জীবিত অথবা মৃত কোন মানুষকে সুনির্দিষ্টভাবে জান্নাতি বা জাহান্নামী বলা শরীয়ত সম্মত নয়

প্রশ্ন: আমরা বিশ্বাস করি, গায়েবের খবর আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ জানে না। তাহলে কেউ যদি শিরক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে এবং তওবাও করে নি। তাকে কি নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে যে, সে জাহান্নামে যাবে?

উত্তর:
কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে জান্নাতি বা জাহান্নামী বলা শরীয়ত সম্মত নয়। কোন দ্বীনদার-তাওকয়াবান ব্যক্তির ব্যাপারে যেমন নির্দিষ্টভাবে জান্নাতের সাক্ষ্য দেয়া জায়েয নাই তেমনটি কোন গুনাহগারকে নির্দিষ্টভাবে জাহান্নামের সাক্ষ্য দেয়া বৈধ নয়। এমনকি নির্দিষ্টভাবে কোন কাফেরকেও একথা বলা যাবে না যে, অমুক ব্যক্তি জাহান্নামী।

তবে সাধারণভাবে বলা যাবে যে, “যে ব্যক্তি শিরক অবস্থায় তওবা ছাড়া মারা যাবে সে জাহান্নামে যাবে।”
সাধারণভাবে কাফের, মুশরিক, মুরতাদ, নাস্তিক, মুনাফিক ইত্যাদি কে জাহান্নামী বলতেও কোন দোষ নেই।
অনুরূপভাবে এভাবে বলতেও কোন দোষ নেই যে “যে ব্যক্তি এই এই আমল করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে “এই ব্যক্তি জান্নাতি” আর “ওই ব্যক্তি জাহান্নামী” এভাবে বলা শরীয়ত সম্মত নয়।

এটি কেবল ওহীর মারফতেই বলা সম্ভব। কুরআন-সুন্নায় যাকে জান্নাতি বা জাহান্নামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আমারা কেবল তাদেরকেই জান্নাতি বা জাহান্নামী বলতে পারি।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহীর মারফতে অনেক সাহাবীর ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। বলেছেন, উমুক উমুক জান্নাতি। যেমন দশজন জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী, হাসান রা. হুসাইন রা., ফাতিমা রা., বিলাল রা. প্রমুখ।

আবার অনেকের ব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে জাহান্নামী হওয়ার দু:সংবাদও দিয়েছেন। যেমন, তাঁর চাচা আবু তালেব, আবু লাহাব (কুরআনের সুরা লাহাব) এবং বদর যুদ্ধে নিহত আবু জাহেল, উতবা বিন রবিয়া, শায়বা বিন রবিয়া প্রমুখ।

কুরআন-সুন্নাহর দলীলের বাইরে আমাদের দ্বারা কারো ব্যাপারে এ মন্তব্য করা বৈধ নয়। কারণ আমরা জানি না, হয়ত পাপী মৃত্যুর আগে তওবা করেছে, মুরতাদ হয়ত ইসলামে ফিরে এসেছে, কাফের হয়ত ইসলাম গ্রহণ করেছে, আর জীবিত ব্যক্তি হয়ত ইসলাম কবুল করবে, পাপী হয়ত তওবা করবে আর দ্বীনদার ব্যক্তি হয়ত কাফের হয়ে মারা যাবে। এটি সম্পূর্ণ গোপন বিষয়-যা একমাত্র আল্লাহর জ্ঞানে রয়েছে।

সুতরাং নির্দিষ্টভাবে কোন মানুষকে জান্নাতি বা জাহান্নামী বলা শরীয়ত সম্মত নয়।
এ বিষয়ে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইজমা তথা সর্বসম্মত মত রয়েছে।
আল্লাহু আলাম।
🖊🖊🖊🖊🖊🖊🖊🖊
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।।