ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ (গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমাযানে ১০ দিন ইতি-কাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি মৃত্যু বরণ করেন সে বছর একটানা ২০ দিন ইতিকাফ করেছেন। (সহীহ বুখারী, অধ্যায়: ইতি-কাফ, আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত)
✅ ইতিকাফের কতিপয় উপকারিতা:
ঈমানদারের জন্য ইতিকাফে অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো কয়েকটি উল্লেখ করা হল:
❖ ১. এর মাধ্যমে কিছু দিনের জন্য দুনিয়া থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থেকে মহান আল্লাহ নৈকট্য হাসিলের বিশাল সুযোগ পাওয়া যায়।
❖ ২. এ সময় অধিক পরিমাণে নফল সালাত, জিকির-আজকার, দুআ, তাসবীহ, তাকবীরে উলা তথা ইমামের প্রথম তাকবীরে সাথে জামাআতে সালাত, মৃত্যুর পরবর্তী জীবন তথা কবর আখিরাত, হাশর-নশর, আল্লাহর দরবারে হিসাব-নিকাশ, পুলসিরাত, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি বিষয়ে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন মুখস্থ, ইসলামী জ্ঞানার্জন ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হয়।
❖ ৩. এ ছাড়াও ইতিকাফের ফলে দৃষ্টি হেফাজত, অশ্লীল, অনর্থক ও মিথ্যা কথা থেকে মুখ হেফাজত, গীবত-পরনিন্দা, চুগলখোরি ইত্যাদি অসংখ্য গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়।
❖ ৪. রমাযান মাসে ইতিকাফ করার সবচেয়ে বড় ফায়দা হল, শেষ দশকের রাত জেগে ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহ তাওফিক দান করলে ‘লাইলাতুল কদর’ বা শবে কদর লাভ করা সম্ভব হয়-যা এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। নি:সন্দেহে এটি জীবনের অন্যতম সেরা অর্জন।
❖ ৫. ইতিকাফ এর মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আদায় করা হয়- যা বর্তমানে মুসলিম সমাজে প্রায় পরিত্যক্ত।
✅ ইতিকাফের ফযিলতে বর্ণিত হাদিসগুলো সহীহ নয়:
ইতিকাফের ফযিলতে কয়েকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কোনটি জঈফ আর কোনটি জাল। হাদিসগুলোর আরবি টেক্সট (সেগুলোর সনদ সম্পর্কে মুহাদ্দিসদের বক্তব্য সহকারে) নিম্নে প্রদান করা হল:
1- روى ابن ماجه (1781) عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي الْمُعْتَكِفِ : ( هُوَ يَعْكِفُ الذُّنُوبَ ، وَيُجْرَى لَهُ مِنْ الْحَسَنَاتِ كَعَامِلِ الْحَسَنَاتِ كُلِّهَا ) . ضعفه الألباني في ضعيف ابن ماجه .
( يَعْكِفُ الذُّنُوب ) أي : يَمْنَع الذُّنُوب. قاله السندي .
2- روى الطبراني والحاكم والبيهقي وضعفه عن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( من اعتكف يوما ابتغاء وجه الله جعل الله بينه وبين النار ثلاث خنادق أبعد مما بين الخافقين ) . ضعفه الألباني في السلسلة الضعيفة (5345). والخافقان المشرق والمغرب .
3- روى الديلمي عن عائشة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( من اعتكف إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه ) ضعفه الألباني في ضعيف الجامع (5442) .
4- روى البيهقي وضعفه عن الحسين بن علي رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( من اعتكف عشرا في رمضان كان كحجتين وعمرتين ) . ذكره الألباني في “السلسلة الضعيفة” “. (518) وقال : موضوع .
আরও পড়ুন: ইতিকাফ সংক্রান্ত একটি ভুল ধারণা
shorturl.at/lwAK6
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি,
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব