলো ব্যবহারে কোন আপত্তি নাই। প্রয়োজন বোধে শরীরের যে কোন স্থানে এগুলো ব্যবহার করা যাবে ইনশাআল্লাহ। কেননা আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সব কিছুই মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন,
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا
“তিনিই সে সত্ত্বা যিনি পৃথিবীতে যা কছু আছে সব কিছু তোমাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা বাকারা: ২৩)
প্রকৃত পক্ষে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করেন নি। প্রতিটি জিনিসের মধ্যে আমাদের কল্যাণ রেখেছেন। হয়ত আমরা কিছু জানি আর কিছু জানি না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গবেষকদের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এগুলো থেকে মানুষের জন্য নানা উপকারী বিষয় বের হয়ে আসছে। যেমন বলা হচ্ছে যে, রূপ বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ ও মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বককে করে ভেতর থেকে পরিষ্কার ও মসৃণ। এ ছাড়া ত্বকে প্রাকৃতিক ভাবে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে।
সুতরাং কল্যাণকর কাজে এ সব খাদ্যদ্রব্য, গাছ-গাছালি, ফলমূল, লতাপাতা ইত্যাদি ব্যবহার করতে শরিয়তে কোন নিষেধ নেই। চাই রোগ-ব্যাধির চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হোক বা রূপচর্চার উদ্দেশ্যে হোক।
তবে বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ অনুযায়ী এগুলো তৈরির পদ্ধতি জেনে সঠিক নিয়মে ব্যবহার করা উচিৎ। যেন সেগুলো থেকে প্রত্যাশিত উপকার পাওয়া যায়।
আল্লামা আব্দুল্লাহ বিন বায রহঃ কে প্রশ্ন করা হয়: চুলে ডিম, তেল এবং মধু দেওয়া ফেলার বিধান কি? কেননা তা চুলকে মজবুত করে।
তিনি বলেন,
لا أعلم مانعاً منه إذا كان فيه مصلحة، اجتماع البيض والحليب والعسل ونحو ذلك في الشعر لا بأس
“যদি এতে উপকার হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা আছে বলে জানি না। ডিম, দুধ, মধু ইত্যাদি একসাথে চুলে দেওয়ায় কোন সমস্যা নেই।” (islamqa)
আল্লামা উসাইমিন রহ. সহ বহু আধুনিক যুগের আলেম এ বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করেছেন। আল হামদুলিল্লাহ।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।
Share: