যাকাতুল ফিতর বা ফিতরার সংক্ষিপ্ত বিধি-বিধান

১. যাকাতুল ফিতর/ফিতরা দেওয়ার হুকুম কী?
উত্তর: ফরজ বা ওয়াজিব।
২. কার জন্য ফিতরা দেওয়া ফরজ?
উত্তর: পরিবারের প্রতিটি সদস্য পুরুষ-নারী, বড়-ছোট সবার জন্য।
৩. ফিতরা দেওয়ার দায়িত্ব কার?
উত্তর: গৃহকর্তা নিজের ফিতরা দিবে এবং তার অধীনস্থ ঐ সকল ব্যক্তিদের ফিতরা দিবে যাদের ভরণ-পোষণ দেওয়া তার জন্য ফরজ।
৪. কোন জিনিস দ্বারা ফিতরা প্রদান করা উচিৎ?
উত্তর: প্রত্যেক দেশের প্রধান খাদ্য দ্রব্য। যেমন: আমাদের দেশে চাল।
৫. পরিমাণ কত?
উত্তর: এক সা তথা প্রায় আড়াই থেকে তিন কেজি (চাল/গম)। তবে ৩ কেজি দেওয়া অধিক উত্তম ও নিরাপদ। (সৌদি ফতোয়া বোর্ড)
৫. হাদিসে যেহেতু খাদ্য দ্রব্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তাই সুন্নত অনুসরণ করতে চাইলে খাদ্য দ্রব্য দিতে হবে। একান্ত অপরিহার্য পরিস্থিতি না হলে ফিতরার মূল্য বা টাকা দ্বারা ফিতরা দেওয়া সুন্নত পরিপন্থী।
৬. ফিতরা কখন আদায় করতে হবে?
উত্তর: ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে। তবে ১/২ দিন আগে দেওয়াও জায়েজ। ঈদের পরে ফিতরা দেওয়া হলে তা শুদ্ধ হবে না। বরং তা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
৭. ফিতরা আদায়ের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: ঈদের দিন গরিব-অসহায় মানুষের খাবারের ব্যবস্থা এবং রোজাদারকে অর্থহীন কাজ, অশ্লীলতা এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পবিত্র করা।
৮. বণ্টনের খাত কী কী?
উত্তর: প্রধানত গরিব-অসহায় মানুষ। তবে অনেক আলেমের মতে জাকাতের আটটি খাতের সবগুলোতেই ফিতরা দেওয়া যাবে।
▪ ফিতরা বিষয়ক কতিপয় জরুরি মাসায়েল:
ক. প্রয়োজনে এক দেশে থেকে অন্য দেশে ফিতরা প্রেরণ করা জায়েজ।
খ. এক জনের ফিতরা একাধিক ব্যক্তিকে যেমন দেওয়া জায়েজ তদ্রূপ একাধিক ব্যক্তির ফিতরা প্রয়োজনে একজনকেও দেওয়া জায়েজ।
গ. ঈদের দিনের নিজ পরিবারের খাওয়ার মত অর্থ-সম্পদ এবং ফিতরা দেওয়ার মত সামর্থ্য থাকলে ফিতরা প্রদান করা আবশ্যক।
ঘ. ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পূর্বে কোনও সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তারও ফিতরা দেওয়া আবশ্যক। গর্ভস্থ সন্তানের ফিতরা দেওয়া আবশ্যক নয়। তবে দেওয়া উত্তম।
ঙ. ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পূর্বে কোন মেয়ের বিয়ে হলে পিতার জন্যে তার ফিতরা দেওয়া আবশ্যক। আর ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পরে বিয়ে হলে স্বামীর জন্য তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে ফিতরা দেওয়া আবশ্যক।
চ. ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পূর্বে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার ফিতরা দেওয়া আবশ্যক নয়। তবে চাঁদ উদিত হওয়ার পরে মারা গেলে তার ওয়ারিশগণ তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে ফিতরা আদায় করবে। আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬💠🌀💠▬▬▬▬
লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব।
Share: