প্রশ্ন: ফেসবুকে এ কথাটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে যে, জিনা হচ্ছে, ঋণ। হয় তোমার স্ত্রীর দ্বারা, না হয় তোমার বোন দ্বারা, না হয় তোমার মেয়ে দ্বারা পূরণ করা হবেই।” এই বক্তব্যটি কি সঠিক?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: উক্ত কথাটি ব্যাপক প্রচলিত। কিন্তু তা সঠিক নয়। বরং তা কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী, ভ্রান্ত ও অযৌক্তিক। এর কয়েকটি কারণ নিম্নরূপ:
🔴 প্রথমত: এ কথায় কোন সন্দেহ নেই যে, জিনা-ব্যভিচার ধ্বংসাত্মক কবিরা গুনাহ এবং ইসলামের সবচেয়ে কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু তা এমন ঋণ নয় যে, তা অবশ্যই তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা হলেও পূরণ করা হবে। কেননা একজনের অপরাধে আরেকজনকে শাস্তি দেওয়া বা অন্যজন থেকে প্রতিশোধ নেওয়া অথবা একজনের গুনাহের কারণে অন্যজনকে গুনাহে লিপ্ত করা আল্লাহর হেকমত পরিপন্থী। মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةࣱ وِزۡرَ أُخۡرَىٰۚ
“একজনের অপরাধের বোঝা আরেকজন বহন করবে না।” [সূরা ফাতির: ১৮]
🔴 দ্বিতীয়ত: এ কথার দ্বারা একজন নিরাপরাধ মানুষের প্রতি অহেতুক কুধারণা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন: কারো পরিবারের কোন সদস্য (স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, বোন ইত্যাদি) দ্বারা যদি জিনার মত জঘন্য অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে (নাউজুবিল্লাহ) তাহলে মানুষ তার প্রতি কুধারণা করতে পারে যে, সে হয়তো জিনা করেছিল। এ কারণে তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জেনা সংঘটিত হয়েছে।
🔴 তৃতীয়ত: এ কথার অর্থ দাঁড়ায়, কোন ব্যক্তি যদি কুপ্রবৃত্তির তাড়নায় বা শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে কখনো জিনা করে ফেলে, তারপর অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর দরবারে খাঁটিভাবে তওবা করে নেয় তারপরও তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা জিনা সংঘটিত হবেই। কারণ জিনা একটি ঋণ, যা অবশ্যই পরিশোধ করা হবে!!”
এটি মূলত তওবাকারীকে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী।
অতএব এই শরিয়া বিরোধী, অযৌক্তিক ও ভ্রান্ত কথাটি প্রচার করা উচিত নয়। আল্লাহ ভালো জানেন।
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।