ইতিকাফের সওয়াব

ইতিকাফের কী সওয়াব?

আলহামদুলিল্লাহ।

এক:

ইতিকাফ একটি শরয়ি আমল। এটি আল্লাহ্‌র নৈকট্য হাছিল করা যায় এমন নেক আমল। আরও জানতে দেখুন:48999 নং প্রশ্নোত্তর।

এটা যখন সাব্যস্ত হল, জেনে রাখুন আল্লাহ্‌র নৈকট্যশীল নফল আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিসগুলোর সাধারণ হুকুমের অধীনে সকল ইবাদত অর্ন্তভুক্ত হয়; যার মধ্যে ইতিকাফও রয়েছে।

এ ধরণের হাদিসের মধ্যে রয়েছে: হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী “আমি আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য হাছিল করে। আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে উপর্যুপরি আমার নৈকট্য হাছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসি। যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার কর্ণ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমি তার চক্ষু হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে তা প্রদান করি। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাকে আশ্রয় দেই।[সহিহ বুখারী (৬৫০২)]

দুই:

ইতিকাফের ফযিলত সম্পর্কেও কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে; কিন্তু সে হাদিসগুলো দুর্বল কিংবা বানোয়াট:

আবু দাউদ বলেন: আমি আহমাদকে (অর্থাৎ আহমাদ বিন হাম্বলকে) বললাম: আপনি কি ইতিকাফের ফযিলত বিষয়ে কিছু জানেন? তিনি বললেন: না; দুর্বল কিছু ব্যতীত।[সমাপ্ত][মাসায়েলু আবি দাউদ, পৃষ্ঠা-৯৬]

এ ধরণের হাদিসগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিকাফকারীর ব্যাপারে বলেছেন: “ইতিকাফকারী গুনাহকে প্রতিরোধ করেন। ইতিকাফকারীকে সকল নেক আমলকারীর ন্যায় নেকী দেয়া হবে।”[শাইখ আলবানি ‘যয়িফু ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে যয়িফ (দুর্বল) বলেছেন]

২। তাবারানী, হাকিম ও বায়হাকী ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন ইতিকাফ করে আল্লাহ্‌ তার মাঝে ও জাহান্নামের আগুনের মাঝে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন; যা পূর্ব-পশ্চিমের চেয়েও বেশি দূরত্ব”।[বাইহাকী হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]

৩। দাইলামি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় ইতিকাফ করবে তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।”[আলবানি ‘যায়িফুল জামে’ গ্রন্থে (৫৪৪২) হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]

৪। ইমাম বাইহাকী হাসান বিন আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমযান মাসে দশদিন ইতিকাফ করবে এর সওয়াব দুইটি হজ্জ ও দুইটি উমরার সমান।”[শাইখ আলবানি ‘আল-সিলসিলাতুয্‌ যায়িফা’ গ্রন্থে (৫১৮) হাদিসটি সংকলন করে বলেছেন: মাওযু (বানোয়াট)]

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইট।।
Share: