নিম্নে কুনুতে নাজেলার পরিচয়, পদ্ধতি এবং এ সংক্রান্ত জরুরি কিছু মাসায়েল সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১. শব্দের অর্থ ও উদ্দেশ্য
নাজেলা অর্থ: সংকট বা বিপদ।
কুনুত অর্থ: সেই সংকটময় পরিস্থিতিতে উপযুক্ত দোয়া।
কুনুতে নাজেলা: মুসলিম জাতির উপরে কোনো মারাত্মক বিপদ, দুর্যোগ বা সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি যেমন: শত্রুর আক্রমণ, দুর্ভিক্ষ বা মহামারী ইত্যাদি ঘটলে, মুমিনদের নিরাপত্তা ও মঙ্গলের জন্য ফরজ সালাতের মধ্যে বিশেষ পদ্ধতিতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
২. বিধান: কুনুতে নাজেলা পড়া সুন্নত।
৩. কুনুতে নাজেলা পড়ার পদ্ধতি:
পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে (ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব, ইশার) ফরজ সালাতের শেষ রাকাতে রুকু থেকে দাঁড়িয়ে “সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার পর দুই হাত তুলে কুনুতে নাজেলা পাঠ করা। ফজরের শেষ রাকাতে তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ইমাম উঁচু আওয়াজে দোয়া পড়বেন আর মুক্তাদিগণ উঁচু আওয়াজে “আমিন, আমিন” বলবেন। এটি যে কোন নামাজেই হোক।
৫.জুমা নামাজে কুনুতে নাজেলা পড়া যায় কিনা তা দ্বিমতপূর্ণ, তবে অধিক নির্ভরযোগ্য মতে পড়া যায়, ইনশাআল্লাহ।
৬. সুন্নত বা নফল সালাতে কুনুতে নাজেলা পড়া শরিয়তসম্মত নয়।
৭. একাকী নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও উক্ত পদ্ধতিতে কুনুতে নাজেলা পাঠ করা যাবে।
মহিলাও বাড়িতে একাকী সালাতের সময় তা করতে পারেন।
৮. দোয়ার পরে মুখমণ্ডলে হাত না মোছাই ভালো। কারণ দোয়া শেষে হাত মোছার হাদিস অনেক আলেমের মতে জইফ।
৯. পরিস্থিতি অনুযায়ী দোয়া নির্বাচন:
যেসব বিপদ, মুসিবত বা সমস্যা সৃষ্টি হবে, পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সেই ধরণের দোয়া করবেন। এ ক্ষেত্রে একান্ত বিনয়, একাগ্রতা ও কান্না বিজড়িত কন্ঠে, মুমিন-মুসলিমদের কল্যাণের জন্য দোয়া, শত্রু বাহিনী তথা মুসলিমদের উপরে আক্রমণকারী কা***ফিরদের বিরুদ্ধে বদ দোয়া এবং বিপদ-মুসিবত থেকে আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ প্রার্থনা করবে।
১০. কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দুয়াগুলোর পাশাপাশি নিজের ভাষাতেও দোয়া করা যাবে।
১১.প্রয়োজন বোধে কয়েকদিন যাবত অব্যাহতভাবে দোয়া করা যাবে।
১২. জামাতে সালাতে অতিরিক্ত দীর্ঘ দোয়া করা উচিত নয়, যাতে সাধারণ মুসল্লিদের কষ্ট হয়।
আল্লাহু আলাম।
– আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল –