আমরা কি করে বুঝবো যে, আমরা সব কিছুর থেকে বেশি আমাদের রবকে ভালবাসতে পেরেছি?

প্রশ্ন: আমরা কি করে বুঝবো যে, আমরা সব কিছুর থেকে বেশি আমাদের রবকে ভালবাসতে পেরেছি?

উত্তর:

যখন কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলের ভালোবাসাকে নিজের ইচ্ছা ও ভালবাসার উপর প্রাধান্য দিতে পারবে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অপছন্দ ও নিষেধকৃত বিষয়গুলোকে নিজের কামনা-বাসনার উপর অগ্রাধিকার দিতে পারবে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে চলার প্রাণপণ চেষ্টা করবে তখনই সে সব কিছুর থেকে বেশি আল্লাহকে ভালবাসতে পেরেছে বলে প্রতিয়মান হবে।

🌀 আল্লাহ তাআলা বলেন:
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّـهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّـهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّـهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
“(হে নবী,) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালবাসেন এবং তোমাদের গুনাহ মোচন করবেন। আল্লাহ হলেন অতিশয় ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান: ৩১)

🌀 আনাস ইবনে মালিক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ وَطَعْمَهُ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِبَّ فِى اللَّهِ وَأَنْ يُبْغِضَ فِى اللَّهِ وَأَنْ تُوقَدَ نَارٌ عَظِيمَةٌ فَيَقَعُ فِيهَا أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يُشْرِكَ بِاللَّهِ شَيْئًا
‘‘তিনটি বিষয় যার মধ্যে থাকবে সে এগুলো দ্বারা ঈমানের সাধ ও মিষ্টতা লাভ করবে:
(১) মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য সকলের চেয়ে তার নিকট অধিকতর প্রিয় হবে।
(২) সে আল্লাহর জন্যই ভালবাসবে এবং আল্লাহর জন্যই ঘৃণা বা অপছন্দ করবে
(৩) এবং বিশাল অগ্নিকুণ্ড প্রজ্জ্বলিত করা হলে সে অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়াকে সে আল্লাহর সাথে শিরক করা অপেক্ষা অধিক পছন্দ করবে।’’
[মুসলিম, আস-সহীহ ১/৪৮ অধ্যায়: ঈমান, অনুচ্ছেদ: যে সকল বৈশিষ্টে বৈশিষ্ট মণ্ডিত হলে ঈমানের সাধ অর্জন করা যায়….); নাসাঈ, আস-সুনান ৮/৯৪ (অধ্যায়: ঈমান ও তার ব্যাখ্যা, অনুচ্ছেদ: ঈমানের সাধ)।]

🌀 অন্য হাদীসে আবু উমামা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
مَنْ أَحَبَّ لِلَّهِ وَأَبْغَضَ لِلَّهِ وَأَعْطَى لِلَّهِ وَمَنَعَ لِلَّهِ فَقَدْ اسْتَكْمَلَ الإِيمَانَ
‘‘যে আল্লাহর জন্য ভালবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য প্রদান করে এবং আল্লাহর জন্য প্রদান থেকে বিরত থাকে সে ঈমান পরিপূর্ণ করেছে।’’[আবু দাউদ, আস-সুনান (শামিলা) ৪/৩৫৪ (অধ্যায়: সুন্নাহ, অনুচ্ছেদ: ঈমান বৃদ্ধি..)। হাদিসটি সহীহ।]
🌀 রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:
لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ ، وَوَلَدِهِ ، وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
‘‘তোমাদের মথ্যে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।’’ (বুখারি ও মুসলিম)

পরিশেষ আমরা যেন জীবনের চক্রবাঁকে আল্লাহর ও রাসূলের পথ থেকে দুরে সরে না যাই এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদেরকে আমাদের জীবনের সব কিছু থেকে বেশি অগ্রধিকার দিতে পারি মহান রবের কাছে সেই প্রর্থনা করছি। হে আল্লাহ, তুমি কবুল করো। আমীন।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব।।

Share: