প্রশ্ন:-১ সেজদার আয়াত তেলাওয়াতের সময় সেজদা দেয়ার জন্য কি পবিত্রতা শর্ত?
প্রশ্ন:-২ রেকর্ডকৃত তেলাওয়াতের সময় সেজদার আয়াত শুনলে কি সেজদা দিতে হবে?
প্রশ্ন:৩ মোবাইল থেকে কুরআন খতম করছি কিন্তু সেজদার আয়াতগুলো চিনতে না পারায় কোথাও সেজদা দেয়া হয় নি। এখন কী করণীয়?
—————————–
উত্তর:
১) 🔰 সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করে সেজদা দেয়ার জন্য ত্বাহারাত বা পবিত্রতা শর্ত নয়। সুতরাং ওযু না থাকলেও সিজাদায়ে তেলাওয়াত দেয়া জায়েয রয়েছে।
🔰 রেকর্ডকৃত তিলাওয়াত শুনার সময় যদি সিজদার আয়াত আসে তাহলে তা শুনে শ্রোতার জন্য সিজদা দেয়া শরীয়ত সম্মত নয়।
২) 🔰 অনুরূপভাবে উপস্থিত কোন ব্যক্তি যদি সেজদার আয়াত তিলাওয়াত করে আর তাতে সেজদা না দেয় তাহলেও শ্রোতা সেজদা দিবে না। কেননা, হাদিসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপস্থিতিতে যায়দ বিন সাবিত রা. সূরা নাজম তিলাওয়াত করলেন কিন্তু তিনি সেজদা দেন নি। তাই নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সেজদা দেন নি। আর যায়েদ বিন সাবিত রা. সেজদা না দেয়ার কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার প্রতিবাদও করে নি বা তাকে সেজদা দিতে বলেন নি।
সুতরাং এতে প্রমাণিত হয়, তেলাওয়াত কারী সিজদা না দিলে শ্রোতা সেজদা দিবে না। (বিন বায রা. এর ফতোয়া সমগ্র. ১১/৪১৫, আশ শারহুল মুমতে, ৪/১৩৩)
৩) কুরআনের সেজদার আয়াত সমূহ তিলাওয়াত করার সময় সেজদা দেয়া সুন্নতে মুআক্কাদা।
কেননা, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, উমর রা. এক জুমায় মিম্বরে খুতবা দেয়ার সময় সূরা নাহলের আয়াতে সেজাদ পাঠ করলেন। তারপর তিনি মিম্বর থেকে নেমে সেজদা দিলেন। কিন্তু পরের জুমায় একই আয়াত তেলাওয়াত করে সেজাদা দেন নি। তিনি বললেন,
إن الله لم يفرض علينا السجود إلا أن نشاء
“আল্লাহ আমাদের জন্য (কুরআনের সেজদার আয়াত তিলাওয়াতের কারণে) সেজদা দেয়াকে আবশ্যক করে নি যদি আমরা না চাই।” অন্যান্য সাহাবীদের উপস্থিতিতে তিনি এমনটি করেছেন।
আরও বর্ণিত হয়েছে, নবী সা. এর উপস্থিতিতে যায়েদ বিন সাবিত রা. সূরা নাজম তিলাওয়াত করলেন কিন্তু তিনি সেজদাহ দেন নি।
সেজদা দেয়া আবশ্যক হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অবশ্যই সেজদা দিতে আদেশ করতেন।
সুতরাং কেউ যদি কোন কারণে অথবা (ইচ্ছাকৃতভাবে) সেজদার আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করার পর সেজদা না দেয় তাহলে তাতে গুনাহ নেই। কারণ তা ওয়াজিব নয়; বরং সুন্নতে মুআক্কাদা। তার জন্য সবগুলো সেজদা একসাথে দেয়াও ঠিক নয়।
সুতরাং আপনি যেহেতু মোবাইল দেখে কুরআন খতম করেছেন কিন্তু সেজদার তেলাওয়াতগুলো বুঝতে না পারায় কোথাও সেজদা দেন নি সেহেতু ইনশাআল্লাহ এতে গুনাহগার হবেন না। তবে জেনে-শুনে তা বাদ দেয়া ঠিক নয়। আগামীতে যেন সেজদা বাদ না যায় সে জন্য সচেতন হতে হবে। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
————————
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
Daee, at Jubail Dawah & Guidance Center – Bangla Section, K.S.A